নব্যেন্দু হাজরা: যাত্রীসংখ্যা দেখে তবেই ঠিক হবে কত মিনিট অন্তর ট্রেন চালাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। আড়াই মিনিট অন্তর চালকহীন রেক চালানো গেলেও এখনই অত কম সময়ে তা চলবে না। আর চালক ছাড়াও তা প্রথমে ছুটবে না। যাত্রীদের ভয় কাটাতে এই রেকেও একজন করে চালক থাকবেন আপাতত।

ইতিমধ্যেই শহরে এসেছে প্রথম চালকহীন মেট্রো। পুজোর সময় থেকেই তা ছুটবে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত। তবে আপাতত হবে ট্রায়াল রান। আরও একটি রেক আসছে বেঙ্গালুরুর কোচ ফ্যাক্টরি থেকে। দিন দশেকের মধ্যে তা এসে গেলেই দৌড়বে পরীক্ষামূলকভাবে। ট্রায়াল রানে কোথাও কোনও সমস্যা থাকলে বাকি রেকগুলোতে তা ঠিক করে নিয়ে আসা হবে।
কেএমআরসিএল সূত্রে খবর, নতুন এই মেট্রোয় একাধিক অত্যাধুনিক বৈশিষ্ট্য থাকছে। থাকছে ছটি করে কামরা। বর্তমান মেট্রোয় প্রতি রেকে অবশ্য আটটি কামরা আছে। চালকহীন রেকের প্রত্যেক কামরায় থাকছে সিসিটিভি। যার ফলে মেট্রোর কন্ট্রোলরুম থেকে সরাসরি মেট্রোর ভিতরে কী হচ্ছে তা দেখা যাবে। সেই মতো নেওয়া যাবে ব্যবস্থা। কোনও বিভ্রাট থেকে শুরু করে মেট্রোয় কোনও চুরি ছিনতাইয়ের ঘটনা, সরাসরি দেখতে পাবেন আধিকারিকরা। প্রতিবন্ধীদের ট্রেনে ওঠার জন্য থাকছে হুইল চেয়ার। এখনকার মেট্রোয় এই ব্যবস্থা নেই। তাছাড়া আত্মহত্যা রুখতে এবং যাত্রী নিরাপত্তার কথা ভেবে থাকছে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন ডোর। মাটির ওপরের স্টেশনের জন্য থাকছে প্ল্যাটফর্ম স্ক্রিন গেট। আর সুড়ঙ্গের ভেতরের স্টেশনের জন্য স্ক্রিন ডোর।

মেট্রোর আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, নয়া এই রেকে থাকবে পুশ অ্যান্ড টক সিস্টেম। ফলে ট্রেনের কামরায় কোনও ঘটনা ঘটলে যাত্রীরা এই মাধ্যম ব্যবহার করে চালককে সজাগ করতে পারবেন। চালকও প্রয়োজনে তা কন্ট্রোলে জানিয়ে দেবেন। মেট্রোসূত্রে খবর, নয়া এই পরিষেবা শুরু হবে কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেমের মাধ্যমে। যার ফলে দুটি ট্রেনের মধ্যে দূরত্ব কম থাকবে। চালকরা নিজেদের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান করতে পারবেন। ফলে ট্রেন লেট কম হবে।

ধবার সেন্ট্রাল পার্ক ডিপোতে নতুন এই রেকটি দেখানো হয়। মেট্রোর চিফ ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়র প্রসেনজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “নতুন এই রেক দ্রুত ট্রায়াল রান শুরু করবে। এখানে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য এবং যাত্রী নিরাপত্তার কথা ভেবে একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” নতুন এই রেকের একেকটি কোচে যাত্রী বসতে পারবেন ৪৩ জন এবং দাঁড়াতে পারবেন ৩৫৪ জন। প্রথম এবং অন্তিম কোচে বসতে পারবেন ৫০ জন দাঁড়াতে পারবেন ৩২৩ জন করে। অত্যাধুনিক এই রেকে যাত্রীদের ওঠা নামার জন্য দরজার সাইজ বর্তমান মেট্রোর তুলনায় বাড়ানো হয়েছে। দাঁড়ানোর জন্যও অনেকটা জায়গা থাকছে নতুন রেকে। মেট্রোর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নতুন এই মেট্রো চালু করতে কর্মীদের বেঙ্গালুরুতে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা নতুন রেকের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ নিয়ে আসবেন।”
ছবি: পিন্টু প্রধান।