Advertisement
Advertisement

অমিল জবা, শ্যামা পুজোয় ভরসা প্লাস্টিকের ফুল

প্লাস্টিকের ফুলের জন্য দূষিত হচ্ছে গঙ্গা।

Plastic flowers hit this Kali

ছবি: প্রতীকী

Published by: Bishakha Pal
  • Posted:November 6, 2018 11:06 am
  • Updated:November 6, 2018 11:06 am

নব্যেন্দু হাজরা: মা কালীর পায়ের জবা হয়ে অন্তরের ভক্তি-চেতনাকে ফুটিয়ে তুলতে বলেছেন সিদ্ধ গায়ক। কিন্তু পুজোর উপচারে প্রতিমার পায়ে দেওয়ার মতো সাধারণ জবাফুলই যে অপ্রতুল! অগত্যা ভরসা সেই প্লাস্টিক। মোমবাতি বা প্রদীপের মতো প্লাস্টিকের নকল জবাফুলই সমর্পিত হচ্ছে মা কালীর পায়ে।

রাজ্যে চাহিদা এক কোটির। কিন্তু পুজোর দিন এত জবার জোগান দেবে কে? তাই ১০৮ জবার মালার বদলে মায়ের গলায় প্লাস্টিকের জবাও। কোথাও বা মাকে সাজাতে দুরকমের মালাই ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া এই ‘নকল’ মালার দামও কিছুটা কম। ১০৮ জবা ফুলের মালার দাম পুজোর দিন যেখানে কম করে ১২০ টাকা, সেই সাইজের প্লাস্টিকের মালা বিকোচ্ছে ৭০ টাকাতেই। ফলে পকেট বাচিয়ে ‘মা’কে খুশি রাখতে ‘নকল’ জবাতেই ভরসা বারোয়ারি বা গেরস্থের।

Advertisement

আজকের দিনে জবার চাহিদা মেটাতে এক সপ্তাহ আগে থেকেই ফুল তুলে হিমঘরে মজুত করেন ফুলচাষিরা। ফুলচাষিদের কথায়, আগে থেকে ফুল কিনে রাখলে লাভ অনেক বেশি। শুধু লাভই নয়, একদিনে এত জবার জোগান দেওয়াও সম্ভব হয় না। তাই ‘বাসি’ ফুলই বিকোয় সর্বত্র। যারা সেটাও পান না, তাঁদের প্লাস্টিকের জবাতেই ভক্তি নিবেদন করতে হয়।

Advertisement

আলোর উৎসবে ‘শব্দদৈত্যের’ আতঙ্ক, প্রতিবাদে পথে সারমেয়রা ]

মূলত হাওড়ার বাগনান, কোলাঘাট, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর, পূর্ব মেদিনীপর, নদিয়া থেকেই ফুল আসে হাওড়ার ফুলবাজারে। তারপরই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তা নিয়ে যাওয়া হয়। ফুলচাষিদের কথায়, পুজোর সময় থেকেই দাম বাড়ে সব ফুলের। কোনওটার কম। কোনওটার বেশি। এবারও হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় যে মাল্টিপারপাস হিমঘর রয়েছে সেখানেই রাখা হচ্ছে জবা। ব্যবসায়ীদের কথায়, এতদিন হিমঘরে রাখলে অনেক সময়  ফুল পচে যায়। আর এই পচে যাওয়া ফুলের দামও তুলে নেওয়া হয় মালা বিক্রি থেকে। ফলে জবা দেয় ছেঁকা। সেই ছেঁকা থেকে কিছুটা রিলিফ দেয় প্লাস্টিকের জবা।

পরিবেশবিদদের কথায়, এই ধরনের প্লাস্টিকের জবা ব্যবহার করা ঠিক নয়। পুজোর পর এই মালাও ফেলা হয় গঙ্গা বা জলাশয়ে। সেখান থেকেও ছড়ায় দূষণ। কিন্তু কারও কোনও হুঁশ থাকে না। তাই তো দশকর্মার দোকানে এই ছোট বড় কাগুজে মালা কেনার ভিড় উপচে পড়ল বাজারে। ফ্যান্সি অন্যরকমের মালা থাকলেও কালীপুজোয় প্লাস্টিকের জবার মালার চাহিদা অনেক বেশি। জানবাজারের এক ব্যবসায়ীর কথায়, প্লাস্টিকের মালার চাহিদা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। ফুলের মালার থেকে দামেও সস্তা হওয়ায় অনেকেই কিনছেন এই মালা। পরিবেশবিদদের কথায়, সাধারণ মানুষও জানেন এই ধরনের প্লাস্টিকের মালা ব্যবহার করা ঠিক নয়। তা সত্ত্বেও তো দোকানে তা বিক্রি হয়। মানুষ কেনে। তাই দূষণ যা ছড়ানোর তা ছড়ায়। বিশিষ্ট লেখক তথা পরিবেশকর্মী জয়া মিত্র বলেন, “কৃত্রিমভাবে এই প্লাস্টিকের মালার চাহিদা তৈরি করা হচ্ছে। করছেন ব্যবসায়ীরা। আগেও তো কালীপুজো হত। তখন তো প্লাস্টিকের মালার প্রয়োজন পড়ত না। মানুষ হুজুগে চলে। এটাও তেমনই।”

সারা বাংলা ফুল চাষি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নারায়ণচন্দ্র নায়েক বলেন, “এই একটা দিনের জন্য জবার চাহিদা প্রচুর। ফলে চাহিদা থাকলে দাম তো বাড়বেই। আর একদিন যে সংখ্যক ফুল ফোটে তা দিয়ে গোটা রাজ্যের চাহিদা মেটানো সম্ভব নয়। তাই আগে থেকে স্টোর করতে হয়।”

ওভারহেড তার ছিঁড়ে বিপত্তি, শিয়ালদহ-বজবজ শাখায় বন্ধ ট্রেন চলাচল ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ