সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাঝ আকাশে একেবারে দেবতার মতো আবির্ভূত হল নবজাতক। ভাসতে ভাসতেই গর্ভস্থ সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখালেন মা। তখন ভোর হয় হয়। ঘড়ির কাঁটা দেখাচ্ছে, ৩ টে বাজে। এক আনন্দময় মুহূ্র্তের সাক্ষী রইলেন কাতার এয়ারওয়েজের কর্মীরা। বিমানের মধ্যেই সন্তানের জন্ম দেওয়া মা-কে তখন ঘিরে রয়েছেন তাঁরা।
এই অবস্থায় দোহা থেকে ব্যাংককগামী কাতার এয়ারওয়েজের বিমানটিকে জরুরি অবতরণের জন্য এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে খবর পাঠানো হয়। মা ও শিশুর যথাযথ পরিচর্যার জন্য এবার প্রাথমিক চিকিৎসা প্রয়োজন। ফলে বিমানটিকে দমদম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয়। মা-সদ্যোজাতকে পাঠানো হয় এক বেসরকারি হাসপাতালে।
দমদম বিমানবন্দরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “ভোর ৩ টে ৯ নাগাদ একটি কাতার এয়ারওয়েজের QR-830 বিমান, দোহা থেকে ব্যাংকক যাওয়ার পথে কলকাতা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণের জন্য আমরা একটি বার্তা পাই। প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথাও বলা হয়। এটিএসের মাধ্যমে পাইলট জানান যে চিকিৎসার প্রয়োজনেই জরুরি অবতরণ করা হচ্ছে।” সেই বার্তা পেয়েই তড়িঘড়ি দমদমে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করেন আধিকারিকরা। সদ্যোজাত এবং মা-কে বিমান থেকে নামিয়ে সোজা অ্যাম্বুল্যান্সে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, দু’জনেই সুস্থ আছেন। তাঁরা নিজেরাও অবাক হন, এই পরিস্থিতিতে কীভাবে মাঝ আকাশে এমন সফল অপারেশেন হল, তা ভেবে।
জানা গিয়েছে, ফাওমকাসিকর্ন নামে থাইল্যান্ডের বছর তেইশের তরুণী দোহা থেকে ব্যাংকক ফিরছিলেন। বিমানেই তাঁর প্রসব বেদনা ওঠে। তখন বিমান নাগপুরে। ব্যাংকক প্রায় অর্ধেক দূরত্বে। আপদকালীন পরিস্থিতি বুঝতে পেরে এগিয়ে আসেন বিমানসেবিকা এবং কেবিন ক্রু-রা। সকলে মিলে ওই অবস্থাতেই তাঁর সফল প্রসব করান। নাড়ি ছেঁড়ার যন্ত্রণার সঙ্গে সদ্যোজাতের কান্নার শব্দ শুনতে পান ফাওম। এরপর কলকাতা বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করিয়ে জরুরি ভিত্তিতে মেডিক্যাল পরিষেবা দেওয়া হয়। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই একদিকে কাতার এয়ারওয়েজের কর্মীরা, আরেকদিকে কলকাতা বিমানবন্দরের মেডিক্যাল টিম – উভয়েই ব্যাপক প্রশংসা কুড়োচ্ছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.