অলংকরণ: সোমোশ্রী দাস।
অর্ণব আইচ: দিনের বেলা কখনও আদা-রসুন, কখনও জামাকাপড় বিক্রি করত। আর তার আড়ালে এলাকায় রেইকি চালাত তার চোখজোড়া। কোন বাড়িতে কোনও লোক থাকে না, কোন বাড়িতে তালা – সব তার নখদর্পণে। আর সেই ‘বিদ্যা’ কাজে লাগিয়ে সুযোগমতো একের পর এক বাড়িতে লুটপাট এবং তারপর আপাদমস্তক কালো কাপড়ে ঢেকে নজরদারি ক্যামেরাকে ফাঁকি দেওয়া। এভাবেই চলছিল সব। তবে শেষরক্ষা হল না। হরিদেবপুরে একে একে ১২টি বাড়ি লুট করে পুলিশের জালে ধরা পড়ল ‘চোর’। গুমা থেকে হরিদেবপুর থানার পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার ইউনিস খান ও মিলন। তাদের আদালতে পেশ করা হবে।
সম্প্রতি পরপর কয়েকটি বাড়িতে চুরির অভিযোগ জমা পড়েছিল হরিদেবপুর থানায়। সেসবের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। কিন্তু কিছুতেই কিনারা হচ্ছিল না। সিসিটিভি ফুটেজ জোগাড় করে তদন্তকারীরা দেখতে পান, বাড়িগুলি থেকে কালো কাপড়ে ঢাকা একজন বেরিয়ে যাচ্ছে। তাকে ‘চোর’ বলে সন্দেহ করলেও চেহারা দেখতে না পাওয়ায় তাকে চিহ্নিত করা যাচ্ছিল না। এদিকে, ‘চোর’ও বুঝতে পারে, তাকে খুঁজছে পুলিশ। সতর্ক হয়ে হরিদেবপুরে এলাকা ছেড়ে নরেন্দ্রপুরের নতুনহাটে, নিজের বাড়ির এলাকায় পালিয়ে যায় ইউনিস খান ও তার সাগরেদ মিলন। তবে সেখানেও নিরাপদে থাকা যাবে না বলে মনে হয়েছে তার। ফলে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল এদিক-ওদিক। হরিদেবপুর থানার পুলিশ আধিকারিক জয়দেব বৈরাগীর নেতৃত্বে একটি টিম তাকে খুঁজতে খুঁজতে শেষমেশ উত্তর ২৪ পরগনার গুমা থেকে গ্রেপ্তার হয় ইউনিস।
তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ইউনিস খান দিনের বেলায় কোনওদিন সবজি, কোনওদিন জামাকাপড় ভ্যানে নিয়ে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করত। এলাকাবাসীর সঙ্গে বেশ চেনাশোনাও হয়ে যায় তার। মিষ্টি ব্যবহারের ফেরিওয়ালাকে সকলে পছন্দও করতেন এবং তার থেকে জিনিসপত্র কিনতেন। কিন্তু সকালের ফেরিওয়ালাই যে ভোল বদলে রাতের আঁধারে ‘চোর’ হয়ে লুটপাট চালায়, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি কেউ। তবে এত ছদ্মবেশ ধরেও লাভ হল না। শেষমেশ পুলিশের জালে ধরা পড়ল ইউনিস ও তার সাগরেদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.