Advertisement
Advertisement

বিতর্কিত সাক্ষাৎকারে কী বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়? কুণালই বা প্রশ্ন তোলেন কী নিয়ে?

ফিরে দেখা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকার, এবং কুণালের প্রতিক্রিয়া।

Take a look at detail of Justice Ganguly interview and political reaction | Sangbad Pratidin
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:April 28, 2023 4:46 pm
  • Updated:April 28, 2023 5:05 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এক বিতর্কিত সাক্ষাৎকার। যার জেরে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাগুলি থেকে সরে যেতে হল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে (Justice Abhijit Ganguly)। অন্তত বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে তেমনটাই জানা যাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট বলছে, ওই সাক্ষাৎকারে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। যা আইনবিরুদ্ধ। কিন্তু ওই বিতর্কিত সাক্ষাৎকারে ঠিক কী বলেছিলেন বিচারপতি? তখনই তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছিল তৃণমূলের তরফেও। কী বলেছিলেন কুণাল ঘোষ?

এক টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় সাফ বলেছিলেন, দুর্নীতি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC) মারফত স্কুলে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাদের চাকরি যাবেই। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘দুর্নীতি প্রমাণ হলে চাকরি যাবেই। যাদের নিয়োগ এমন অভিযোগ ঘিরে প্রশ্নের মুখে, তারা যেন কোনওভাবেই নিশ্চিন্তে না থাকেন।’’ সেদিনই বিচারপতি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন লড়াই চালিয়ে যেতে বিচারবিভাগের তরফে কড়া কোনও পদক্ষেপের মুখোমুখি হতে হলেও তিনি পরোয়া করেন না। তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘আমি নির্ভীক। আমাকে বিচারব‌্যবস্থা থেকে বহিষ্কার করলেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। স্কুলে নিয়োগে মুড়ি-মুড়কির মতো দুর্নীতি হয়েছে বলেই মুড়ি-মুড়কির মতো সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে হয়েছে। কারণ, একজন করনিকের সেই দায় নেই, কিন্তু একজন শিক্ষকের ছাত্রদের মূল‌্যবোধ গড়ে তোলার দায় আছে। সেই শিক্ষকই যদি এভাবে নিয়ুক্ত হন, তো সমাজকে কী দেবেন তাঁরা!’’

Advertisement

[আরও পড়ুন: শুধু অভিষেককে জেরার মামলা সরেছে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে: বিকাশ ভট্টাচার্য]

মুখ‌্যমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে মমতার ‘ভদ্র’তার প্রশংসা করার পাশাপাশি তাঁকে খোঁচাও দেন বিচারপতি। বলেন, ‘‘তাঁকে খুব ভদ্র বলে মনে হল। ওঁর কথায় কোনও ক্রুরতা ছিল না তবে শুনেছি উনি খুব রেগে যান।’’ আবার বিচারব‌্যবস্থার পক্ষপাত নিয়ে আঙুল তোলায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) ওই সাক্ষাৎকার থেকেই কার্যত হুঁশিয়ারি দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ‌্যায়। অভিষেক সম্পর্কে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল, ‘‘আগেও একবার রুল ইস্যু করে ওঁকে ডেকে পাঠানোর কথা ভেবেছিলাম, করিনি। আমাকে জড়িয়ে এমন মন্তব‌্য করলেই পদক্ষেপ করব। ডেকে পাঠালে উনি পক্ষপাত প্রমাণ করতে পারবেন না। তিন মাসের জেল হবে। কিছু করতে পারবেন না। বিচারব‌্যবস্থা কী করতে পারে, এঁদের অনেকেরই সেই ধারনা নেই।’’

Advertisement

[আরও পড়ুন: দ্বাদশ শ্রেণিতে মাত্র ৭৫ শতাংশ নম্বর, ভাড়াটিয়াকে সটান নাকচ করলেন বাড়িওয়ালা!]

বিচারপতির এই সাক্ষাৎকার নিয়ে তখনই একাধিক প্রশ্ন তুলে দেয় তৃণমূল। প্রশ্ন উঠছিল আইনজীবী মহল থেকেও। কর্মরত কোনও বিচারপতি আদৌ এভাবে সাক্ষাৎকার দিতে পারেন কি? সাক্ষাৎকার দিলেও তাতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আদৌ মন্তব্য করতে পারেন কি? তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের করা একাধিক মন্তব্য নিয়ে সরাসরি তাঁকে বিঁধেছিলেন। কুণাল বলেন, একজন বিচারপতি হয়ে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ‌্যায় কীভাবে রাজ্যের মুখ‌্যমন্ত্রী সম্পর্কে ‘শুনেছি উনি প্রতিহিংসাপরায়ণ’ বললেন? তাঁর সাহস হল কী করে? একজন বিচারপতির মুখ দিয়ে এই কথা ছেড়ে দেওয়া হল!” কুণাল সেদিন চ্যালেঞ্জ করেন, “শুনেছি শব্দটা নিয়ে আমি প্রতিবাদ করলাম। আপনি যা করার করে নিন।” ওই সাক্ষাৎকারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে করা বিচারপতি গঙ্গোপাধ‌্যায়ের একটি মন্তব্যেরও তীব্র বিরোধিতা করেন কুণাল। কুণালের প্রশ্ন ছিল, “একজন বিচারপতির উইশলিস্ট! এটা হতে পারে?”

অর্থাৎ একটা বিষয় পরিষ্কার, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রশ্ন প্রথম দিন থেকেই ছিল। প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। প্রশ্ন তুলেছিলেন একাধিক আইনজ্ঞ। তাঁদের সেই প্রশ্ন যে অমূলক ছিল না, সেটা স্পষ্ট হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) শুক্রবারের রায়ে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ