Advertisement
Advertisement

চন্দ্রবোড়া থেকে কাঁকড়াবিছে, খেলে চিরন্তনের হাতে

গবেষণায় চিরন্তন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক৷

Young Chirantan plays with snakes and reptiles
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:September 6, 2016 11:15 am
  • Updated:June 13, 2022 4:15 pm

আকাশনীল ভট্টাচার্য: অনায়াসে হাত দিয়ে ধরে ফেলতে পারে চন্দ্রবোড়া, কেউটে, দাঁড়াশ৷ কাকড়াবিছে হাতের চেটোয় নিয়ে ঘোরাফেরা করে৷ গিরগিটি দু’হাতে অবলীলায় চলে বেড়ায়৷ বোলতা, ভীমরুলের মতো বিষাক্ত কীটপতঙ্গ নিত্যসঙ্গী৷ বছর পনেরোর চিরন্তনের বন্ধু বলতে ওরাই৷ যাদের দেখলে লাঠি নিয়ে মারতে কালবিলম্ব করে না গৃহস্থ, অথচ তারাই খেলার সাথী, গবেষনার কেন্দ্রবিন্দুতে চিরন্তনের৷

চিরন্তন চট্টোপাধ্যায়৷ বাড়ি সোদপুর ঘোলা নাটাগড় গৌরাঙ্গনগরে৷ মধ্যমগ্রাম বয়েজ হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র৷ মাত্র দেড় বছর বয়সেই কীটপতঙ্গ নিয়ে নাড়াচাড়া করতে শুরু করে৷ আর এখন সাপ, কাঁকড়াবিছে থেকে বিষাক্ত কীটপতঙ্গ চিরন্তনের সারাদিনের সঙ্গী৷ চিরন্তনের বাবা কলকাতার একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মচারী দেবাশিসবাবু জানালেন, “মুর্শিদাবাদে ছিলাম৷ তখন চিরন্তনের বয়স মাত্র দেড় বছর৷ ওই বয়স থেকেই ওকে দেখেছি, পোকামাকড় নিয়ে খেলা করতে৷ আমরা ভয় পেতাম৷ যদি সেগুলি কামড়ে দেয়৷ আর আজ তো সরীসৃপ-কীটপতঙ্গরা চিরন্তনের কথায় ওঠবস করে৷” ছোটবেলা থেকেই চিরন্তন কীটপতঙ্গ ধরে ঘরে রাখত৷ আর সেগুলি নিয়ে তার গবেষণা৷ ঘোলার বাড়িতে গিয়ে দেখা গিয়েছে, মানুষ-সরীসৃপ-কীটপতঙ্গের সহাবস্থান৷ কন্টেনারে করে ধরা রয়েছে বিষাক্ত সাপ৷ ২০১৫ সালে ওড়িশায় গিয়ে তিনটে গিরগিটি ধরেছিল চিরন্তন৷ সেগুলিও ঘোলার বাড়িতে নিয়ে আসে সে৷ গত ২৬ আগস্ট এলাকা থেকেই ছয় ফুটের একটি চন্দ্রবোড়া সাপ ধরেছে বছর পনেরোর এই পড়ুয়া৷ পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাপ, কাঁকড়াবিছে, বোলতা, ভীমরুল, কাঠপিঁপড়ে, গিরগিটি, শামুক-সহ একাধিক কীটপতঙ্গের গতিবিধি পর্যালোচনা করে চিরন্তন৷ কীভাবে ডিম পাড়ে, বাচ্চা প্রসব করে, কীভাবে বাচ্চারা বড় হয়, সরীসৃপ-কীটপতঙ্গদের বেড়ে ওঠা–তা নিয়েই গবেষণা চিরন্তনের৷ সে জানিয়েছে, “সরীসৃপ-কীটপতঙ্গরা কীরকম পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে৷ কী খায়৷ কীভাবে বংশবৃ‌দ্ধি করে, তাই নিয়ে গবেষণা করতে আমার ভাল লাগে৷” যে তথ্য পাওয়া যায় তা লিপিব করে চিরন্তন৷ ইণ্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে হাতে-কলমে করা পরীক্ষাও মিলিয়ে নেয় সে৷ বাড়িতে মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করেছে চিরন্তন৷ ভবিষ্যতেও সরীসৃপ-কীটপতঙ্গদের নিয়ে আরও গবেষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে তার৷ চিরন্তনের বাবা দেবাশিসবাবু ও মা পাপিয়াদেবী দু’জনই জানিয়েছেন, ছেলের এই কর্মকাণ্ডে আমরা ভীত নই৷ গর্বিত৷ ছেলে যাতে আরও গবেষণা করতে পারে, তার জন্য সর্বতোভাবে সাহায্য করা হবে৷ দেবাশিসবাবু জানিয়েছেন, ছেলে পুজোয় জামা-কাপড় চায় না৷ বরং পোকামাকড় এনে দিলে ভীষণ খুশি হয়৷ পরিবার-প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বিরল গবেষণা৷ আর এই গবেষণায় চিরন্তন দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক৷

Advertisement

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ