Advertisement
Advertisement

Breaking News

Jibantala Arms Case

বন্দুক পাচারের অভিযোগ, কার্তুজ কাণ্ডে গ্রেপ্তার বিবাদী বাগের অস্ত্র বিপণির আরও ১ কর্মী

কার্তুজ কাণ্ডের সঙ্গে ভিনরাজ্যের যোগ আছে কিনা, খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।

STF arrests another person in Jibantala arms case
Published by: Sayani Sen
  • Posted:February 17, 2025 11:08 am
  • Updated:February 17, 2025 11:39 am  

অর্ণব আইচ: জীবনতলার কার্তুজ কাণ্ডে রাজ্য পুলিশের এসটিএফের জালে আরও এক। ধৃত শান্তনু সরকার। তাকে চম্পাহাটি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শান্তনুও বিবাদী বাগের অস্ত্র বিপণীর কর্মী। সে বন্দুক পাচার করত বলেই অভিযোগ। তদন্তকারীদের দাবি, শান্তনু অপর ধৃত হাজি রশিদের কাছে বন্দুক বিক্রি করে। লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণীর আরেক কর্মী জয়ন্ত দত্তকে জেরা করে শান্তনুর সম্পর্কে তদন্তকারীরা তথ্য জোগাড় করেন বলেই খবর। এই নিয়ে কার্তুজ কাণ্ডে মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করলেন তদন্তকারীরা।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানার ঈশ্বরীপুর এলাকা থেকে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ অভিযান চালিয়ে ১৯৯ রাউন্ড দুই ধরনের কার্তুজ উদ্ধার করে। এই ব্যাপারে এসটিএফের হাতে যে চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদেরই একজন হচ্ছে হাজি রশিদ মোল্লা। তার কাছ থেকেই ফারুক দোনলা বন্দুক ও চারটি বুলেট কিনেছিল। শনিবার জীবনতলায় অস্ত্র উদ্ধারের জেরেই এসটিএফ আধিকারিকরা লালবাজারের কাছে মধ্য কলকাতার বিবাদী বাগের একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুকের দোকানে তল্লাশি চালান। উদ্ধার হওয়া ওই বুলেটগুলি ওই বন্দুকের দোকান থেকেই হাতানো হয় বলে জেনেছেন গোয়েন্দারা।

Advertisement

কিন্তু রবিবার হাড়োয়া থেকে ফারুক মল্লিককে গ্রেপ্তারের পর এসটিএফের গোয়েন্দাদের ধারণা, ওই দোনলা বন্দুক ও চারটি ‘ফ্যাক্টরি মেড’ কার্তুজ হাতানো হয়েছে অন্য কোনও লাইসেন্সপ্রাপ্ত বন্দুকের দোকান থেকে। ফলে গোয়েন্দাদের মতে, কলকাতার একাধিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানের কর্মচারী অস্ত্র ও বুলেট পাচারের সঙ্গে যুক্ত। বুলেট কাণ্ডে গ্রেপ্তার আশিক ইকবাল গাজি, হাজি রশিদ মোল্লা, আব্দুল সেলিম গাজি আসলে মিডলম্যান বা দালালের কাজ করে। বিহারের মুঙ্গের, ভাগলপুর বা উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি বেআইনি অস্ত্র কারখানায় তৈরি পিস্তল, বন্দুক ও ওয়ান শটার রিভলভার তথা পাইপগানের জন্য প্রয়োজন হয় বিপুল সংখ্যক বুলেট।

ইতিমধ্যেই আসল বুলেট নকল করে মুঙ্গেরে অস্ত্র পাচারকারীরা বুলেট তৈরি করতে শুরু করেছে। কিন্তু বেআইনি অস্ত্রের জন্য দেশের বিভিন্ন অর্ডিন্যান্স কারখানায় তৈরি তথা লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানের বুলেটের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। সেই কারণেই অস্ত্র বা বুলেটের দালাল ও পাচারকারীর যোগাযোগ রাখে লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র দোকানের কয়েকজন কর্মীর সঙ্গে।

জীবনতলার বুলেট কাণ্ডে বিবাদী বাগের দোকানের কর্মচারী জয়ন্ত দত্তর মাধ্যমে ধৃত দালালরা ১৯০টি ৭.৬৫ এমএম, ন’টি ১২ বোর ও একটি দোনলা বন্দুক সংগ্রহ করে, তথা কম দামে কিনে নেয়। গোয়েন্দারা জেনেছেন, বিহার ও উত্তরপ্রদেশের বহু বাসিন্দার কাছে দোনলা বন্দুকের বিপুল চাহিদা রয়েছে। তাই লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোকানগুলি থেকে দোনলা বন্দুকও পাচার হয়ে বিক্রি হচ্ছে ভিনরাজ্যে। আবার ফারুক মল্লিকের মতো বাক্তিরা চোরূপথে অস্ত্র ও বন্দুক কিনে চড়া দামে বিক্রির ছক কষছে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের।

এদিকে, রাজ্য এসটিএফের সূত্র জানিয়েছে, বিবাদী বাগের ওই দোকানটির গত পাঁচ বছরের স্টক গোয়েন্দারা পরীক্ষা করেন। দোকানের বেশ কিছু রেজিস্টার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সোমবার সকালে এসটিএফের দপ্তরে তলব করা হয়েছে দোকানের মালিককে। কর্মচারী জয়ন্ত দত্ত কীভাবে ও কতদিন ধরে দোকান থেকে বুলেট হাতিয়েছে, তা জানার চেষ্টা করছেন গোয়েন্দারা। তাঁরা খতিয়ে দেখছেন, বিবাদীবাগের অস্ত্র বিপণির স্টক নিয়ে শেষ কবে পুলিশ খোঁজ নিয়েছিল। কারণ, কলকাতা পুলিশের আওতায় যে লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণি রয়েছে, সেগুলির স্টক সম্পর্কে বিস্তারিত নজর রাখে কলকাতা পুলিশের রিজার্ভ ফোর্সের আর্মস অ্যাক্ট সেকশন। প্রয়োজনে স্টকের বিষয়টি জানতে এই বিভাগকে চিঠি দিতে পারে রাজ্য এসটিএফ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement