Advertisement
Advertisement

পূর্ব ভারতে প্রথমবার হার্ট প্রতিস্থাপন সরকারি হাসপাতালে, পথ দেখাচ্ছে পিজি

জুন থেকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হার্ট প্রতিস্থাপন।

SSKM Hospital to start heart transplant surgery
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:April 16, 2018 9:39 am
  • Updated:December 4, 2018 4:11 pm

গৌতম ব্রহ্ম: ১৯৮০-র পর ২০১৮। দিল্লির এইমসের পথ ধরে কলকাতার পিজি হাসপাতালেও শুরু হচ্ছে হার্ট প্রতিস্থাপন। মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই পিজি-র কার্ডিওলজি বিভাগে শুরু হবে ‘হার্ট ফেলিওর ক্লিনিক’। সেখানেই তৈরি হবে হার্ট গ্রহীতাদের তালিকা। সব ঠিকঠাক থাকলে জুনের শেষে শুরু হবে হার্ট প্রতিস্থাপন। সেক্ষেত্রে পূর্ব ভারতে পিজিই হবে হার্ট প্রতিস্থাপনকারী প্রথম সরকারি হাসপাতাল, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে দ্বিতীয়। এমনটাই দাবি পিজি (এসএসকেএম) কর্তৃপক্ষের।

[কলকাতা মেট্রোয় আগুন-আতঙ্ক! দরজা-জানলার কাচ ভেঙে বেরলেন যাত্রীরা]

Advertisement

চলতি বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি দীপশিখা সামন্তর ব্রেন ডেথ হয়। পিজিতে লিভার, কিডনি, কর্নিয়া প্রতিস্থাপিত হলেও ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীটির হার্ট প্রতিস্থাপন করা যায়নি। এরপরই টনক নড়ে। পিজির তরফে শুরু হয় প্রস্তুতি। কার্ডিওথোরাসিক বিভাগের ওটি থেকে আইসিইউ উন্নীত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ইতিমধ্যেই কার্ডিওথোরাসিক বিভাগের আইসিইউ-তে হার্ট প্রতিস্থাপনের জন্য একটি শয্যা আলাদা করা হয়েছে। অপারেশনের পর রোগীকে এখানেই রাখা হবে। এমনটাই জানালেন কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান ডা. শঙ্করচন্দ্র মণ্ডল। জানালেন, “হার্টের অসুখ মহামারির আকার নিচ্ছে। পিজির আউটডোর-ইনডোরে উপচে পড়ছে রোগী। এর মধ্যে একটি অংশের হার্ট প্রতিস্থাপন জরুরি। তাই এই সিদ্ধান্ত।”

Advertisement

আগামী ৮ মে পিজি হাসপাতালে হার্ট প্রতিস্থাপন নিয়ে সেমিনার হবে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও কার্ডিওথোরাসিক সার্জনরা অংশ নেবেন এতে। শঙ্করবাবু জানালেন, “হার্ট ফেলিওর ক্লিনিক’-এ আসা রোগীদের নিয়ে সেমিনারে আলোচনা হবে। তারপর বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে গ্রহীতাদের তালিকা চূড়ান্ত হবে।”

এ রাজ্যে তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল লাইসেন্স পেলেও এখনও পর্যন্ত কেউই হার্ট প্রতিস্থাপন করে উঠতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে পিজিতে হার্ট প্রতিস্থাপন শুরু হওয়াটা সাফল্যের খুব বড় মাইলফলক বলেই মনে করছে চিকিৎসক মহল। পিজির অধিকর্তা ডা. অজয় রায় জানিয়েছেন, হার্ট প্রতিস্থাপন যথেষ্ট বড় ব্যাপার। অনেক প্রস্তুতি প্রয়োজন। সেগুলো জোরকদমে চলছে। লাইসেন্স পেলেই অপারেশন শুরু হবে। কার্ডিওলজিস্টরা অবশ্য আশাবাদী। তাঁদের মত, পিজিতে অনেকদিন ধরেই কিডনি ও লিভার প্রতিস্থাপন চলছে। সুতরাং হার্ট প্রতিস্থাপনের লাইসেন্স পেতে কোনও সমস্যা হবে না।

[অনলাইনে টিকিট কাটার আগে রেলের নয়া নিয়মগুলি জেনে রাখুন]

এখনও পর্যন্ত দু’হাজারের বেশি হার্ট প্রতিস্থাপন হয়েছে ভারতে। ১৯৮০ সালে ভারতে প্রথম হার্ট প্রতিস্থাপন করেন ডা. বেণুগোপাল। এইমস হাসপাতালের হাত ধরে ভারতে প্রতিস্থাপনের নতুন ইতিহাস তৈরি হয়েছিল। এইমসের দেখানো পথেই এবার হাঁটতে শুরু করেছে পিজি। পিজির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা-অধিকর্তা ডা. দেবাশিস ভট্টাচার্য। তাঁর মত, “কিডনি-লিভার প্রতিস্থাপন তো অনেকদিন ধরে চলেছই। হার্ট প্রতিস্থাপন শুরু হলে তো ভালই হয়।” বিশিষ্ট কার্ডিওথোরাসিক সার্জন ডা. কুণাল সরকারও পিজির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ, পিজির পরিকাঠামো যথেষ্ট ভাল। তবে অপারেশনের পর রোগীকে এমন জায়গায় রাখতে হবে যেখানে সংক্রমণের ভয় ন্যূনতম। পিজি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হার্ট প্রতিস্থাপন করবে তারা। রোগীকে শুধু একবার ২ টাকার টিকিট করে আউটডোরে দেখাতে হবে।

শুরুটা এইমস করলেও হার্ট প্রতিস্থাপন এখন বেশি হয় বেসরকারি ক্ষেত্রেই। এইমসে যখন বছরে দশটি হার্ট প্রতিস্থাপন হয়, বেসরকারি হাসপাতালে তখন ৩০০ টি। পিজির হাত ধরে সরকারি উদে্যাগের পাল্লা এবার ভারী হবে। এমনটাই মত কলকাতার চিকিৎসক মহলের। তবে কুণালবাবু মনে করিয়ে দিয়েছেন, লিভার বা কিডনি প্রতিস্থাপনের থেকে হার্ট প্রতিস্থাপন অনেক বেশি ঝুঁকির। দাতা পাওয়াও মুশকিল। সেই ‘ব্রেন ডেথ’-এর দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়।

[বাঙালি আবেগ ছুঁতে বর্ষবরণের উৎসবকেই হাতিয়ার বিজেপির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ