স্টাফ রিপোর্টার: ঐতিহাসিক মে দিবসে প্রয়াত এ রাজ্যে বাম সরকারের প্রথম অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্র। অর্থনীতিবিদ হিসেবেও তাঁর খ্যাতি কম নয়। কিন্তু, প্রবীণ এই বামপন্থী নেতার মরদেহ পৌঁছল না আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের সদর দপ্তরে। মৃত্যুর পরেও অশোক মিত্রকে কার্যত অপাংক্তেয় করে রাখলেন দলের ক্ষমতাসীন নেতারা। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিত্রদের আচরণে নিন্দার ঝড় রাজনৈতিক মহলে।
[শ্রমিক দিবসেই জীবনাবসান, প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী অশোক মিত্র]
এ রাজ্যে তিন দশকের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় ছিল বামেরা। অর্থমন্ত্রী ছিলেন দু’জন। অশোক মিত্র ও অসীম দাশগুপ্ত। মঙ্গলবার প্রয়াত হলেন প্রথমজন। ১৯৭৭ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত জ্যোতি বসুর মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রী ছিলেন অশোক মিত্র। ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের আর্থিক উপদেষ্টাও ছিলেন তিনি। কিন্তু, এ রাজ্যে যখন বাম সরকারের অর্থমন্ত্রী ছিলেন, তখন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর সঙ্গে মতের মিল হয়নি অশোক মিত্রের। তাই মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন তিনি। দলের সঙ্গেও যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করেছিলেন। তারপর গঙ্গা দিয়ে অনেক জল বয়ে গিয়েছে। এ রাজ্যে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে বামেরা। জ্যোতি বসুও আর বেঁচে নেই। কিন্তু, অতীতকে ভুলতে পারেননি সিপিএমের বর্তমান নেতারা। তাই মৃত্যুর পর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের সদর দপ্তরে ঠাঁই হল না অশোক মিত্রের।
[আলিঙ্গনে ‘শাপমুক্তি’, প্রেম-প্রতিবাদ মিলেমিশেই কলকাতা আবার ‘ভালবাসার শহর’]
দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন অশোক মিত্র। মঙ্গলবার, মে দিবসের দিন, সকাল সওয়া ন’টা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিংহোমে প্রয়াত হন প্রবীণ বাম জমানার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী। সাধারণভাবে রাজ্য স্তরের কোনও নেতা বা মন্ত্রীর মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই প্রয়াত নেতাকে শেষশ্রদ্ধা জানান সিপিএমের নেতারা। কিন্তু, এই নিয়মের ব্যতিক্রম ঘটল অশোক মিত্রের ক্ষেত্রে।
[কুকুরের মাংসের ভয়ে কাঁটা শহরবাসী, হাল ফেরাতে পদক্ষেপ রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশনের]
বিকেল সাড়ে চারটে পর্যন্ত অশোকবাবুর মরদেহ ছিল আলিপুরে তাঁর বাসভবনে। বাড়িতে গিয়ে তাঁকে শেষশ্রদ্ধা জানিয়ে আসেন অনেকেই। পরে মিছিল করে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। সেখানেও একপ্রস্ত শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের পর্ব চলে। কিন্তু, শেষযাত্রায়ও আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে সিপিএমের সদর দপ্তর ছুয়ে যেতে পারলেন না অশোক মিত্র! মৃত্যুর পরেও তাঁকে ব্রাত্য করে রাখলেন দলের বর্তমান নেতারা। বাম সরকারের প্রথম অর্থমন্ত্রীর কী এই উপেক্ষা প্রাপ্য ছিল? প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। নিন্দার ঝড় রাজনৈতিক মহলে।
[দুর্ঘটনা নয়, রেলের জল খেয়ে প্রাণ হারিয়েছেন বেশি মানুষ!]