Advertisement
Advertisement

Breaking News

জ্ঞান-চেতনা-সবুজের সৃষ্টি নিয়ে দেবীর ‘অন্তহীন’ যাত্রা চেতলা অগ্রণীতে

পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সেরা পুজোর লড়াইয়ে এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়৷ এমনই কিছু বাছাই করা সেরা পুজোর প্রস্তুতির সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন চেতলা অগ্রণীর পুজো প্রস্তুতি৷ Advertisement কৃষ্ণকুমার দাস: শ্রীমদ্ভগবত গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, পুরাতন দেহ থেকে নতুন দেহে আত্মা সঞ্চারিত হয়। আত্মা চলে […]

Pujo 2017: Chelta Agrani Puja's 'Antaheen' theme is amazing
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 15, 2017 9:59 am
  • Updated:September 28, 2019 5:53 pm

পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সেরা পুজোর লড়াইয়ে এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়৷ এমনই কিছু বাছাই করা সেরা পুজোর প্রস্তুতির সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ পড়ুন চেতলা অগ্রণীর পুজো প্রস্তুতি৷

কৃষ্ণকুমার দাস: শ্রীমদ্ভগবত গীতায় শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন, পুরাতন দেহ থেকে নতুন দেহে আত্মা সঞ্চারিত হয়। আত্মা চলে গেলেও পুরাতন দেহ জীর্ণ শরীর ভস্মীভূত হয়ে যায়।

Advertisement

পুজোর কলকাতায় এবছর চেতলা অগ্রণী সবাইকে আরও একবার গীতার সেই শ্লোকের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। বলছে, জ্ঞান এবং চেতনা যুগের পর যুগ ধরে এক দেহ থেকে অন্যত্র সংবাহিত হয়ে চলেছে। আর এই চলার কোনও শেষ নেই। অনাদি অনন্তকাল ধরেই চলছে। তেমনই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির কোনও সীমারেখা নেই। ধ্বংসের সীমানা থেকেই অন্তহীন পথ ধরে সৃষ্টির নানা খেলা এগিয়েই চলেছে যুগের পর যুগ। অখণ্ড ব্রহ্মাণ্ডের মাঝে অক্লান্ত দেহে অবিচল লক্ষ্যে অন্তহীন যাত্রা। মুনি-ঋষি বা বিজ্ঞানীরা নানা সময়ে যে বিপুল পরিমাণ জ্ঞান অর্জন করেছেন তা যুগের পরিবর্তনেও প্রজন্মের পর প্রজন্মে প্রবাহিত হয়ে চলেছে। কালের টানে ঋষিরা চলে গিয়েছেন। কিন্তু অধীত বিদ্যা-জ্ঞান ও চেতনার নানা মন্ত্র রয়ে গিয়েছে বেদের চার খণ্ডে।

Advertisement

chetla1

ঋক, সাম, যজু ও অথর্ব– চার বেদের নানা শ্লোক অর্ধগোলাকার মণ্ডপের নানা দেওয়ালে উঠে আসছে। বণর্ময় সৃষ্টির নানা জটিল রহস্য এবং পৌরাণিক কাহিনির প্রতিবিম্ব-প্রতিধ্বনি ফিরে আসছে চেতলা অগ্রণীর সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষের পুজোমণ্ডপে। মহালয়ার সন্ধেয় তৃতীয় নয়ন এঁকে অন্য বছরের মতো এবারও পুজোর শুভ সূচনা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সাধারণের জন্য অপূর্ব এই সৃষ্টি খুলে দেওয়া হবে তৃতীয়া থেকে।
পুজোর পাসপোর্ট: জলের দরে শহরের সেরা ৪৩টি পুজোর VIP PASS]

শ্মশান, কবর থেকে শেষযাত্রায় ব্যবহার হওয়া লক্ষাধিক চ্যালাকাঠ। হোম যজ্ঞে ব্যবহৃত কাঠের টুকরো। নিষ্প্রাণ-নিরস শতাব্দীপ্রাচীন শুকনো গাছের গুঁড়ি। পর পর সাজিয়ে তৈরি হচ্ছে অর্ধেক পৃথিবী। শিল্পী ভবতোষ সুতারের কথায়,“আমরা যে যতটুকু বাঁচি সেই সময়টা আমাদের কাছে খুবই মূল্যবান। কিন্তু জাগতিক সময়ের কাছে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের চক্রের তুলনায় এই আয়ুষ্কাল খুবই তুচ্ছ। তবে আমরা চলে যাব, থেকে যাবে আমাদের সৃষ্টি, জ্ঞান ও চেতনা। সেই চিরকালীন তত্ত্ব ও তথ্যকে নতুন আঙ্গিকে মণ্ডপে তুলে ধরা হচ্ছে।” বোধিবৃক্ষের নির্মানেও ব্যবহার হয়েছে শতাব্দী প্রাচীন কয়েকটি গাছের বিশালাকার গুঁড়ি। বোধিবৃক্ষের পাশ দিয়ে নীল আকাশের দিকে ডানা মেলে দিতে দেখবেন প্রাণের আহ্বানে অসংখ্য কচিপাতা। মণ্ডপে ঢুকেই চোখে পড়বে বিশালাকার শিবলিঙ্গের পাশ দিয়ে জলের ধারাপ্রবাহ আর সবুজের আহ্বান। বোধিবৃক্ষের নিচে তৈরি হচ্ছে একটি যোনিক্ষেত্র। সেখানে বড় বড় কড়ি দিয়ে ভিতরে আলো জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। শিল্পী বলছেন, এমন ভাবনার নেপথ্যে রামপ্রসাদের সেই শ্যামাসঙ্গীতের সুর–

“৮০ লক্ষ যোনি মা পাক দিতেছ অবিরত।
ওমা তুমি আমায় ঘোরাবি কত?”

chetla2

মা দুর্গার প্রায় ১৫ ফুট উঁচু প্রতিমাটি তৈরি হচ্ছে প্রায় ২০০ বছরের পুরনো মেহগনি গাছের বিশাল গুঁড়ি দিয়ে। নিচে অসুর-মহিষ, সিংহ অন্য আর একটা গুঁড়ি দিয়ে। এমন নিপুণভাবে চোখ জুড়িয়ে দেওয়া মূর্তির অঙ্গসজ্জায় পিতলের মোড়ক বাড়তি দ্যুতি এনে দিয়েছে। পাশে লক্ষ্মী-কার্তিক, সরস্বতী-গণেশ, সবই কাঠের গুঁড়ি কেটেই তৈরি করেছেন শিল্পী। পুজোকমিটি সূত্রে খবর, হিডকো থেকে এরই মধ্যে প্রতিমাটি ইকো পার্কে রাখার জন্য চেয়ে রাখা হয়েছে।

[সাহিত্যের মহোৎসব: পাঠকের হাতে ‘শারদীয় সংবাদ প্রতিদিন’]

সদ্য মক্কা-মদিনা থেকে হজ সেরে ফিরে এসেই উৎসবের সেরা সৃষ্টি উপস্থাপনায় নেমে পড়েছেন সর্বধর্মে সমশ্রদ্ধাশীল পুজোর মূল উদ্যোক্তা পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে ‘অন্তহীন’ সৃষ্টি সম্পর্কে তাঁর উপলব্ধি, “মমতাদির সৈনিক হিসাবে তো ৩৬৫ দিনই আমরা উন্নয়ন আর প্রগতি নিয়ে কাজ করছি। যারা দেশে বিভেদ ও হিংসা ছড়িয়ে দিতে চায় তাদের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানিয়ে মহাবিশ্বের জ্ঞান-চেতনা এবং প্রকৃতি ও সৃষ্টির এই আদি-অনন্ত থেকে সমকালের সামগ্রিক উপস্থাপনা। জানিয়ে দিতে চাই, আমরা চলে যাব, কিন্তু থেকে যাবে উন্নয়ন আর সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিপূর্ণতা।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ