প্রতীকী
স্টাফ রিপোর্টার: জেলেই পরিচয়। একসঙ্গে থাকতে থাকতে বন্ধুত্ব। জেল থেকে বেরনোর পরও অটুট সেই সম্পর্ক। একে অন্যের বাড়িতে যাতায়াত। পুরনো অপরাধ আর জেলের জীবন নিয়ে আলোচনা। তারপর একদিন নতুন করে অপরাধের ছক তৈরি। জেল থেকে বেরিয়ে ফের অপরাধে নেমে পড়ছে দাগিরা। আবার অনেক দাগির পছন্দ ‘সফট টার্গেট’ বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা।
[টাকা আদায় করতেই ধর্ষণের অভিযোগ, পালটা সাফাই ঋতব্রতর]
ধরা পড়ার পর বহু অপরাধী লালবাজারের গোয়েন্দাদের জানিয়েছে, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের উপর চড়াও হয়ে ডাকাতির মতো অপরাধ ঘটানো সহজ। অপরাধের পর সহজেই পালানো যায়। আবার দরকার হলে আঘাতও করা যায়। কিছুদিন আগে নিউ আলিপুরে এক বৃদ্ধকে খুন করে তাঁর বাড়িতে লুঠপাট চালায় দুই যুবক। গত পঞ্চমীর দিনেও দুই বৃদ্ধাকে বেঁধে ডাকাতির পিছনে বড় দুই মাথাও ছিল দাগি। এই বছরে একাধিক ঘটনায় দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছেন বৃদ্ধরা। তাই প্রত্যেকটি থানায় কলকাতায় পুলিশের ‘প্রণাম’ প্রকল্পের আধিকারিকদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। লালবাজারের একটি সূত্র জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রণামের সদস্য প্রায় সাড়ে পনেরো হাজার। এখন ‘প্রণাম’-এ আবেদন আসার পর দেখে নেওয়া হচ্ছে, আবেদনকারী বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার বয়স অন্তত ৬৫ বছর কি না। এ ছাড়াও কোনও বাড়িতে শুধু বৃদ্ধ দম্পতি অথবা বৃদ্ধ বা বৃদ্ধা বাড়িতে একা থাকলে তাঁদের ‘প্রণাম’-এর সদস্য হিসাবে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
গড়িয়াহাটে দুই বৃদ্ধাকে বেঁধে ডাকাতির ঘটনার দুই মাস্টারমাইন্ড খুনের অভিযুক্ত রাজেশ রায় ও ডাকাতির আসামি পরেশ হালদার একসঙ্গে প্রেসিডেন্সি জেলে ছিল। বছর খানেক আগে জেল থেকে বেরনোর পরও তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখত। হিন্দুস্থান পার্কের ভারী অর্পণ শিকারি দুই বৃদ্ধার কথা পরেশকে জানানোর পর সে তার পুরনো জেল-বন্ধু রাজেশকে সঙ্গে নিয়েই ডাকাতির ছক কষে। এ ছাড়াও লালবাজারের গোয়েন্দারা বহু দাগির হদিশ পেয়েছেন, যারা জেল থেকে বেরনোর পর ফের অপরাধ করেছে। যেমন, কুখ্যাত ডাকাত শেরু বাবর জেল থেকে বেরনোর পর ফের ডাকাতি করে বড়বাজার এলাকায়। বিহারের ডাকাত পাপ্পু সিং জেলে থাকার সময়ই তৈরি করে ডাকাত দল। মথুরাপুরের জাকির অথবা ক্যানিংয়ের কুতুব জেলে বসেই ডাকাতির ছক কষেছে। জেল থেকে বেরিয়ে ঘটিয়েছে ডাকাতির ঘটনা। আবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ‘দাগি চোর’ শাহরুখ অথবা নাসির একাধিকবার জেলে গিয়েও ‘সংশোধিত’ হয়নি। জেল থেকে বেরনোর পরই শুরু করেছে চুরি।
[সম্প্রসারণের তাগিদে সুতোয় ঝুলছে যশোর রোডের ৪৫০০ গাছের ভবিষ্যৎ]
ধরা পড়ার পর কোনও দাগি জানিয়েছে, তার টাকার প্রয়োজন ছিল। অথচ অন্য কোনও কাজ সে করতে পারে না। তার কাছে অপরাধ করাটাই সহজ। আবার কেউ গোয়েন্দাদের বলেছে, জেলের পুরনো বন্ধু জোর করেছিল অপরাধ করার জন্য। প্রথমে গররাজি হলেও টাকার লোভে রাজি হয়ে যায়। তাই অপরাধ কমাতে জেল থেকে বেরনো দাগিদের দিকেও বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.