Advertisement
Advertisement

Breaking News

পেটের রোগের সবচেয়ে বড় শত্রু দূষিত জল!

সাবধান! পাকস্থলী ক্যানসারের প্রকোপ বর্তমানে খুব বাড়ছে।

Polluted water is responsible for stomach problems
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:February 28, 2018 8:00 pm
  • Updated:September 16, 2019 12:23 pm

জল পানেও রোগ হয়। পেটের দুই শত্রু দূষিত জল ও মদ। অভ্যেস বদলান, ভাল থাকবেন। জটিল অসুখের উৎপত্তির কথা জানাচ্ছেন বিশিষ্ট গ্যাস্ট্রোএনটেরোলজিস্ট ডা. অশোকানন্দ কোনার।

মা-মাসিদের মুখে শুনে থাকবেন, কলকাতার বাইরে গেলে না কি পেট খুব ভাল থাকে। খিদে ভাল হয়, শরীর একদম ঝরঝরে। এই কারণেই মধুপুর, গিরিডি কিংবা দেরাদুনে সবসময়ই বাঙালির ভিড় বেশি। এখানে পেটের অসুখ নিত্য ব্যাপার। ওখানকার আবহাওয়ায় না কি খিদে ভাল হয়। তা নয়। আসল ব্যাপারটা হল, ওখানকার জল ভাল। এখানকার জল মারাত্মকভাবে দূষিত। তাই পেটের সমস্যাও এত বেশি।

Advertisement

পানীয় জল-

Advertisement

এখানকার ৮০ শতাংশ লোকেরই এইচ পাইলোরি ইনফেকশন থাকে তাই এঁদের কথায় কথায় খেতে অনীহা, পেটে ব্যথা, বদ হজমের সমস্যা লেগেই থাকে। দীর্ঘ সময় এমন হতে হতে তা থেকে পেটে আলসার হয়ে যায়। তারপর যদি জল থেকে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া পেটে যায় তবে তো সংক্রমণের সম্ভাবনা আরও বেশি। জলের জন্য ইনটেস্টাইন্যাল ইনফেকশন খুব বেশি হয়। যেখানে জলের উৎস নদী-নালা নয়, গভীর নলকূপ বা টিউবওয়েলের জল পান করা হয় সেখানে পেটের রোগ অনেক কম। ট্যাপওয়াটারের জল খেলে, জল-ব্যবস্থা কতটা স্বাস্থ্যকর সেই ব্যাপারে সতর্ক হন। শুধু বর্ষাকালেই নয়, এখন সবসময়ই জল দূষিত হয়। সম্প্রতি কলকাতার বেশকিছু অঞ্চলে জল ঘটিত ব্যাকটেরিয়া থেকেই ডায়ারিয়ার প্রকোপ দেখা যায়। তাই জল ফুটিয়ে খেলে সংক্রমণ অনেকটাই রোধ করা যায়। জল বিশুদ্ধকরণে বাড়িতে ওয়াটার পিউরিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন কিংবা ফটকিরি বা জিওলিন মিশিয়ে জল খেতে পারেন। বাইরে জল খেলে মিনারেল ওয়াটার খান। পেটের গণ্ডগোল, বুক জ্বালা, আমাশা, গ্যাসের সমস্যার পাশাপাশি জল থেকে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা থাকে জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ার। বিশেষ করে হেপাটাইটিস এ এবং ই, এই ধরনের জন্ডিস জলবাহিত অসুখ। এত উন্নত হয়েও কলকাতাতে এখনও দেখা যায় টাইফয়েড, কলেরা হচ্ছে। তাই জলের বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। জলের ব্যাপারে সতর্ক না হলে বাঙালির পেটের সমস্যা কমবে না। যাঁদের হজমের সমস্যা তাঁরা খেয়েই সঙ্গে সঙ্গে জল খাবেন না। এতে শরীরে উপস্থিত হজমে উপকারী উৎসেচক খাবারে মিশতে পারে না, জলে দ্রবীভূত হয়ে যায়। তাই খাওয়ার ১৫-২০ মিনিট পর জল খেলে পেটের জন্য ভাল।

WaterFromPitcherPouredIntoGlass.jpg.653x0_q80_crop-smart

[কাঁধে-হাতে অসহ্য যন্ত্রণা? বড় সমস্যায় পড়ার আগেই সতর্ক থাকুন]

জল যন্ত্রণা-

অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, পেটের অসুখকে অবহেলা করলে তা কিন্তু খুব মারাত্মক হতে পারে। জল ও খাবারের উপর যেমন অনেকটাই নির্ভর করে পেট কেমন থাকবে উলটোদিকে কিছু বদ অভ্যাসও অজান্তেই পেটের ক্ষতি করে। বদ অভ্যাসের মূলে মদ খাওয়া। যা থেকে বাসা বাঁধে জটিল অসুখ প্যাংক্রিয়াটাইটিস।

একজন রোগীকে দেখেছিলাম যে এই ব্যথায় কষ্ট সহ্য করতে না পেরে হটওয়াটার ব্যাগে পিঠে সেঁক দিত। যখন আমার কাছে এল, দেখি সেঁক দিতে দিতে পিঠ পুড়ে গেছে। পুরো জায়গাটা কালো হয়ে আছে। ব্যথা শুরু হলে পেন কিলারেও ব্যথা হার মানতে চায় না। তাহলে বুঝুন কতটা কষ্টের এই অসুখ। এই সমস্যা মূলত অগ্ন্যাশয়ের সমস্যা। অগ্ন্যাশয় থেকে হজমের জন্য প্রয়োজনীয় উৎসেচক ও উপকারী হরমোন গ্লুকাগন ও ইনসুলিন বের হয়। এই দুই হরমোন শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখে। প্যাংক্রিয়াটাইটিস হল অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ হওয়া। অগ্ন্যাশয় ঠিক মতো কাজ না করলে প্রয়োজনীয় উৎসেচক ক্ষুদ্রান্ত্রের মাধ্যমে খাবারে মেশে না। অগ্ন্যাশয়েই  থেকে প্রদাহ তৈরি হয়। এই সমস্যাকেই ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয় প্যাংক্রিয়াটাইটিস। যার মূলে মদের নেশা। অ্যাকুউট প্যাংক্রিয়াটিসে হঠাৎ করেই পেটে অসম্ভব ব্যথা হতে থাকে। তবে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু ক্রনিক প্যাংক্রিয়াটাইটিস হয়ে গেলে তা সারিয়ে তোলা খুব কঠিন। অগ্ন্যাশয়ে দীর্ঘ সময় ধরে মাঝে মাঝেই খুব ব্যথা হতে থাকে। চিকিৎসা করলেও ভাল হয় না। পেট থেকে পিঠের দিকে ব্যথা হয় মারাত্মক। এত তীব্র ব্যথা যে সে হয়তো ঘুমাতেই পারে না সারা রাত। তাই বারবারই বললো, মদ খেয়ে নিজের বিপদ বাড়াবেন না। যখন রোগ ধরে যাবে তখন চিকিৎসা করলেও নিরাময় পাওয়া খুব কঠিন। বিশেষ করে পেটের এমন জটিল সব অসুখ খুব বেড়ে গিয়ে প্রকাশ পায়। তখন হয়তো বিশেষ কিছু আর করার থাকে না।

water_goodmorningcenter_com_1493042049_725x725

মন্দ ভাগ্যে ক্যানসার-

যদি এমন হয়, দীর্ঘদিন ধরে পেটের নানা সমস্যা চলছেই, সেক্ষেত্রে এটা অন্য কোনও অসুখের উপসর্গও হতে পারে। হঠাৎ খেতে অনীহা, ওজন কমে যাওয়া, বমি, জন্ডিস হলে ফেলে রাখবেন না। রোগের চিকিৎসা করেও যদি বারবার সমস্যা ফিরে আসে তবে এমন লক্ষণ ক্যানসারেরও হতে পারে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে।

পাকস্থলী ক্যানসারের প্রকোপ বর্তমানে খুব বাড়ছে। এর জন্য এখনকার জীবনযাপন কেউ আমি দোষ দেব বেশি। ভবিষ্যতে এই ক্যানসার আরও বাড়বে। অনেকদিন ধরে খিদে নেই, হঠাৎ খুব রোগা হয়ে যাচ্ছেন, রক্ত পায়খানা, প্রায়ই খুব পেটে ব্যথা যা ২-৩ সপ্তাহের বেশি থাকছে- এমন সব উপসর্গ দেখা গেলে পাকস্থলী ক্যানসারের সম্ভাবনা থাকে। তাই অবহেলায় বিপদ বাড়াবেন না। এছাড়া পরিবারে কারও কোলন ক্যানসার থাকলেও সাবধান। সেক্ষেত্রে কোনও সমস্যা না থাকলেও নিয়ম করে স্ক্রিনিং করে দেখুন।

পরামর্শে: ০৩৩ ২৪৬২ ২৪৬২

পিয়ারলেস হাসপাতাল

[দু’ঘণ্টায় পাঁচ পেগ মদ! জানেন কী বিপদ ডেকে আনছেন?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ