ফাইল ছবি।
স্টাফ রিপোর্টার: তাঁর বিরুদ্ধে গত ১৫ মাসে দায়ের করা রাজ্য সরকারের নানা মামলা নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বই প্রকাশ করতেই পালটা দিল তৃণমূল। নারদ মামলার কথা কেন তথ্য নেই তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ, নারদ মামলাটিতে সিবিআইয়ের এফআইআরে তাঁর নাম রয়েছে। কিন্তু সিবিআই নারদের এফআইআরে নাম থাকা তৃণমূল নেতাদের গ্রেপ্তার করলেও বিরোধী দলনেতাকে এখনও জেরা করেনি।
মঙ্গলবার বিধানসভায় ‘১৯৫৬’ শীর্ষক এই পুস্তিকা প্রকাশ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু দাবি করেন, ‘‘২০২১ সালের ৫ মে’র পর থেকে এই মামলাগুলি দায়ের করা হয়েছে। আমার বিরুদ্ধে আগে কোনও মামলা ছিল না। যে মামলাগুলি নিয়ে হাই কোর্টে গিয়েছি, শুধুমাত্র সেগুলি তুলে ধরেছি।’’ বিরোধী দলনেতা বই প্রকাশ করার পরেই পালটা প্রশ্ন তুলে তীব্র আক্রমণ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘একটা নির্দিষ্ট সময় অবধি মামলা ছিল না। পরে হয়েছে। কিন্তু তিনি তো তখন প্রবল প্রতাপশালী ছিলেন। গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী, সাংসদ, চেয়ারম্যান ছিলেন। প্রবল ক্ষমতাশালী হওয়ায় যখন মামলা হয়নি তখন তিনি ঠেকিয়ে রাখেননি তো?’’
বিচারাধীন বিষয় নিয়ে বই প্রকাশ করায় শুভেন্দুকে রীতিমতো পালটা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘‘বিচারাধীন মামলা কোনও স্থায়ী উপসংহার নয়। যদি সাহস থাকে, তাহলে বই শুরু করো, সিবিআইয়ের এফআইআর দিয়ে। না হলে বই স্থগিত করো।’’ এরপরই আরও এক ধাপ এগিয়ে তৃণমূল মুখপাত্র পালটা দাবি করে বলেন, ‘‘মামলা নিয়েই যদি পুস্তিকা হয় তবে শুভেন্দুর বইয়ে আরও দুটো অংশ যোগ করতে হবে। প্রথমটি হল, তিনি ক’টা সরকারি পদে ছিলেন? তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা কতগুলি জনপ্রতিনিধিত্ব নিয়েছিলেন? দ্বিতীয়ত, তাঁর বিরুদ্ধে মামলার কথাই যদি হয় তবে নারদ নিয়ে সিবিআইয়ের এফআইআর-টি কোথায়? সেটাও এই বইয়ে উল্লেখ থাকবে তো?’’ তীব্র শ্লেষের সঙ্গে কুণালের প্রশ্ন, ‘‘বিজেপি অফিসে নারদের ভিডিও দেখিয়ে তোমাকে চোর বলেছিল। সেকথা লিখবে তো বইয়ে? এটাও তো মামলা। তাহলে সেই মামলাগুলির কথা কেন বইয়ে থাকবে না? অবিলম্বে শুভেন্দুর বইয়ে সিবিআইয়ের এফআইআর যোগ করতে হবে। না হলে ওই বই সাদা কাগজের সমতুল্য।’’ শুভেন্দুর প্রাক্তন দেহরক্ষীর মৃত্যুরহস্যের তদন্তের দাবি নিয়েও এদিন খোঁচা দিয়েছেন কুণাল।
বিরোধী দলনেতা তাঁর বিরুদ্ধে যে মামলাগুলি নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তা নিয়ে লেখা বইটি তিনটি ভাষায় প্রকাশ করেছেন। শুভেন্দু বলেন, ‘‘প্রায় দশটির বেশি জায়গায় রাস্তায় শয়ে শয়ে পুলিশ দিয়ে আমায় আটকানো হয়েছে, সেই ছবিগুলি আমি দিয়েছি।’’ বইটি প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, উপরাষ্ট্রপতি ছাড়াও বিজেপি শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও অন্যান্য রাজ্যের বিরোধী দলনেতাকে পাঠাবেন বলে জানান বিরোধী দলনেতা। আর এই বিষয়টি নিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে এদিন তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘‘আমি দলের কাছে অনুমতি চাইব। সারদা ও নারদ সংক্রান্ত শুভেন্দুকে নিয়ে যাবতীয় তথ্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ উনি যাঁদের যাঁদের কাছে বই পাঠাচ্ছেন তাঁদেরও আমি পাঠাব।’’ একইসঙ্গে পালটা অভিযোগ করে তৃণমূল মুখপাত্র বলেন, ‘‘শুভেন্দুই বাংলায় বহু জায়গায় মিথ্যা মামলায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের জেলে পুরছেন। তা হলে রাজ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে বা অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই অসম্পূর্ণ বই পাঠিয়ে অভিযোগ জানিয়ে কী হবে?’’ তৃণমূলের অভিযোগ, এনআইএ-কে কাজে লাগিয়ে তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করাচ্ছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। খেজুরির ঘটনার কথা উল্লেখ করে তাঁকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে শুভেন্দুর জবাব, ‘‘বিস্ফোরণ হয়েছিল তাই এনআইএ গিয়েছিল। বোমা ফাটলে তো এনআইএ যাবে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.