সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১২ বছর বয়স ছিল তাঁর। চোখের সামনে দেখেছিলেন, দাউদাউ করে জ্বলে মৃত্যু হল দাদার। সেই থেকে আগুনের সঙ্গে শত্রুতা পাতিয়ে বসে আছেন। আজ ষাটের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়েও আগুনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চলছে বিপিন গণত্রার। আজও কোথাও আগুন লাগার খবর পেলেই ছুটে যান সবার আগে। আগুনের আঁচের তোয়াক্কা না করে ঝাঁপিয়ে পড়েন বিপদে পড়া মানুষের প্রাণ বাঁচাতে।
১৯৯৩, বৌবাজারের বিস্ফোরণ। ২০০৮, নন্দরাম বাজারের আগুন। ২০১১, আমরি হাসপাতাল অগ্নিকাণ্ড। শহরের হেন কোনও অগ্নিকাণ্ড বাদ নেই যেখানে বিপিনবাবু মানুষের প্রাণ বাঁচাননি। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে চলছে তাঁর এই কর্মযজ্ঞ। না, বিপিনবাবু দমকলের কোনও কর্মী নন। নিজের ছোট্ট ফ্ল্যাটে একাই থাকেন। ইলেক্ট্রিশিয়ানের কাজ করে মাসে মোটে হাজার খানেক টাকা মত জোগাড় হয় তাঁর। বন্ধুরা মিলে ২৫০০ টাকা চাঁদা তুলে দেন প্রতি মাসে। ব্যস এতেই চলে তাঁর মাসকাবারি খরচ। সারাদিন বসে টিভি, রেডিওতে খবর দেখেন কোথাও আগুন লাগল কিনা। সেখানে খবর না পেলে দমকলের অফিসগুলিতে ফোন করে জানতে চান। খবর পেলেই ট্যাক্সি নিয়ে ছুটে যান।
বহুবার মরতে মরতে বেঁচে ফিরেছেন। আগুনে পুড়েছেন। আঘাত পেয়েছেন। কিন্তু থেমে থাকেননি। কোথাও একটা প্রাণ বাঁচানোর ক্ষীণতম সম্ভাবনা থাকলেও জীবনের তোয়াক্কা না করে ঝাঁপ দিয়েছেন। দমকলের তরফে তাঁর এই কাজকে সম্মান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সাম্মানিক স্বেচ্ছাসেবকের পরিচয়পত্র। ব্যস এইটুকু সম্বল করেই ৫৯ বছর বয়সেও চলছে তাঁর এই অগ্নিযুদ্ধ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.