ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাইকোপ্লাজমা সংক্রমণ হল ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ। এটি শরীরের বিভিন্ন অংশকে প্রভাবিত করতে পারে, যেমন ফুসফুস, ত্বক, মূত্রনালী। তবে মাইকোপ্লাজমা সংক্রমণের মধ্যে মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়া অন্যতম। এই রোগের অন্যতম লক্ষণ হল হাঁপানি। যেহেতু মাইকোপ্লাজমার জন্য কোনও ভ্যাকসিন এখনও পর্যন্ত উপলব্ধ নয়, তাই কীভাবে এই রোগের হাত থেকে শিশুকে রক্ষা করবেন সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন নেওটিয়া ভাগীরথী ওম্যান অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার সেন্টারের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সোমনাথ গোরাইন।
প্রশ্ন: আপনি কি নেওটিয়া ভাগীরথী ওম্যান অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার সেন্টারে মাইকোপ্লাজমার কারণে শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যা এবং ইউরোজেনিটাল সংক্রমণের বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছেন?
উত্তর: হ্যাঁ, মাইকোপ্লাজমা নিউমোনিয়ার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত কয়েক মাসে এই সেন্টারে অনেক শিশু ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজন হালকা থেকে মাঝারি শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত উপসর্গ নিয়ে ভর্তি। তবে কয়েকজনকে তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যার জন্য পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করতে হয়েছে।
প্রশ্ন: সদ্যোজাত, শিশু বা গর্ভবতীদের মাইকোপ্লাজমা সংক্রমণের চিকিৎসার ক্ষেত্রে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে?
উত্তর: একেবারে সদ্যোজাতদের মধ্যে সংক্রমণের হার খুবই কম। তবে তুলনামূলক বড় বাচ্চাদের মধ্যে, বিশেষ করে ৫ বছর এবং তার ঊর্ধ্বে উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে কিছু শিশু নিউমোনিয়া, এমপাইএমা (ফুসফুসের ভিতর পুঁজ বা তরল জমা), শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা (Respiratory failure) এবং অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম (ARDS) নিয়ে আসছে। তাদের চিকিৎসা করা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। অনেকেরই ভেন্টিলেশন, BIPAP-এর মতো কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের ব্যবহার প্রয়োজন হচ্ছে। পাশাপাশি, যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসাও নিশ্চিত করা জরুরি।
প্রশ্ন: শিশু এবং অন্তঃসত্ত্বাদের মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোধ করতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে?
উত্তর: আজকাল আজিথ্রোমাইসিন, লিভোফ্লক্সাসিনের মতো ওষুধ অতিরিক্ত মাত্রায় এবং বিনা প্রয়োজনেই ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি ড্রাগ প্রতিরোধী মাইকোপ্লাজমা তৈরির কারণ হতে পারে। আমরা বহির্বিভাগ পরিষেবায় অপ্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করি, যদি না একান্তই প্রয়োজন হয়।
প্রশ্ন: মাইকোপ্লাজমা সংক্রমণ থেকে সন্তানদের রক্ষা করতে বাবা-মা কী পদক্ষেপ করতে পারেন?
উত্তর: মাইকোপ্লাজমা ড্রপলেট সংক্রমণের মাধ্যমে ছড়ায়, তাই সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা জরুরি। মাস্ক ব্যবহার, হাত পরিষ্কার রাখা, কফ এটিকেট মেনে চলা এবং কাশি-সর্দি থাকলে ভিড় এড়িয়ে চলার মতো সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। ঠিক যেমনটি COVID- ১৯-এর সময় করা হয়েছিল।
বিশেষ করে যেসব শিশুর হাঁপানির (Asthma) সমস্যা রয়েছে, তাদের অবশ্যই এই সতর্কতাগুলি মেনে চলা উচিত। এখনও পর্যন্ত মাইকোপ্লাজমার জন্য কোনও ভ্যাকসিন উপলব্ধ নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.