স্টাফ রিপোর্টার: পেটের অন্য কোনও অপারেশন, সঙ্গে অপ্রয়োজনে অ্যাপেনডিক্স অপারেশন করা যাবে না। একইরকমভাবে দরকার হলেই একমাত্র হার্নিয়া বা হাইড্রোসিল অস্ত্রোপচার করতে হবে। বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথী (Swasthya Sathi) প্রকল্পে এই ধরনের অস্ত্রোপচার নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, দাঁত তোলা বা স্কেলিংয়ের মতো সমস্যার ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে স্বাস্থ্যসাথীর সুযোগ মিলবে না। বস্তুত, সরকারি হাসপাতালের পরিষেবাকে আরও নিবিড় করতেই নতুন বিজ্ঞপ্তি চালু করল স্বাস্থ্য দপ্তর।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নতুন দু’টি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাবডিভিশন পর্যন্ত সব হাসপাতালে প্রায় সব ধরনের অস্ত্রোপচার, রোগনির্ণয় ও অস্ত্রোপচার সম্ভব। কিন্তু স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের পর্যবেক্ষণ জেলার প্রায় অধিকাংশ হাসপাতালে এই পরিষেবা নিতে রোগীদের তেমন আগ্রহ দেখা যায় না। উল্টে স্থানীয় নার্সিংহোমে ভিড় বাড়ে। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের আয় বাড়ছে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে নিখরচায় এই পরিষেবা পেতে পারে যে কোনও রোগী। তাই নতুন নিয়ম চালু করা হল।
বস্তুত, স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পকে ঘিরে নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিলই। যার ফলে জলের মতো অর্থ খরচ হয়ে যাচ্ছে সরকারি কোষাগারে। তাই একসঙ্গে দু’টি পদক্ষেপ করা হল। যদিও স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে প্রশ্ন তুলছে নার্সিংহোম সংগঠন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জটিলতা ছাড়া হার্নিয়া, হাইড্রোসিল অপারেশন এবং দাঁতের স্কেলিং-ফিলিংয়ের মতো চিকিৎসা বেসরকারি হাসপাতালে করা যাবে না স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায়। আবার পেটের অন্য অস্ত্রোপচারের সঙ্গে ‘অতিরিক্ত’ প্যাকেজ হিসাবে জোড়া যাবে না অ্যাপেন্ডিক্স বাদ দেওয়ার অস্ত্রোপচার বা অ্যাপেন্ডেকটোমি।
স্বাস্থ্য দফতরের আশঙ্কা অস্ত্রোপচারকে ঢাল করে কার্যত সরকারি টাকা লুঠ করছে কিছু দ্বিতীয় সারির নার্সিংহোম। তাই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিতান্ত প্রয়োজন হলে অ্যাপেন্ডিক্সের অপারেশন পৃথক প্যাকেজে করতে হবে। একটি অপারেশনের সঙ্গে জুড়ে দিয়ে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প থেকে টাকা জোগাড় করা যাবে না। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কয়েকটি ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি অথবা প্রাণ সংশয়ের মতো ঘটনা হলেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে আসতে পারে। তেমনই ডেন্টাল প্রসিডিওরও আর স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে আসবে না।
এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায় গত পাঁচ বছরে ছোট নার্সিংহোমগুলিকে স্বাস্থ্যসাথী খাতে প্রায় ২,২০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে পরিকাঠামো রয়েছে। তার পরেও কেন স্বাস্থ্যসাথীকে ব্যবহার করে নার্সিংহোমের আয় বাড়ানো হবে। তবে অন্য অংশের অভিমত, ছোট নার্সিংহোমগুলি এই ধরনের অস্ত্রোপচার করেই টিকে আছে। ছোট ও মাঝারি হাসপাতাল সংগঠন ‘প্রোগ্রেসিভ নার্সিংহোম অ্যান্ড হসপিটাল অ্যাসোসিয়েশনে’র চেয়ারম্যান শেখ আলহাজউদ্দিন বলেন, ‘‘এর ফলে নার্সিংহোমগুলি আর্থিক সংকটে পড়বে।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.