BREAKING NEWS

১৭ চৈত্র  ১৪২৯  শনিবার ১ এপ্রিল ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

একটি বাড়তি ডোজ নিলেই করোনার বিরুদ্ধে আজীবন ইমিউনিটি! দাবি ভারত বায়োটেকের

Published by: Arupkanti Bera |    Posted: April 28, 2021 4:22 pm|    Updated: April 28, 2021 6:32 pm

Bharat Biotech claims one extra dose can give lifetime immunity against corona । Sangbad Pratidin

গৌতম ব্রহ্ম: করোনার (Corona Virus) বিরুদ্ধে আজীবন ইমিউনিটি! এমনই সম্ভাবনার কথা শোনাল ভারত বায়োটেক (Bharat Biotech)। সংস্থার দাবি, তাদের তৈরি কোভ্যাকসিনের একটি বাড়তি ডোজ (তৃতীয় ডোজ) নিলেই করায়ত্ত হবে লাইফটাইম ইমিউনিটি।

সোমবার তামিলনাড়ুর এসআরএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভ্যাকসিনের তৃতীয় বুস্টার ডোজ দেওয়া হয় সাত জনকে। যাঁরা ৬০ দিন আগে কোভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, এই পর্বে মোট ১৯০ জনের শরীরে প্রবেশ করানো হবে তৃতীয় ডোজ। তারপর বিভিন্ন মার্কার দিয়ে মাপা হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।

বর্তমানে বিশ্বজুড়ে যত টিকা আছে তার প্রায় সবই দুই ডোজের। প্রথম ডোজ নেওয়ার ২৮ দিন পর কোভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়। কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে যা ছ’ সপ্তাহ পর। এবার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ৬০ দিন পর তৃতীয় ডোজ দেবে ভারত বায়োটেক। তাদের দাবি, কোভ্যাকসিনের এই তৃতীয় ডোজ লাইফটাইম ইমিউনিটি তৈরি করে দেবে।

যদিও এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভাইরোলজিস্টরা। তাঁদের বক্তব্য, “নিষ্ক্রিয় ভাইরাসে তৈরি ভ্যাকসিনে আজীবন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করা খুব মুশকিল।” ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার জানিয়েছেন, অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব নির্ভর করে মেমরি বি লিম্ফোসাইটের হাফ লাইফ—এর উপর। এই হাফ লাইফ আবার নির্ভর করে অ্যান্টিজেনের উদ্দীপ্ত করার ক্ষমতার উপর। গোটা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হয় ডেনড্রাইটিক কোষের মাধ্যমে, যা থাকে লিম্ফয়েড টিস্যুর জার্মিনাল সেন্টারের মধ্যে। সিদ্ধার্থবাবুর দাবি, নিষ্ক্রিয় ভাইরাসের উদ্দীপ্ত করার ক্ষমতা কম। এমন কোনও ইনঅ্যাক্টিভেটেড ভ্যাকসিন নেই যা জীবনভর সুরক্ষা দিতে পারে। যেমনটা পারে লাইভ অ্যাটিনিউয়েটেড ভাইরাল ভ্যাকসিন (মিজলস, পোলিও)। তবে বুস্টার ডোজ দিয়ে অ্যান্টিবডির স্থায়িত্বকাল বাড়ানো যেতেই পারে।

[আরও পড়ুন: অবশেষে খোঁজ মিলল! কেন্দ্রীয় বাহিনীকে চরকি পাক খাইয়ে তারাপীঠ মন্দিরে অনুব্রত]

১৬ জানুয়ারি ভারতে জরুরি ভিত্তিতে ছাড়পত্র দেওয়া হয় দু’টি টিকাকে। অ্যাস্ট্রেজেনেকার কোভিশিল্ড ও ভারত বায়োটেক ও আইসিএমআর—এর যৌথ উদ্যোগে তৈরি কোভ্যাকসিনকে। ১৬ জানুয়ারি থেকে টিকাকরণ শুরু হয়। প্রথমদিকে কোভিশিল্ডের চাহিদা বেশি হলেও পরে কোভ্যাকসিনের চাহিদাও বাড়তে থাকে। জানা যায়, ৮১ শতাংশ কার্যকারিতা রয়েছে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই টিকার। তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল রিপোর্ট এখনও কোনও মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত হয়নি। তারই মধ্যে তৃতীয় ডোজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। ট্রায়ালকারী সংস্থার দাবি, কোভ্যাকসিন সম্পূর্ণ নিরাপদ। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। সব দিক বিবেচনা করেই তৃতীয় ডোজ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ট্রায়াল সফল হলে জীবনভর মুক্তি মিলবে করোনা থেকে।

[আরও পড়ুন: ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি, আমজনতাকে সতর্ক করতে এবার লাঠিহাতে রাস্তায় বধূরা]

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ঝাপটায় দিশেহারা দেশ। রাজ্য়েও বল্গাহীন সংক্রমণ। মঙ্গলবার দৈনিক সংক্রমণ ১৬ হাজার পেরিয়ে গিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতু্য হয়েছে ৭৩ জনের। দুর্বার গতিতে বাড়ছে কলকাতার সংক্রমণ। তাৎপর্যের বিষয় হল, টিকা নিয়েও ভারতে বহু মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। আইসিএমআর জানিয়েছে, প্রতি ১০ হাজার টিকা গ্রহীতার মধ্যে চার জন করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। ভাইরোলজিস্টদের মতে, টিকা নেওয়ার পর মানবদেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডি দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে না। তাই সংক্রমণ হচ্ছে। অ্যান্টিবডির স্থায়িত্ব বাড়াতেই তৃতীয় ডোজ দেওয়ার পরিকল্পনা। এমনটাই মনে করা হচ্ছে। তবে জীবনভর সুরক্ষার দাবি নিয়ে প্রশ্ন ইতিমধ্যেই উঠতে শুরু করেছে।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে