Advertisement
Advertisement

Breaking News

Nephrotic Syndrome

ঘুম থেকে উঠলেই শিশুর চোখ-মুখ ফুলে ওঠে? অ্যালার্জি ভেবে ভুল করবেন না

সমস্যা মারাত্মক হতে পারে।

Know about Nephrotic Syndrome in Children | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:May 10, 2023 9:00 pm
  • Updated:May 10, 2023 9:11 pm

ঘুম থেকে উঠলেই শিশুর চোখ-মুখ ফুলে ওঠে? অ্যালার্জি ভেবে ভুল করবেন না। শরীর থেকে প্রোটিন বেরিয়ে গেলেও কিন্তু এমন হয়। শিশুদেরই সম্ভাবনা বেশি। তাই কখন সচেতন হতে হবে জানালেন পিয়ারলেস হসপিটালের পেড্রিয়াটিক নেফ্রোলজিস্ট ডা. শুভঙ্কর সরকার। তাঁর কথা শুনলেন মৌমিতা চক্রবর্তী।

শরীরে নানা কারণে জল জমতে পারে। তেমনই কিডনির অসুখেও শরীরে জল জমে। আসলে, কোনও গুরুতর অসুখে কিডনি যদি সঠিকভাবে পরিস্রাবণের কাজ না করতে পারে তবে শরীরে জল জমে নেফ্রোটিক সিনড্রোম (Nephrotic Syndrome) হয়। এটি একটি রোগ ও রোগের লক্ষণও। বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও এতে আক্রান্ত হয়।

Advertisement

কী এই বিশেষ সিনড্রোম
সাধারণ কথায় নেফ্রোটিক সিনড্রোমের অর্থ হল শরীরের ফোলাভাব। এক্ষেত্রে সকালে ঘুম থেকে উঠে চোখ ফুলে যাওয়া দিয়ে শুরু হয়, ধীরে ধীরে সমস্ত শরীরে জল জমে ফুলে ওঠে। দেশে বর্তমানে ১ লক্ষ শিশুর মধ্যে গড়ে ১৫-১৬টি শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয় এবং মেয়েদের তুলনায় ছেলেরা বেশি আক্রান্ত হয়।

Advertisement

fat-child

কারণ কিছু তো আছে
প্রস্রাবের সঙ্গে শরীর দিয়ে প্রোটিন বা অ্যালবুমিন বেরিয়ে যাওয়ার জন্য এই রোগ হয়। সঙ্গে কোলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া ও ইনফেকশনের কারণে নেফ্রোটিক সিনড্রোম হলে শরীর ফুলে যেতে পারে। প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। আমাদের শরীরে কোনও প্রকার ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করলে তাদের নাশ করতে শরীর নিজে বিভিন্ন মলিকিউল তৈরি করে নেয়। এতে জীবাণুরা শেষ হলেও নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ক্ষতি হয়ে যায় যাকে ইনফ্লামেশন হাইপোথিসিস বলে। এর ফলে কিডনির ফিল্টারে ছাঁকনির মতো অংশের ছিদ্রগুলোর আকার বড় হয়ে যায় এবং সহজেই অ্যালবুমিনের মতো প্রোটিন সমূহ প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসে।

[আরও পড়ুন: সত্তরেও পেতে পারেন তুমুল যৌন আনন্দ, কেবল এই কথাগুলি মেনে চললেই কেল্লাফতে]

তাছাড়া আমাদের কিডনির ফিল্টার অনেকগুলো প্রোটিন মলিকিউল দিয়ে তৈরি হয়। কোনও জিনগত ত্রুটির কারণে কিডনির ফিল্টারের গঠনগত সমস্যা হলে ফিল্টার দিয়ে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই নেফ্রোটিক সিনড্রোমের সূত্রপাত হয়। মানুষের গৃহীত খাদ্য থেকে লিভার অ্যালবুমিন তৈরি করে। প্রত্যেকটি মানুষের শরীর থেকে অল্পবিস্তর অ্যালবুমিন প্রস্রাবের মাধ্যমে এমনিই নির্গত হয়, যাতে তেমন কোনও অ্যালবুমিনের ঘাটতি হয় না।

কিন্তু যাদের নেফ্রোটিক সিনড্রোম হয় তাদের কিডনি দিয়ে যতটা পরিমাণ অ্যালবুমিন নির্গত হয়ে যায়, লিভার ততটা পরিমাণ অ্যালবুমিন তৈরিতে ব্যর্থ হয়। ফলে রক্তে পরিমাণের চেয়ে অ্যালবুমিন কমতে শুরু করে। অন্যদিকে অ্যালবুমিনের প্রধান কাজ রক্তের সঙ্গে জলের পরিমাণ বজায় রেখে রক্ত তরল রাখা। অ্যালবুমিনের অস্বাভাবিক নিঃসরণে জল রক্তনালি থেকে বেরিয়ে চোখের পাতা, পেট ও পায়ের পাতায় জমতে শুরু করে।  ফলে রক্ত গাঢ় হয়ে জমাট বাঁধতে থাকে ও শরীর ফুলতে শুরু করে। কিডনি রক্তে জলের ঘাটতির ব্যাপারে জানান দেয় এবং প্রস্রাব উৎপন্ন করে না। তখন রোগী যতটা পরিমাণ জল পান করে ততটাই শরীরে জমে শরীর ফুলতে শুরু করে।

কীভাবে সচেতন হবেন
নেফ্রোটিক সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের খাদ্যাভ্যাস ও ডায়েটের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রস্রাবের মাধ্যমে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়ায় শরীরে প্রোটিনের পরিমাণ কমে যায় তাই বেশি করে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। যেমন মুরগি ও হাঁসের ডিমের সাদা অংশ রোজ ২-৩টে খেতে পারে। কিন্তু কুসুমে কোলেস্টেরল থাকায় হলুদ অংশ বাদ দিয়ে খেতে হবে। ছোট মাছ, মুরগির মাংস, যে কোনও ধরনের ডাল, সয়াবিনে প্রচুর প্রোটিন থাকে যা এই রোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য ভীষণ উপকারী।

খাবারে নুন বেশি থাকলে প্রোটিন বেরতে শুরু করলে শরীর খুব তাড়াতাড়ি ফুলে যায় তাই নুন একেবারে কম খাওয়া বাঞ্ছনীয়। কোলেস্টেরল শরীরে বেশি থাকায় বাইরের তৈলাক্ত খাবার, তেলেভাজা খাওয়া অনুচিত। যে কোনও ইনফেকশন থেকে এই রোগ আবার হতে পারে সুতরাং রাস্তার ধারে খোলা, অপরিষ্কার ও প্যাকেট খোলা খাবার খাওয়া অনুচিত, স্কুলে টিফিন খাওয়ার সময় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে এমনকী, সবুজ শাকসবজিও ভাল করে ধুয়ে খেতে হবে যাতে বাইরের অহেতুক কোনও ইনফেকশন শরীরে প্রবেশ করে না করে।
জলপানের ক্ষেত্রে শিশুর বারংবার রোগটি ফিরে এলে চিকিৎসকরা শরীরের ওজন হিসাব করে জলের পরিমাণ নির্ধারণ করেন। কিন্তু প্রোটিন না বেরিয়ে যথাযথ থাকলে সাধারণ মানুষের সমান জল খাওয়া যায়।

ন্যূনতম অবহেলা ও সচেতনতার অভাবে সাংঘাতিক হতে পারে, ইনফেকশন বেড়ে গিয়ে সেপসিস হয়ে প্রাণসংশয় দেখা দিতে পারে। কিন্তু যৌবন আসার আগে পর্যন্ত নিয়মিত ইউরিনের মাত্রা পরীক্ষা করতে হবে ও সতর্ক থাকতে হবে। বর্তমানে বিভিন্ন আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা, নতুন ধরনের ওষুধের প্রয়োগ করা হচ্ছে। ফলে ১৪-১৫ বছর বয়সের পর ৯০-৯৫ শতাংশ শিশু সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে এমনকী, অনেক জটিল নেফ্রোটিক সিনড্রোমের ঘটনাকেও সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে আধুনিক চিকিৎসার দ্বারা।

[আরও পড়ুন: যৌনতা উপভোগ করার পরও দিব্যি ফিরে পেতে পারেন কুমারীত্ব! খরচ সাধ্যের মধ্যেই]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ