Advertisement
Advertisement

Breaking News

বাগদেবীর আরাধনায় পুরোহিতের আকাল, অনলাইনে দেদার বিক্রি ‘সরস্বতী কিট’

বই পড়েই পুজো উত্তর-দক্ষিণে।

Sarswati Kit on Sale
Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:February 10, 2019 8:41 am
  • Updated:February 10, 2019 9:53 am

স্টাফ রিপোর্টার : উত্তর থেকে দক্ষিণে দেশলাই বাক্সের মতো ফ্ল্যাট। কালও যেখানে ছিল রংচটা বাড়ি-নড়বড়ে উঠোন, আজ সেখানে ঝাঁ চকচকে হাইরাইজ। চেনা পাড়া এক নিমেষে অত্যাধুনিক। আকাশ ছোঁয়া বহুতলের আড়ালে মুখ ঢাকছে সূর্য। পুরনো বাড়ি বেশিরভাগই এখন জি প্লাস সিক্স। চারজনের নিউক্লিয়ার পরিবার ভেঙে গড়ে আবাসনে মাথা গুঁজেছে চব্বিশ জন। প্রতি ফ্ল্যাটেই সরস্বতী পুজো। কিন্তু এত পুরোহিত কই?

[ পুরোহিতের আসনে ছাত্রী, প্রথাভাঙা বাণীবন্দনা শিলিগুড়ির স্কুলে]

Advertisement

বাজার বলছে সত্যিই টানাটানি পুরোহিতে। শুধুমাত্র যজমানি পেশা, এমন মানুষ কর গুনে বলা যাবে। অনেক ব্রাহ্মণ অন্যান্য পেশায় চলে গিয়েছেন। এই একটা দিন বাধ্য হন ধুতি পরে ‘ডিমান্ড’ মেটাতে। বেশিরভাগ বাড়িতে তাই পুরোহিতের টানাটানিতে নিজেরাই বই কিনে পুজো সারছেন। নরেন্দ্রপুর থেকে মানিকতলা সর্বত্রই এই ‘আপনা হাত জগন্নাথ’ মন্ত্রেই মাঠে নামছেন নববধূ থেকে গিন্নিমা। সোনারপুরে নতুন ফ্ল্যাট কিনে এসেছেন দীপান্বিতা। একমাত্র মেয়ে আইভি ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে ক্লাস টু-এ পড়ে। মেয়ের আবদারেই বাড়িতে সরস্বতী পুজোর আয়োজন। কিন্তু পুরোহিত পাচ্ছেন না যে। তবে উপায়? “নিজেই করব। আন্তরিকতা আর নিষ্ঠাই আসল।সমস্ত উপাচার মেনে যদি নিজেরাই পুজো করি ক্ষতি কী?” এই সুরে গলা মিলিয়েছেন বরানগরের মধুঋতাও। ছেলেকে কোলে নিয়ে নিজেই নেমে পড়েছেন আলপনা থেকে মন্ত্র পড়ার কাজে। সরস্বতী পুজোর অ আ ক খ শিখে দিতে অনলাইন থেকে ‘সরস্বতী-কিট’ জোগাড় করেছেন সকলে। মোটে ১৯৯ টাকায় সরস্বতী মন্ত্র মিলছে সমস্ত অনলাইন সাইটে। হোম ডেলিভারি। খাগের কলম, দোয়াত সাজিয়ে সেই মন্ত্র পড়ে ফেললেই কাজ শেষ। মানকুণ্ডুর দেবপর্ণা প্রথমটায় ভয় পাচ্ছিলেন। “বই দেখে পুজো করতে পারব কি না তা নিয়ে একটু সন্দিহান ছিলাম। তার উপর আমার শাশুড়ি সেকেলে মানুষ। কিন্তু দেখলাম বেশ সহজ পদ্ধতি।” জানিয়েছেন তিনি।

Advertisement

সমস্ত পদ্ধতি মেনে চলা হলে এমন উপায়ে খুঁত দেখছেন না পুরোহিতরাও। পুরোহিত নিতাই চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “পুজো যে হারে বেড়েছে সেই হারে পুরোহিত নেই। ফলে অনেক জায়গায় পুরোহিতরাও তাড়াহুড়ো করে ভুল পুজো করেন।” যেমন? উদাহরণ দিয়ে নিতাইবাবু জানিয়েছেন, সাধারণত যেদিন পুজো সেদিনই হোম করার নিয়ম। ওইদিনই সন্ধেবেলা মঙ্গলারতি এবং পরের দিন দধিকর্মা করাই দস্তুর। কিন্তু অনেক বাড়িতে তাড়াহুড়োয় কোনওমতে পুজো করেই চলে যাচ্ছেন পুরোহিত। পরের দিন হোম করছেন। নিতাই চক্রবর্তীর কথায়, “বই পড়ে পুজো করলেও এই নিয়মগুলি মেনে চলতে হবে। আঠাশবারের নিচে বীজমন্ত্র পড়ার কোনও মানে থাকবে না। সর্বোচ্চ ১০০৮ বার ও ওঁ শ্রী সরস্বতৈ নমঃ এই মন্ত্র বলা যায়।” পুষ্পাঞ্জলি মন্ত্রও তিনবার বলার বিধান। সামনেই মাধ্যমিক। এমন সব নিয়ম মেনে চললে বিদ্যার দেবীর আশীর্বাদ মিলতে বাধ্য বলে মনে করছেন পৈতেধারীরা।

[ উচ্চতম সরস্বতী মূর্তিতে চমক, দেশপ্রিয় পার্কের স্মৃতি ফিরল ধূপগুড়িতে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ