অভিরূপ দাস: ষাটে অবসর সরকারি চাকরিতে। উনষাটে জীবন থেকে। ‘ইন্টারন্যাশনাল কনজেসটিভ হার্ট ফেলিওর স্টাডি’র সমীক্ষায় উঠে এসেছে এমনই তথ্য। কীভাবে? সম্প্রতি হৃদরোগ নিয়ে একটি সমীক্ষা চালিয়েছে এই আন্তর্জাতিক সংস্থা। সে সমীক্ষা বলছে প্রতিবছরই ভারতের ২০ লক্ষ মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হন। আক্রান্ত হওয়া মানুষদের গড় বয়স মাত্র ৫৯। মৃত্যুকালে গ্ল্যামার গার্ল শ্রীদেবীর বয়স হয়েছিল ৫৪। সমীক্ষা অনুযায়ী, এমন কিছু তাড়াতাড়ি মারা যাননি তিনি।
শহরের খ্যাতনামা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সুকুমার মুখোপাধ্যায় সমর্থন জানিয়েছেন এহেন তথ্যে। তাঁর কথায়, দ্রুত লাইফস্টাইলই ক্রমশ মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে মানুষকে। তবে শুধু ফাস্টফুড নয়, হৃদরোগের কারণ হিসেবে আরও বেশকিছু তথ্য দিয়েছেন তিনি। ডাঃ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “অতিরিক্ত মাত্রায় মদ্যপান। ওবেসিটি বা স্থূলতা। ধূমপানেও বিপদ ডেকে আনছে। চাকরি থেকে অবসরের আগেই জীবন থেকে অবসর নিতে হচ্ছে চিরতরে।”
[নয়া সমীক্ষায় চমক! আপনজনের চেয়েও স্মার্টফোনকে বেশি ভালবাসেন ভারতীয়রা]
শহরের আরেক এক মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন, নয়া প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা বোহেমিয়ান লাইফে বিশ্বাসী। পিৎজা, বার্গার, ফ্রেঞ্চ ফ্রাইয়ে মজে সকলে। এই সমস্ত ফাস্ট ফুডেই লুকিয়ে শরীরের শত্রু। কী সেই শত্রু? অরিন্দম বিশ্বাস জানিয়েছেন, “ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাট আদতে হাইড্রোজেনেটেড অয়েল। এই ফ্যাটই রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। হার্টের হাজারও অসুখের বীজ এই ট্রান্স ফ্যাট।” করোনারি হার্ট ডিজিজ থাকলেও হৃদরোগের সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। অরিন্দম বিশ্বাসের পরামর্শ, রোজকার জীবনযাত্রায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনলেই সুস্থ সবল থাকা যায়। যেমন? “নিয়মিত যোগব্যায়াম করতে হবে। ফাস্ট ফুড, ঠান্ডা পানীয় খাওয়া কমাতে হবে।” কোনও রকম এক্সারসাইজ না করলে চল্লিশে রেড মিট খেতে বারণ করছেন সুকুমার মুখোপাধ্যায়ও। তবে এত কিছুর পরেও হৃদরোগের আশঙ্কা কমে না। পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস থাকলে বুকে আচমকা ব্যথা হতেই পারে। মাঝরাতে আচমকাই পাশের মানুষটা হৃদরোগে আক্রান্ত হলে বাঁচানো যাবে কেমন করে? এমন প্রশ্ন আকছার ওঠে জনমানসে।
[ব্রকলি আর কড়াইশুঁটির এত গুণ আগে জানতেন?]
পালমোনোলজিস্ট আলোকগোপাল ঘোষাল জানিয়েছেন, আচমকাই যদি কেউ হৃদরোগে আক্রান্ত হন তাঁকে তৎক্ষনাৎ কিছু শুশ্রূষা করতে হয়। হয়তো এমন শুশ্রূষায় বেঁচে যেতে পারতেন শ্রীদেবীও। কী সেই ঘরোয়া চিকিৎসা? “চিকিৎসা পরিভাষায় একে বলে সিপিআর বা কার্ডিও পালমোনারি রিসাসসিটেশন। আক্রান্ত ব্যক্তির মুখে মুখ দিয়ে কৃত্রিমভাবে শ্বাস প্রশ্বাস চালু রাখতে হবে। দু হাত জড়ো করে বুকের মধ্যে পাম্প করতে হবে।” অনেক ক্ষেত্রেই আক্রান্তকে এভাবে বাঁচানো গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাঃ ঘোষাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.