Advertisement
Advertisement

ধূমপান বন্ধ করার সময় কি চলে এসেছে?

ক্লিক করে মিলিয়ে নিন লক্ষণগুলো! একটাও মিললে এখনই ধূমপান ছেড়ে দিন! নইলে ক্যানসার অনিবার্য!

Are You Prone To Throat Cancer? Checdk These Points And Stay Fit
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 3, 2016 10:05 am
  • Updated:December 3, 2016 10:05 am

জিনিয়া সরকার: বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে মোট ক্যানসার রোগীর সংখ্যা ৩-৪ লক্ষ৷ যার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি মুখ ও গলার ক্যানসারে আক্রান্ত৷ এই ধরনের ক্যানসারের জন্য দায়ী জীবনযাপন ও দৈনন্দিন কিছু অভ্যাস৷ বিশেষ করে ধূমপান বা অন্য তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার। আসলে সব বুঝেও যে অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসা কঠিন! কিন্তু বেরোতেই হবে৷ না হলে মুখগহ্বরে কর্কটের থাবা থেকে বাঁচা দুষ্কর৷

অভ্যাসই রোগের মূল:
মুখ ও গলার ক্যানসারের কারণ হিসাবে দেখা গিয়েছে, ৯১ শতাংশ ক্ষেত্রেই তামাক জাতীয় দ্রব্যই দায়ী৷ ধূমপান, জর্দা, খইনি, নস্যি, গুটখা জাতীয় দ্রব্যের ব্যবহার অনেকেই করেন৷ মুখগহ্বরের অস্বাস্থ্যকর অবস্থা যদি দীর্ঘদিন ধরে থাকে, তা থেকেও হতে পারে ক্যানসার৷ দাঁতভাঙা থাকলে যদি দীর্ঘসময় ধরে জিহ্বায় ঘা হয়, গালে দাঁত লেগে তা থেকে ঘা হয়েও দেখা দেয় ক্যানসার৷ লাল লঙ্কা খাওয়ার অভ্যাস থেকেও দেখা দিতে পারে এই সমস্যা৷ অ্যালকোহলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি থাকলেও ওরাল ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১০ গুণ বেড়ে যায়৷

Advertisement

পূর্বলক্ষণ:
১) দীর্ঘদিন সিগারেট, গুটখা খেলে মুখগহ্বরের বিভিন্ন্ কোষের মধ্যে নানা পরিবর্তন দেখা যায়৷ যা থেকে ঘা ও রক্তক্ষরণ শুরু হয়৷ সাধারণ ঘা এক থেকে দু’সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়৷ কিন্তু এক্ষেত্রে সারতে চায় না৷ মুখে দুর্গন্ধ হয়৷ ব্যথা বাড়ে৷
২) দীর্ঘদিন তামাকদ্রব্যের ব্যবহারের ফলে মুখের মধ্যে সাদা-কালো দাগ দেখা যায়৷ যা প্রি-ক্যানসার৷ এই লক্ষণ দেখা যাওয়ার পরও যদি ৪-৫ বছর একই অভ্যাস চালিয়ে যাওয়া হয় সেক্ষেত্রে ক্যানসারের সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে৷
৩) মুখ খুলতে বা হাঁ করতে খুব সমস্যা হয়৷ হাঁ ছোট হয়ে যায়৷ যাকে বলা হয় সাবমিউকাস ফাইব্রোসিস৷

Advertisement

কখন আশঙ্কা:
যদি মুখে ঘা বা আলসার থেকে রক্তক্ষরণ হয়, তবে তা চিন্তার বিষয়৷ মুখে দুর্গন্ধ, খেতে অসুবিধা, হাঁ করতে কষ্ট, সারাক্ষণ মনে হবে মুখের মধ্যে কিছু আটকে আছে, পরের দিকে জিহ্বায় ব্যথা বাড়া, কথা বলতেও কষ্ট হওয়া৷ এরকম হলে এবং মুখের ঘা এক-দেড় মাসেও না কমলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷

শরীরের কোন অংশে বেশি প্রভাব:
জিহ্বা, ঠোঁট, মুখ বা গালের ত্বক, মুখের তালু, মাড়ি – যে কোনও জায়গা ক্যানসারে আক্রান্ত হতে পারে৷ তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জিহ্বায় এই ক্যানসারের থাবা বেশি পড়ে৷ তা থেকে গলায় ছড়ায়৷

জরুরি টেস্ট:
যে কোনও ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রেই মূল টেস্ট বায়োপসি৷ এক্ষেত্রেও মুখের ঘা থেকে মাংসের টুকরো নিয়ে টেস্ট করে দেখা হয়৷ ধরা পড়লে সিটি স্ক্যান, এমআরআই করে দেখা হয় কোন স্টেজে ক্যানসার আছে৷ মুখের ক্যানসার সবসময়ই খুব দ্রুত গলায় ছড়িয়ে যায়৷ গলার লিম্ফনোডে বা গ্ল্যান্ডে ছড়িয়ে যায়৷ তাই গলায় ব্যথাহীন মাংসপিণ্ড দেখা গেলে এবং চিকিৎসা করে না কমলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷ প্রয়োজনে দরকার গলার গ্ল্যান্ডের নিডল বায়োপসি৷ ক্যানসার প্রমাণিত হলে সেইমতো চিকিৎসা জরুরি৷

বদল চাই:
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় তামাক দ্রব্যের ব্যবহার নেই, তাও এই ক্যানসারে আক্রান্ত৷ মুখগহ্বরের অপরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি অস্বাভাবিক যৌন সংসর্গও দায়ী৷ যা থেকে জন্ম নেয় হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি ভাইরাস৷ জিহ্বার পিছন দিকে টনসিল, অর্থাৎ মুখগহ্বরের পিছনের অংশে এই ভাইরাস জন্মায়৷ যা থেকে ইনফেকশন হয়ে ক্যানসার হয়৷ দায়ী ওরাল সেক্স৷ বর্তমানে এদেশের অল্পবয়সিদের মধ্যে এই কারণের জন্য ওরাল ক্যানসার বেশি হচ্ছে৷

সুরক্ষা কবচ:
১)
তামাক থেকে দূরে থাকুন৷ মুখগহ্বর সবসময় পরিষ্কার রাখুন৷
২) তামাক, অ্যালকোহল একসঙ্গে সেবন অভ্যাস অবশ্যই ছাড়ুন৷
৩) দীর্ঘদিন ধরে মুখে সংক্রমণ থাকলে সতর্ক হোন৷
৪) দাঁতে ক্ষত থাকলে ফেলে না রেখে তার চিকিৎসা জরুরি৷
৫) এই ক্যানসার এড়াতে দিনে দু’বার অবশ্যই দাঁত মাজুন৷ খেয়ে মুখ ভাল করে ধুতে হবে৷

আরও জানতে যোগাযোগ করুন: ডা. গৌতম মুখোপাধ্যায়, সার্জিক্যাল অঙ্কোলজিস্ট, 9051977539। অথবা পড়ুন epaper.sangbadpratidin.in

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ