কলহার মুখোপাধ্যায় ও অর্ণব আইচ: জাল পাসপোর্ট-সহ কলকাতা বিমানবন্দরে ধৃত দুই রোহিঙ্গা মহিলা। রবিবার মধ্যরাতে ব্যাংককগামী একটি বিমানে সওয়ার হওয়ার আগেই তাদের আটক করেন অভিবাসন দপ্তরের আধিকারিকরা।
[আরও পড়ুন: ‘স্লোগান তুলেছে, গুলি তো চালায়নি’, ‘গোলি মারো’ প্রসঙ্গে সাফাই দিলীপের]
গতকাল রাত ১২.৫৫ মিনিট নাগাদ কলকাতা থেকে ব্যাংককগামী থাই এয়ারওয়েজের একটি বিমানের দুই যাত্রীর কথাবার্তায় সন্দেহ হয় অভিবাসন দপ্তরের আধিকারিকদের। তাদের পাসপোর্ট পরীক্ষা করে দেখা যায় একজনের নাম রিনা সাহা ও ওপরজনের নাম তানিয়া বিশাস। তবে ভাল করে নথি খতিয়ে দেখতেই, কেঁচো খুঁজতে সাপ বেরিয়ে পড়ে। অভিবাসন দপ্তরের আধিকারিকরা জানতে পারেন, তানিয়ার আসল নাম তসলিমা। অন্যদিকে, রিনার নাম রোকসানা আক্তার। দু’জনেই মায়ানমারের তাংশুড়ির বাসিন্দা। বেশ কিছুক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ধৃতদের এনএসসিবিআই থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত দুই মহিলার পাসপোর্টে ঠিকানা হিসেবে উত্তর ২৪ পরগনা হাবরা ফুলতলার কথা লেখা রয়েছে। কী করে ভারতীয় পাসপোর্ট তৈরি করল তারা? কার সাহায্যে তৈরি করা হল জাল নথি? তাদের সঙ্গে কি আরও রোহিঙ্গা রয়েছে? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে ধৃতদের জেরা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এনএসসিবি আই থানার পুলিশ বড়সড় কোনও চক্রের যোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখছে। দুই মহিলাকে আজই বারাকপুর আদালতে পেশ করা হবে।
গোয়েন্দা সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের প্রায় ৩০ জনের একটি দল ভারতে প্রবেশ করেছে। উত্তর ২৪ পরগনার ঘোজাডাঙ্গা সীমান্ত দিয়ে তারা ভারতে প্রবেশ করেছে বলে খবর। সেখানেই দালাল মারফৎ ভারতীয় পাসপোর্ট যোগাড় করে অনুপ্রবেশকারীরা। সন্দেহ এড়াতে হিন্দু নাম গ্রহণ করেছিল ধৃতরা। ভারত থেকে ইন্দোনেশিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল ধৃত দুই মহিলার। সেখানেই একজনের স্বামী কর্মসূত্রে থাকায় ওই দেশে পালিয়ে যাওয়ার ছক কষেছিল তারা। তবে গোয়েন্দাদের কাছে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছে দলের বাকি ২৮ জন কোথায়।
উল্লেখ্য, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সেন অভিযানের পরই বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণ করে কয়েক লক্ষ রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু। তবে এতে ভারতের জন্য নিরাপত্তাজনিত বড়সড় সমস্যা তৈরি হয়েছে। মণিপুর ও পশ্চিমবঙ্গে সীমান্তের ফাঁকফোকর দিয়ে এদেশে ঢুকে পড়ছে রোহিঙ্গারা।দালালদের মাধ্যমে ভারতীয় পাসপোর্ট-সহ অন্যান্য নথিও যোগাড় করে ফেলছে অনুপ্রবেশকারীরা। রোহিঙ্গাদের একাংশের জঙ্গিযোগ প্রকাশ্যে আশায় রীতিমতো উদ্বেগ তৈরি হয়েছে নিরাপত্তা মহলে।