Advertisement
Advertisement

Breaking News

ছেলেকে খুন

বিধবার উদ্দাম প্রেমে বাধা, ছেলেকে ট্রেনের সামনে ফেলে খুন মায়ের প্রেমিকের!

চাঞ্চল্য কাঁকুড়গাছিতে।

Widow and her boyfriend killed 12 years son at Kankurgachi
Published by: Bishakha Pal
  • Posted:June 21, 2019 8:16 pm
  • Updated:June 21, 2019 8:30 pm

সুব্রত বিশ্বাস ও অরিজিৎ গুপ্ত: বিধবার উদ্দাম প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ছেলে। আর এতেই বিপত্তি। বারো বছরের ছেলেকে চলন্ত ট্রেনের সামনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে খুন করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধাবোধ করেনি মা কাকলি রায় ও তার প্রেমিক রঞ্জিত ভড়। শুক্রবার দু’জনকেই গ্রেপ্তার করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন হাওড়ার পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা নিজে।

শুক্রবার সকালে শিয়ালদহ-বিধাননগরের মাঝে কাঁকুড়গাছি এলাকায় লাইনের উপর থেকে এক বছর বারোর কিশোরের দেহ উদ্ধার করে শিয়ালদহ রেল পুলিশ। শিয়ালদহ রেল পুলিশের সুপার অশেষ বিশ্বাস জানান, দেহটি অজ্ঞাত হওয়ায় বিভিন্ন থানায় বিষয়টি জানানো হয়। হাওড়া চ্যাটার্জিহাট থানা রেল পুলিশকে জানায়, বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে এক কিশোর নিখোঁজ। শুভম রায় (১২) নামে ওই কিশোরের বাড়ি ওই থানা এলাকার কলাবাগান লেনে। শুভমের ফটো দেখে আইও নিশ্চিত হন দেহটি তারই।

Advertisement

শুভমের পিসি নিরূপা দাস জানান, হাওড়া কেদারনাথ স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সে। বৃহস্পতিবার বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে তড়িঘড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় বলে যায়, রঞ্জিতকাকু ফোনে বলেছেন, মায়ের দুর্ঘটনা হয়েছে। হাওড়া হাসপাতালে ভরতি। তিনি সেখানে রয়েছেন। সেও সেখানে হাসপাতালে যাচ্ছে। এই বলে বাড়ি থেকে বেরলেও শুভম রাতে আর বাড়ি ফেরেনি। তার আগে থেকে মা-ও উধাও। রাতে কাকলি বাড়ি ফেরে। ছেলে না ফেরায় চ্যাটার্জি হাট থানায় মিসিং ডায়েরি করে মা। রাতে তাদের কাছে একটি ফোন আসে রঞ্জিতের বাড়ি থেকে। তার বোন ফোন করে জানায়, দাদা একটি ছেলেকে নিয়ে বাড়ি এসেছে। এর পর তারা রঞ্জিতের বাড়ি গিয়ে শুভমের দেখা না পেয়ে সন্দেহের বশে ফুলবাগান থানায় অভিযোগ জানায়। ততক্ষণে দেহ উদ্ধারের খবর গিয়েছে চ্যাটার্জিহাট থানায়।

Advertisement

[ আরও পড়ুন: অশান্তি থামা দূরঅস্ত, ভাটপাড়ায় মৃতদেহ নিয়ে মিছিল থেকে পুলিশের উপর হামলা ]

লাইন থেকে শুভমের ছিন্নভিন্ন দেহ উদ্ধারের পরই সন্দেহ মা ও তার প্রেমিকের দিকে উঠে আসে। চ্যাটার্জিহাট থানা কাঁকুড়গাছি এলাকায় রঞ্জিত ভড়ের বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর কাকলি রায়কেও গ্রেপ্তার করে হাওড়া পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে শুভমের বাবা মারা যান। এর পর তার মা কাকলি আয়ার কাজ শুরু করে। পরে আলাপ হয় কাঁকুড়গাছির বাসিন্দা রঞ্জিত ভড়ের। আলাপ থেকে প্রেম। সেই প্রেমের জোয়ারে ভাসতে থাকে ওরা। কিন্তু উদ্দাম প্রেমে বাধা হয়ে যায় কাকলির ছেলে। এখন অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। ফলে রঞ্জিত-কাকলির বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক মেনে নিতে কষ্ট হয় তার। মাঝে মধ্যেই এই নিয়ে প্রতিবাদে করত সে। বলত পিসিকেও। উদ্দাম প্রেমে বাধা ছেলেই। তা মানতে পারেনি জন্মদাত্রী মা ও তার প্রেমিক। এর পর দু’জনেই পরিকল্পনা করে, শুভমকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিলেই প্রেম বাধামুক্ত হবে। ভাবনা মতো পরিকল্পনার জাল বোনে দু’জনে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দু’জনে এক সঙ্গে মিলে খুনের প্রেক্ষাপট সাজিয়ে নেয়। রঞ্জিত ফোনে শুভমকে মায়ের অসুস্থতার খবর দিয়ে হাসপাতালে ডেকে পাঠায়। পরে রঞ্জিত শুভমকে ভুলিয়ে কলকাতা কাঁকুড়গাছি এলাকায় নিয়ে যায়। গল্পের ছলে লাইন ধারে নিয়ে সুযোগ বুঝে চলন্ত ট্রেনের সামনে ফেলে দেয়। সন্তানের জীবনে এমনই মর্মান্তিক পরিণতি এনে দিল মা-ই। পিসি নিরূপা দাস কাতরস্বরে জানিয়েছেন, ছেলেটা কী করেছিল যে অকালেই এমন মর্মান্তিক পরিণতির শিকার হতে হল তাকে? পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা জানান, মা ও প্রেমিক দু’জনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে দু’জনকেই। ঘটনার সময় কাকলি নিজে উপস্থিত ছিল কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

[ আরও পড়ুন: জমি হাতিয়ে নিয়েছে মেয়ে, সুবিচারের দাবিতে ব্লক অফিসের সামনে ধরনা বৃদ্ধের ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ