সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একমুখ দাড়ি গোঁফ। মাথায় ঘন বেগুনি রংয়ের পাগড়ি। সর্দারজি! হ্যাঁ, তাই তো। প্রথম দেখায় এর বাইরে কিছু মনে হওয়া অসম্ভব। তাঁকে দেখে সত্যি কেউ চিনতেও পারেননি। চিনবেন কী করে? যাতে কেউ ঘুণাক্ষরেও টের না পান, সে কারণেই তো এই বেশ। এতক্ষণে নিশ্চয়ই বোঝা গিয়েছে ইনি সর্দারজি নন। তাহলে ইনি কে?
[ ‘কোহলিই সর্বকালের সেরা চেজমাস্টার’ ]
একবার ভাল করে চোখের দিকে তাকান তো। চিনতে পারছেন? এক পুলিশ অফিসার কিন্তু পেরেছিলেন। পুজোয় তখন বিসর্জনের ঘটা চলছে। একের পর এক পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা এসে পৌঁছাচ্ছে বাবুঘাটে। তার মধ্যেই এসে পৌঁছেছিল গাড়িটা। কাচ নামিয়ে সর্দারজিকে দেখে একটুখানি থমকে গিয়েছেন ঝানু পুলিশ অফিসার। পরক্ষণেই মুচকি হাসি ফুটে ওঠে তাঁর মুখে। হাসি তখন তথাকথিত সর্দারজির মুখেও। অনুরোধ করেন, পরিচয় যেন অফিসার না ভাঙেন। কথা রেখেছিলেন তিনি।
[ কোহলি-রাহানের সঙ্গে একসারিতে কুলদীপ-চাহালকে বসালেন শচীন ]
কী এখনও এই ব্যক্তিকে চিনতে পারছেন না? বেশ, তাহলে এঁর আরও কিছু গল্প শোনা যাক। সেদিন অফিসার কথা রেখেছিলেন, কিন্তু সকলেই কি কথা রেখেছিল তাঁর সঙ্গে? না অনেকেই রাখেননি। অথচ তিনি খুব ভালই জানেন এটাই জীবন। নিজেরই গড়ে তোলা সোনার সংসার থেকে যেদিন তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছিল, সেদিন একফোঁটাও চোখের জল ফেলেননি। এমনকী পিতার মৃত্যুতেও তাঁর চোখ ছিল খরখরে শুকনো। ভিতরে কি ভেঙেচুরে একাকার হয়ে যাননি? হয়েছেন। কিন্তু এ দেশের সকলেই জানেন, ভিতরের ভাঙনকে চোয়াল চাপা জেদে আটকে রাখেন তিনি। আর সে আগুন বেরিয়ে আসে পারফরম্যান্স হয়ে। ফিনিক্স পাখির মতো প্রতিবার তাই ধ্বংসস্তূপ থেকে তাঁর উড়ান সাফল্যের সোনালি আকাশে। এমনই ইস্পাতকঠিন তাঁর মানসিকতা। এমনই দৃঢ়চেতা তিনি। আবার সেই তিনিই পাড়ার পুজোর আনন্দ কিছুতেই ছাড়তে পারেন না। ছাড়তে পারেন না ঢাক বাজানো বা প্রসাদ বিলি করার মতো ছোট ছোট মুহূর্তের আনন্দগুলিকে। এমনকী বিসর্জন দিতে যাওয়ার ওই যে মজা, তাইবা ছাড়েন কী করে! এদিকে গোটা দেশ তাঁকে একজাকে চেনে। মুখ তো দূরের কথা, শুধু দু’চোখের দৃষ্টিই তাঁকে চিনিয়ে দেবে। সেই তিনি নিজেকে লুকোবেন কী করে? দ্বারস্থ হয়েছিলেন স্ত্রীর। এলো মেকআপের সামগ্রী। চুল-দাড়ি আর পাগড়িতে হয়ে উঠলেন সর্দারজি। সেই সর্দারজি হয়েই যোগ দিলেন শোভাযাত্রায়। সর্বার্থে আন্তর্জাতিক হয়েও যিনি মনের গহনে এভাবে বাঙালিয়ানাকে আগলে রাখতে পারেন তিনি আর কে? হ্যাঁ, সব সাসপেন্সের এখানেই ইতি। যদি এই সময়ে সত্যিই কেউ আন্তর্জাতিক বাঙালি হয়ে থাকেন, তবে তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। এ ছবি প্রাক্তন ভারত অধিনায়কেরই।
প্রকাশিত হচ্ছে তার বই ‘আ সেঞ্চুরি ইজ নট এনাফ’। সম্প্রতি টুইটার হ্যান্ডেলে সে বইয়ের ঘোষণা করেছেন সৌরভ নিজেই। জানিয়েছেন, এই বইয়ের কারণে তিনি বেশ এক্সাইটেড। হওয়ারই কথা। কেননা এই বইয়ের পাতায় মনের ঝাঁপি খুলেছেন মহারাজ। সেই দল থেকে বাদ পড়া, সেই পুজোর সময়েই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত, সমস্ত গল্প, জল্পনা নিয়ে এবার খোলামেলা মহারাজ। তাঁর মনের দুনিয়ার খানিকটা নাগাল হয়তো পাবেন তাঁর ভক্তরা। আর পাবেন সেই আগুনের খোঁজ। যে আগুন খাদের কিনারা থেকে তাঁকে তুলে এনেছে সাফল্যের শিখরে। প্রতিবার যখন যে কাজে গিয়েছেন, সেখানে যে তুমুল সাফল্য পেয়েছেন। তার পিছনে যে জেদ আর মানসিকতা আছে তার নামই সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। হার না মানা এই অ্যাটিটিউডের নামই সৌরভ। শুধু সেঞ্চুরির পরিসংখ্যানে তাঁকে তাই সত্যিই মাপা যায় না।
বাঙালি তো বটেই, ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরাও সে পরিমাপ কোনওদিন মন দেয়নি। শুধু মনোযোগী হয়েছে এক অফুরন্ত আবেগ আর জেদের রূপকথায়। তারই নতুন পরত উন্মেষের পালা এই বইয়ে।
Dear fans, here is my first book #ACenturyisNotEnough, to be published end of this month. Preorder on @Flipkart @FlipkartStories: https://t.co/VVK5KiDkdl
To read the first chapter for free, go to Juggernaut: https://t.co/OChPk6UUiJ
CC: @juggernautbooks @gbsaltlake pic.twitter.com/cGp8UsNe16
— Sourav Ganguly (@SGanguly99) February 2, 2018
ছবি সৌজন্য: www.juggernaut.in
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.