Advertisement
Advertisement
Cirrhosis of liver

লিভার সিরোসিসের সত্যিই কি কোনও ওষুধ নেই? বিস্তারিত জানালেন শহরের বিশিষ্ট চিকিৎসক

লিভারের সমস্যা এক্কেবারেই হালকা ভাবে নেবেন না কিন্তু!

Kolkata doctor gave important about liver function and cirrhosis of liver | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:September 23, 2021 6:14 pm
  • Updated:January 21, 2022 10:58 pm

লিভার সিরোসিস মানেই কি জীবন শেষ? সত্যিই কি এর কোনও ওষুধ নেই? কোনটা মিথ আর কোনটা বাস্তব, তা বিশ্লেষণ করে সাবধান করলেন মেডিক্যাল কলেজের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজিস্ট ডা. কে. ডি বিশ্বাস। শুনলেন কোয়েল মুখোপাধ্যায়।

শরীরের অতি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির মধ্যে অন্যতম লিভার তথা যকৃৎ (Liver)। অথচ সেই লিভারের সিরোসিসের ঘটনা আকছারই ঘটছে। কী এই অসুখ? এটি লিভারের এমন একটি অবস্থা, যেখানে একইসঙ্গে ভাঙা এবং গড়ার চলে। লিভার সিরোসিসে গড়ার কাজ ব্যাহত হয়ে, ভাঙাটাই বেশি চলে। আরও সরল করে বললে- লিভারের নমনীয়তা এবং স্থিতিশীলতা কমে এসে, সেটি কঠিন হয়ে যায়। নোডিউল তৈরি হয়। লিভারের মধ্যে দানা দানা জিনিস তৈরি হয়, যার আকার প্রথমে খুব ছোট থাকে কিন্তু পরে বাড়ে।

Advertisement

নেপথ্যে কী?
প্রধান তিনটি ‘কমন’ কারণ অ্যালকোহল, হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি। আরেকটি কারণ হল, ‘ন্যাশ রিলেটেড সিরোসিস’। আসলে ফ্যাটি লিভারের পরের স্টেজ হল ন্যাশ মানে ‘নন অ্যালকোহলিক স্টিয়াটো হেপাটাইটিস’। তার পর ফাইব্রোসিস, সিরোসিস। পঞ্চম ক্ষেত্রে কারণ বোঝা যায় না, একে বলে ক্রিপ্টোজেনিক সিরোসিস। আরও একটি কারণ উইলসন ডিজিজ, এটা শিশুদের বংশগত রোগ।

Advertisement

 

ওষুধ নেই-
লিভার সিরোসিস হয়েছে মানেই জীবনের আশা শেষ, তা নয়। তবে রোগের ‘বর্তমান পরিস্থিতি ও ঝুঁকি’ বুঝতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সে অর্থে আক্রান্তের কোনও উপসর্গ নেই। তিনি ১০-১৫ বছর ধরে আক্রান্ত থাকা সত্ত্বেও তার অবস্থা আরও অবনতি হচ্ছে না। এটা হল কমপেনসেটেড সিরোসিস। মানে সিরোসিসের সমস্যা থাকলেও শরীর সেটাকে এখনও মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। তাহলে মুশকিল কাদের হয়? উত্তর ডিকমপেনসেটেড সিরোসিসে। এর লক্ষণ পেটে জল হওয়া (উদরি), রক্তবমি, জন্ডিস আর কোনও ম্যালিগন্যান্সির আশঙ্কা। লিভার সিরোসিস থেকে ভবিষ্যতে ক্যানসার হতে পারে। তবে যেহেতু সিরোসিস থেকে অনেক সময় লিভারের ক্যানসারও হয়, তাই একে ঠেকানোর জন্য, যেখানে প্রযোজ্য সেখানে হেপাটাইটিস বি এবং হেপাটাইটিস সি-এর চিকিৎসা দরকার।

হ্যাঁ, এই কথাটা ঠিক কিছুটা হলেও সত্যি যে, লিভার সিরোসিসের কোনও ওষুধ নেই। ভিটামিন এবং ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট দেওয়া হয়। কিন্তু হেপাটাইটিস বি-র জন্য যদি কারও সিরোসিস
হয়, তার ওষুধ দেওয়া হয়। হেপাটাইটিস সি-র ক্ষেত্রেও ওষুধ দেওয়া হয়। মদ্যপানে আসক্ত কারও যদি সিরোসিস হয়, আর তিনি যদি তারপর অ্যালকোহল সেবন বন্ধ করেন, তখন ক্যানসারের ঝুঁকি কিছুটা কমে।

[আরও পড়ুন: করোনার পর নতুন আতঙ্ক, হাভানা সিনড্রোম! কী এর উপসর্গ?]

নজর খাদ্যে-
সিরোসিসের রোগীদের প্রধান শত্রু হল নুন, বিশেষ করে যাঁদের পেটে-পায়ে জল আছে। তাই নুনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ৪ গ্রামের বেশি দেওয়া অনুচিত। এবার, বাইরে থেকে নুন দেওয়া না হলেও, ভাত-তরকারির সঙ্গে ২ গ্রাম নুন শরীরে ঢোকেই। মানে সল্ট ফ্রি ডায়েট হলেও। আর রান্নায় অল্প নুন দিলে, শরীরে যায় ৪ গ্রাম। ওইটুকুই যথেষ্ট। রোগীর পেট, পা ফোলা না থাকলে জলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা হয় না। তবে ফোলা থাকলে, নিয়ম হল-কারও প্রস্রাবের পরিমান ১ লিটার হলে শীতে সে পান করবে ১.৫ লিটার আর গরমে ২ লিটার জল। লিভারের রোগীর ক্ষেত্রে প্রোটিন খুব জরুরি। হাই প্রোটিন ডায়েট দেওয়া হয়। ১.৫-২ গ্রাম, পার কেজি বডি ওয়েট দেওয়া যেতে পারে। উদ্ভিজ্জ প্রোটিন দেওয়াই ভাল।

 

কখন ট্রান্সপ্ল্যান্ট?
সিরোসিসের কোন স্টেজে গিয়ে লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট জরুরি, তা চিকিৎসকই বাতলে দেবেন। তবে ট্র‌্যান্সপ্ল্যান্ট আজকাল সরকারি, বেসরকারি-সব হাসপাতালেই হচ্ছে এবং সফলভাবেই হচ্ছে। লাইভ রিলেটেড ডোনারই বেশি নেওয়া হয়। কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের মতো লিভার ডোনার নির্বাচন প্রক্রিয়া, লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের ক্ষেত্রে অতটা জটিল নয়। তবে ডোনারকে সুস্থ হতে হবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অস্ত্রোপচারের পর মানুষ সুস্থভাবে, বহুদিন বেঁচে থাকতে পারেন।

প্রতিরোধ করতে কী করবেন? 
যাঁদের হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন নেওয়া নেই বা হেপাটাইটিস বি রোগ হয়নি তাঁদের এই ভ্যাকসিন নিয়ে নেওয়া ভাল। এটি লিভার সিরোসিস অসুখ অনেকটাই প্রতিহত করতে পারে।
অ্যালকোহল বর্জন জরুরি। ডায়াবেটিসও নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

[আরও পড়ুন: Skin Care Tips: টাইট অন্তর্বাস অত্যন্ত বিপজ্জনক, হতে পারে বড় বিপদ, এড়াবেন কীভাবে?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ