Advertisement
Advertisement

Breaking News

বেআইনি বাজি কারখানা ও শিবকাশীর দাপাদাপি রুখতে কড়া পদক্ষেপ রাজ্যের

গড়া হচ্ছে ক্লাস্টার, দেওয়া হবে বাজি তৈরির প্রশিক্ষণ।

West Bengal to rein illegal cracker factories
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 21, 2018 11:42 am
  • Updated:June 21, 2018 11:42 am

শুভঙ্কর বসু: সাপও মরবে অথচ লাঠিও ভাঙবে না! বেআইনি বাজি কারখানা থেকে শিবকাশীর একচেটিয়া দাপট রুখতে এবার এই দাওয়াই প্রয়োগ করতে চলেছে রাজ্য সরকার। গত মরশুমে রাজ্যের একাধিক জেলায় বেআইনি বাজি কারখানার বলি হয়েছেন বহু মানুষ। প্রশাসনের নজর এড়িয়ে ঘোপেঘাপে এখনও বহু বেআইনি বাজি কারখানা চলছে রাজ্যে। সেগুলি বন্ধ করতে এবার জেলায় জেলায় বাজি তৈরির ক্লাস্টার তৈরি করছে রাজ্য। ‘বেআইনিভাবে নয়। বাজি তৈরি করুন প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও যাবতীয় ছাড়পত্র নিয়ে।’–প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য এটাই। আর এমনটা করতে পারলে বাজির বাজারে শিবকাশীর দাপট যেমন কমানো যাবে তেমনি বেআইনি কারখানাগুলির উপর সহজেই নিয়ন্ত্রণ পাওয়া যাবে। কোথায় কীভাবে হবে এই ক্লাস্টার?

[জেলে মাদক-মোবাইল রুখতে পদস্থ কর্তাদেরও তল্লাশি শুরু আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে]

Advertisement

বেআইনি বাজি কারখানাগুলির জেরে দূষণ ও প্রাণহানির ঘটনায় জাতীয় পরিবেশ আদালতে একটি মামলা হয়েছিল। সেই মামলায় রাজ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের প্রধান সচিব হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হুগলি, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমানে বাজি তৈরির ক্লাস্টার করবে রাজ্য সরকার। প্রকল্পের সাফল্য অনুযায়ী পরে রাজ্যের সর্বত্র এই ধরনের ক্লাস্টার তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে রাজ্য ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের। ইতিমধ্যেই দক্ষিণ ২৪ পরগনায় জায়গা চিহ্নিত করা হয়ে গিয়েছে। মূলত আইনত বাজি কারখানা তৈরির হ্যাপা এড়িয়ে মোটা টাকার মুনাফা লুটতেই বেআইনি বাজি কারখানার রমরমা। রাজ্যের বাজি হাব বলে পরিচিত দক্ষিণ ২৪ পরগনার চম্পাহাটিতে পুজোর ঠিক দু’তিন মাস আগে থেকে কমবেশি ৩০ হাজার বাজি তৈরির কারখানা ও বিক্রির কাউন্টার গজিয়ে ওঠে। চম্পাহাটি-১, চম্পাহাটি-২, বেগমপুর ও দক্ষিণ গড়িয়ার একাংশ জুড়ে আড়ালে আবডালে গজিয়ে ওঠে কারখানাগুলি। অথচ যার মধ্যে মাত্র ১৫ থেকে ২০টি কারখানার বাজি বানানোর বৈধ ছাড়পত্র রয়েছে। অথচ স্থায়ী নির্মাণে তৈরি প্রায় ৭ হাজার বাজি কারখানা রয়েছে এখানে। যেগুলির কোনওটিরই বৈধ ছাড়পত্র নেই।

Advertisement

[আঘাত ঠোঁটে, যৌনাঙ্গে অস্ত্রোপচারের জন্য শিশুকে ক্যাথিটার পরালেন চিকিৎসক]

বর্তমান আইন মোতাবেক একটি বাজি কারখানা তৈরি করতে সর্বপ্রথম জরুরি একটি ক্র‌্যাকার/এক্সপ্লোসিভ লাইসেন্স। ক্র‌্যাকার/এক্সপ্লোসিভ আইন ১৯৮৪ অনুযায়ী ৪ নম্বর ফর্ম ফিলাপ করে ডেপুটি কমিশনারের অফিস থেকে এই লাইসেন্স পাওয়া যায়। কিন্তু লাইসেন্স পেতে গেলে বেশ কয়েকটি শর্ত পালন করতে হয় আবেদনকারীকে। পুলিশের খাতায় কোনও অপরাধে যুক্ত থাকার রেকর্ড থাকলে লাইসেন্স মিলবে না। আবেদনকারীকে প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে। লাইসেন্স পেতে চার নম্বর ফর্মের সঙ্গে নোটারাইজড এফিডেভিট ও ‘সাইট অ্যাপ্রুভাল প্ল্যান’-এর একটি কপিও জমা দিতে হবে আবেদনকারীকে। লাইসেন্স পাওয়ার পর রয়েছে অন্য ঝক্কি। এবার প্রয়োজন পরিবেশগত ছাড়পত্রের। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছ থেকে এই ছাড়পত্র পাওয়া যায়।

[‘নিজশ্রী’ প্রকল্পে কম টাকায় গরিবদের ফ্ল্যাট দেবে রাজ্য সরকার]

যদিও চম্পাহাটির বাজি বিক্রেতাদের একাংশের বক্তব্য, লাইসেন্স ঘিরে দালাল চক্র কাজ করে। এক একটি লাইসেন্স পেতে ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লেগে যায়। তাছাড়া পরিবেশ বিধি শিথিল না করলে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। আর ক্লাস্টার তৈরি করে এক ঢিলে সমস্ত পাখি মারতে চাইছে রাজ্য সরকার। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতর সূত্রের খবর, এক জানালা নীতির মাধ্যমে ইচ্ছুক আবেদনকারীদের লাইসেন্স ও পরিবেশগত ছাড়পত্রের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি দক্ষ কারিগর এনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করা হবে। ক্লাস্টারে তৈরি বাজি রপ্তানিতেও সহায়তা করবে সরকার। এদিকে, রাজে্য কতগুলি বাজি কারখানাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছে আদালত। আগামী ৩ জুলাই ফের মামলার শুনানি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ