Advertisement
Advertisement
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়

কর্মীর বাড়িতে ইঁদুর আতঙ্কে কাঁটা মন্ত্রী! বিনিদ্র রাত কাটল শোভনদেবের

শুধু তিনিই নন, এমন নানা অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন একাধিক মন্ত্রী-বিধায়করা।

Rat scare jolts WB Minister Sovandeb Chatterjee whole night
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:August 28, 2019 3:15 pm
  • Updated:August 28, 2019 3:16 pm

ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: কতক্ষণে কাটবে দুঃস্বপ্নের রাত। এই বুঝি পায়ে এসে কামড় বসাল। সেই থেকে রেবিস। তীব্র জ্বর। রোগ সারাতে ভ্যাকসিন তো নিশ্চিত। প্রায় বিনিদ্র রাত জেগে ভোর হতেই কোনওক্রমে মুখ-চোখ ধুয়ে দলীয় পতাকা তুলে এক পাত্র চা খেয়ে ঘর ছাড়লেন মন্ত্রী। ঘাম দিয়ে যেন জ্বর ছাড়ল। মন্ত্রীর নাম শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের বিদ্যুৎ দপ্তরের মন্ত্রী। শুধু তিনিই নন, এমন নানা অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছেন একাধিক মন্ত্রী-বিধায়করা।

জনসংযোগ যাত্রায় ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি নিয়ে এক রাত কর্মীর বাড়িতে কাটানোর নিদান দিয়েছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দে্যাপাধ্যায়। কর্মীর বাড়িতেই খাওয়া দাওয়া সারতে হবে। থাকতেও হবে সেখানে। পরদিন দলীয় পতাকা তুলে ফিরতে হবে। সেই পর্বেই নানা ধরনের কাণ্ড ঘটে গেল মন্ত্রী-বিধায়কদের সঙ্গে। কারও মধুমেহ রোগ। কেউ পেটের অসুখে ভুগছেন। মুসুর ডাল ছাড়া মোটে ভাত মুখে রোচে না। কিন্তু রাত কাটাতে দ্বিধা নেই। ফাঁকিও নেই। আবদার মিটিয়েছেন সেলফিরও। সেই পর্বেই নানা অভিজ্ঞতা।

Advertisement

দিদিকে বলো-র কর্মসূচি নিয়ে রাসবিহারীতে এক বস্তির ঘরে রাত কাটাতে হয়েছিল মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। ছোট একফালি ঘরে কমজোরি কপাট। কোনওরকমে ভেজানো মাত্র। মন্ত্রী জানাচ্ছেন, “সন্ধ্যার পর সাংবাদিকরা চলে যেতেই পাড়ার মোড়ে বসলাম সকলকে নিয়ে আড্ডায়। সে নানা গল্প। দল, রাজনীতি, বক্সিং। রাত বাড়তেই খাওয়া সেরে নির্দিষ্ট ঘরে চলে যাই।” মাটিতে শোবেন বলে একটি মাদুর কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন। দলের অন্য কর্মীরা চলে যেতেই ঘরে ঢুকে চাদর মুড়িয়ে সেই মাদুর পেতে শুয়ে পড়েন। একটু নিশ্চিন্ত হতেই আঁতকে ওঠেন। একতলা অচেনা ঘর। দরজা ভেজানো। নিচের দিকে কিছুটা আবার ফাঁকা। মুখে আতঙ্ক রেখেই কিছুটা হাসতে হাসতে মন্ত্রী বলছেন, “ওরে বাবা চিন্তায় তো আমার ঘুমই হয় না। ইঁদুর ঢুকে পড়লে!” সেসব ঘটনা থেকে শেষ পর্যন্ত অবশ্য রেহাই মেলে মন্ত্রীর।

Advertisement

কোচবিহার দক্ষিণের বর্ষীয়ান বিধায়ক মিহির গোস্বামী আবার নিজেই অবাক হয়েছেন তাঁকে ঘিরে মানুষের আগ্রহ দেখে। গ্রামের ভিতরে দলের পছন্দ করে দেওয়া জায়গায় গিয়ে রাত কাটান তিনি। দলের কর্মীদের শুধু নয়, তাঁর সঙ্গে থাকা কর্মীদেরও প্রায় সকলকে ছুটি দিয়ে দিয়েছিলেন। তার পরই তাঁকে ঘিরে বাচ্চাদের সেলফি তোলার হিড়িক। খাদ্যাভাসে তাঁর কিঞ্চিৎ বিধিনিষেধ আছে। সারাদিনে নিয়ম মেনে কিছু বিস্কুট, হরলিকস, চা আর রাতে সামান্য ভাতের সঙ্গে মসুর ডাল তাঁর রুটিনের খাবার। এর অন্যথা হওয়ার জো নেই। কিন্তু দলের কর্মীরা তাঁকে খাওয়াতে চান ভাল মাছ বা মাংস। নিদেপক্ষে ডিম। শেষে তাঁর সিদ্ধান্ত মতোই রান্না। বলছেন, “আমি পেট একটু হালকা রাখি। তা ছাড়া সুগারের সমস্যা রয়েছে। সেদিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।” শেষে তাই খেয়ে বাচ্চাদের সঙ্গে গালগল্প করে কেটে গেল বিধায়কের রাত। শুনলেন নানা অভাব-অভিযোগও।

পটাশপুরের বিধায়ক জ্যোতির্ময় করের আবদার আবার সামান্য। যাই দেবেন একটু কলাপাতায় দেবেন। কলাপাতায় খাওয়ার মজাই আলাদা। মাটিতে বসে পাত পেড়ে তাতেই চলল ভূরিভোজ। ডাল, ভাত, মাছ, একটু তরকারি। আরাম করে পেট ভরে খেয়েছেন বিধায়ক। তাঁর কথায়, “আমার কোনও কিছুতে বাধা নেই। সব চলে।” হুগলির হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না আবার রাতে রুটি খাওয়ার অভ্যেস। সেই মতোই বলা ছিল। এক সাঁওতাল পরিবারে কর্মীদের নিয়ে রাত কাটিয়েছেন বিধায়ক। রুটি আর সবজি দিয়ে সেরেছেন আহার।

শহরের বিধায়কদের খাওয়া নিয়ে তেমন আবদার বা নিষেধ কোনওটাই ছিল না। বাড়ির বাইরে রাত্রিযাপন। যার জেরে গৃহিণীর কড়া নজরদারি নেই। যার ফলাফলও দেখা গেল পাতে। কোথাও বাটি উপচানো মুরগির ঝোল, কোথাও কষা ডিমের কারির মতো বেশ উপাদেয় খাবার রসিয়ে পড়ছে মন্ত্রী-বিধায়কদের পাতে। আপত্তিও খুব-একটা কেউ করেননি। মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর পাত যেমন ছিল রসনায় ভরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ