BREAKING NEWS

২৫ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  শুক্রবার ৯ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

বিছানায় গর্জন! নাক ডাকার সমস্যা থাকলে এখনই সাবধান হোন, বলছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক

Published by: Suparna Majumder |    Posted: January 30, 2022 9:22 pm|    Updated: January 30, 2022 9:22 pm

Snoring can cause heart attack, warns Kolkata doctor | Sangbad Pratidin

ছবি: প্রতীকী

চোখের পাতা এক হলেই নাক ডাকার শব্দে অন্যদের ঘুম শিকেয়। অনেকেই এই সমস্যাকে তেমন কিছু নয় বলে উড়িয়ে দেন। ক্রমশ বাড়তে থাকলে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়ে স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে। তাই শুরুতেই সাবধান হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন স্লিপ স্পেশ্যালিস্ট ডা. সৌরভ দাস। লিখলেন কোয়েল মুখোপাধ্যায়।

নিশি ঘনালেই আতঙ্ক! এই শুরু হল ‘গৃহস্থের ঘরের ব্যাঘ্রগর্জন’। মানে নাসিকাগর্জন। সে দুন্দুভিনিনাদে কান-মাথা ঝালাপালা, ঘরে টেকা দায়, ঘুম ‘ভাগলবা’। কিন্তু নাকডাকা কথাটাই যে ভুল! নাক তো নয়, ডাকে যে গলা। সাধারণ ধারণা – নাক ডেকে ঘুমোচ্ছেন মানে দিব্য ঘুমোচ্ছেন, ‘সাউন্ড স্লিপ’ হচ্ছে। আগাগোড়া ভুল ধারণা। নাক ডাকা, ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই কোনও রোগের লক্ষণ।

শরীরে সঠিক মাত্রায় অক্সিজেন প্রবেশ না করলে অক্সিজেন লেভেল ‘ড্রপ’ করে। স্বাভাবিক যা ৯৯/১০০/৯৫ থাকে, তাই ঘুমের মধ্যে কমে হয় ৯০/৮৫/৭০/৬৫।‘ড্রপ’ বেশি সময় ধরে হলে (২/৪/৬ মিনিট) বা বেশি মাত্রায় হলে ‘কার্ডিও ভাসকুলার অ্যাক্সিডেন্ট’ যেমন স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। নজর না দিলে প্রাণহানিও হতে পারে।সাধারণ সমস্যাগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঘুমের ঘাটতি, মেমরি লস, ক্লান্তি। অ্যাংজাইটি, ডিপ্রেসন, বয়স্কদের ডিমেনশিয়া বাড়ে। ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরলের সমস্যা থাকলে বাড়ে। হাইপারটেনশন হতে পারে। দৈনন্দিন কাজকর্ম ব্যাহত হয়, যৌন ক্ষমতায় প্রভাব পড়ে।

Snoring

কখন ডাকে?
আমরা নাক, মুখ দুই দিয়েই শ্বাস নিই। নাক আর মুখের দু’টি টিউবজাতীয় অংশ আলাদাভাবে শুরু হলেও, কিছুটা ‘কমন প্যাসেজ’ তৈরি করে, পরে এপিগ্লটিসের কাছে ফের আলাদা হয়ে যায়। জেগে থাকলে শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিকই চলে। কিন্তু ঘুমিয়ে পড়লে, কারও কারও গলার কাছের ‘গ্রুপ অফ মাসলস’, যা আদপে হাড় বা কার্টিলেজহীন ‘সফট টিস্যু স্ট্রাকচার’ শিথিল হয়ে যায়। ‘কোল্যাপ্স’ করে। তখন ওই প্যাসেজ দিয়ে যতটা অক্সিজেন প্রবেশের কথা, ততটা হয় না। ব্লকেজ ঘটে। যতটুকু অক্সিজেন ঢোকে, তা গিয়ে সফট টিস্যু স্ট্রাকচারে ধাক্কা খায়, ভাইব্রেশন হয়। এতে যে শব্দ হয়, সেটাই নাক ডাকা। ‘কোল্যাপ্স’ ৩০ শতাংশের বেশি হলে উদ্বেগের।

[আরও পড়ুন: Coronavirus: দেশে করোনা গ্রাফের নিম্নমুখী ট্রেন্ড অব্যাহত, টিকাকরণে নয়া নজির ভারতের]

কেন ডাকে?
কারণ তিনটি। জেনেটিক, এনভায়রনমেন্টাল এবং অ্যানাটমিক্যাল। অনেকে পারিবারিকভাবে নাক ডাকেন। কারণ জিন। কারও ক্ষেত্রে দায়ী অ্যানাটমিক্যাল স্ট্রাকচার। যেমন কারও গলার কাছে ফ্যাট ডিপোজিশন বেশি। ফলে অক্সিজেন প্রবেশের পথ সংকীর্ণ হয়ে যায়। যত বেশি সংকীর্ণ, ‘কোল্যাপ্স’ করার প্রবণতা তত বেশি। ‘এনভায়রনমেন্টাল’ কারণ হল ধূমপান, মদ্যপান। অনেকে নর্ম্যালি নাক ডাকেন না, কিন্তু মদ্যপান করলে ডাকেন। অত্যধিক ক্লান্তিও কারণ। শীতে, বর্ষায় ডাকা বাড়ে।

‘ফুলস্টপ’ কীভাবে?
বুঝবেন কী করে, কোন নাকডাকাটা বিপজ্জনক? যদি দেখেন, কেউ এমন জোরে নাক ডাকছেন যে পাশের জন ঘুমোতেই পারছেন না বা শব্দ ঘরের বাইরে থেকেও শোনা যাচ্ছে বা যে ঘুমের মধ্যে রোগীর নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যাচ্ছে-তখনই সতর্ক হোন। পলিসমনোগ্রাফিক টেস্ট করান ডাক্তারের পরামর্শমতো। চারটি স্তরে হয়। লেভেল ওয়ান সবচেয়ে অ্যাডভান্সড। ল্যাবরেটরিতে এসে করতে হয়। এতে রোগের কারণ অনেকাংশেই ধরা যায়। এছাড়াও ‘পোর্টেবল ফরম্যাটে’, রোগীর বাড়িতে একটি ছোট যন্ত্র নিয়ে গিয়ে, রাতে রোগীকে লাগিয়ে দেওয়া হয়। কে, কোন পরীক্ষা করবেন, চিকিৎসকই জানাবেন।

Snoring Husband

চিকিৎসা আছে –
নাক ডাকা থামানোর কোনও ওষুধ নেই, চিকিৎসা আছে চার রকম।
সবচেয়ে সহজ, সস্তা ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন হল–প্যাপ ডিভাইস। পজিটিভ এয়ারওয়েভ প্রেসার। মাস্কের মতো যন্ত্র, রাতে পরে ঘুমোতে হয়। খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হওয়া যায়। এদেশে দাম ৩০-৩৫ হাজার টাকা।
‘সার্জিক্যাল অপশন’ও আছে। তবে গুরুতর পরিস্থিতি না হলে করা হয় না।
এছাড়া কিছু ডেন্টাল অ্যাপ্ল্যায়েন্সও পাওয়া যায়।
নাক ডাকা বাগে আনতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনুন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন, ঠিক সময়ে ঘুমোন-পর্যাপ্ত ঘুমোন, মদ-সিগারেট থেকে দূরে থাকুন।

সমস্যার সমাধানের ফোন করতে পারেন ৯৮৩১৪১২০৮১/৭০৫৯১৬০৫০৭ নম্বরে।

[আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিতে ২১ গ্র্যান্ড স্ল্যামের মালিক নাদাল, অভিজ্ঞতার কাছে হার মানল তারুণ্য]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে