Advertisement
Advertisement

Breaking News

Covid-19

করোনা কালে অ্যাপ ক্যাবই অ্যাম্বুল্যান্স, রান্না ফেলে রোগী নিয়ে ছুটছেন এই যুবতী

করোনা আক্রান্তের মনের জোর বাড়াতেই কলার টিউন বদলেছেন ক্যাবচালক শম্পা।

Woman turns app cab into ambulance for Covid patients in Kolkata | Sangbad Pratidin
Published by: Abhisek Rakshit
  • Posted:May 31, 2021 1:06 pm
  • Updated:May 31, 2021 1:11 pm

নব্যেন্দু হাজরা: এক কোভিড (Covid-19) রোগীর কথা বলতে রবিবার সকালে ফোন করেছিলাম শম্পাকে। কিছুক্ষনের মধ্যেই উলটোদিকে কলার টিউন বেজে উঠল, ‘আমরা করব জয়, আমরা করব জয়, আমরা করব জয়… নিশ্চয়।’ হ্যালো বলার আগেই মন যেন নতুন পৃথিবীর স্বপ্ন দেখল একটু। যে বিশ্বে করোনা নামক মহামারী নেই। ঘোর কাটতেই নিজের পরিচয় দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, করোনা রোগী আছে। আপনি হাসপাতালে নিয়ে যাবেন? উত্তর এল, হ্যাঁ। কোথায় যেতে হবে বলুন। গন্তব্য বলার আগেই মুখ ফস্কে জানতে চাইলাম ফোনে কলারটিউনটা কি গত নির্বাচনের কারণে রাখা? নাকি বরাবরই? খানিক থেমে বললেন, ” না, আসলে আমার কাছে তো এখন বেশিরভাগই সিরিয়াস করোনা রোগী আর তার পরিবারের লোকেদের ফোন আসে। ক্রিটিক্যাল পেশেন্ট আর কি। যিনি আক্রান্ত হন বা তার পরিবারের মানুষের মনের অবস্থা থেকে তখন শোচনীয় থাকে। মৃত্যুভয় গ্রাস করে তাঁদের। সেই পরিস্থিতিতে তাদের মনের জোর যাতে একটু বাড়াতে পারি সেকারণেই এই কলার টিউন রেখেছি। এই গানটা শুনলেই মন ভালো হয়ে যায়। মন শক্ত হয়। করোনাও তো একটা যুদ্ধ। সেই যুদ্ধ জয়ের স্বপ্ন দেখা যায়।”

শম্পা নন্দী। আপ ক্যাব চালক। বাড়ি যাদবপুরের কাছে। বাড়িতে এক মেয়ে ক্লাস নাইনে পড়ে। আপাতত দিন রাত এক করে গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে ছুটছেন কোভিড রোগী নিয়ে। রোগীর বাড়ি থেকে হাসপাতাল। আবার সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে বাড়ি। পিপিই কিট পরে পিংক ক্যাব নিয়ে কোভিড আম্বুল্যান্স নিয়ে ঘুরছেন শহরের এক মাথা থেকে অন্য মাথা। করোনা রোগীকে হাসপাতালে নিতে যখন অ্যাম্বুল্যান্সের সংকট চতুর্দিকে। অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের বিরুদ্ধে যেমন খুশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই অবস্থাতে যেন কিছুটা মুশকিল আশানের ভূমিকায় মহিলা এই ক্যাবচালক। তিনি ছাড়াও আরও এক মহিলা এভাবেই গাড়িতে কোভিড রোগী নিয়ে ছুটছেন তার নাম টগরী শীল। স্টিয়ারিংয়ে বসে ছুটে চলেছেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ভোটে ভরাডুবি থেকে শিক্ষা? নতুন পথ খুঁজতে নিচুতলার কর্মীদের নিয়ে সম্মেলন সিপিএমের]

শম্পা জানান, বছর দুয়েক হলো তিনি ক্যাব চালাচ্ছেন। তাই দিন রাত স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখেই গাড়ি ছোটান। সংসারে বিশেষ সময় দেওয়া হয় না। বাড়ির কাছেই থাকেন তাঁর দিদি। বেশিরভাগ দিনই তিনিই দেখেন মেয়েকে। অনেক দিন হয়েছে বাড়িতে রান্না চড়েছে। ফোন এসেছে, বেরিয়ে যেতে হয়েছে পেশেন্ট নিয়ে। দিদি এসে তখন সামাল দিয়েছেন। করোনা রোগী নিয়ে গাড়ি চালান ভয় লাগে না? বললেন, “পিপিই পড়া থাকি। আর সতর্ক থাকি। সবাই যদি ভয় পাই তাহলে দেখবে কে এই রোগীদের! তাঁদেরও তো হাসপাতালে পৌঁছাতে হবে। জিততে আমাদের হবেই। তাইতো আমার ফোনে বাজে আমরা করবো জয় নিশ্চয়।” কথা শেষ না করেই বললেন, “আগে ফোনে বাজেতো চেহেরা কেয়া দেখতে হো, দিল মে উতর কর দেখো না! মাস দুয়েক হল তা বদলেছি।” সিটু অনুমোদিত আপ ক্যাব সংগঠন এই কোভিড রোগীদের আনা নেওয়া করছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস কে মানু বলেন, ” আমাদের ইউনিয়নে ৩০০ গাড়ি কোভিড রোগী নিয়ে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে দুজন মহিলা চালক আছে। অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে তারা আজ কাজ করছেন। তাদের আমরা কুর্নিশ জানাই।”

Advertisement

দেখুন ভিডিও: 

[আরও পড়ুন: আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়ল না রাজ্য, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ