ছবি: প্রতীকী
মণিদীপা কর: ‘ভুল গ্যয়া সব কুছ, ইয়াদ নাহি আব কুছ? এক হি বাত না ভুলি।’ ব্যাপারটা খানিকটা এরকমই। বিয়ে কি শুধুই বংশরক্ষার জন্য? নাকি শারীরিক সম্পর্কের সামাজিক স্বীকৃতি? বিয়ের ব্যাপ্তি বিশাল। অন্তত চিকিৎসাবিজ্ঞান তো এমনটাই বলছে। গবেষকদের দাবি, মানুষের স্মৃতিশক্তির উপরও রয়েছে বিয়ের প্রভাব। অর্থাৎ বিবাহিতদের তুলনায় নাকি অবিবাহিতদের অ্যালঝাইমারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি।
প্রায় আট লক্ষ মানুষের উপর গবেষণা চালিয়ে লন্ডন ইউনিভার্সিটি কলেজের গবেষকরা দেখেছেন, বিয়ে করলে স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়। এমনকী বিধবা বা বিপত্নীকরা কিছুটা হলেও এই রোগ থেকে দূরে থাকতে পারেন। গবেষক অ্যান্ড্রিউ সামারল্যাডের মতে, দীর্ঘদিন বিবাহিত জীবনযাপনের পর স্ত্রী বা স্বামী বিয়োগের পরে কিছুটা হলেও বিয়ের সুফল পাওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে অ্যালঝাইমারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ কমে। বিস্মৃতির অসুখ থেকে বাঁচতে হলে অন্যতম দাওয়াই বিয়ে, বলছেন গবেষকরাই। ভুলে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচতে গেলে ভালবাসার সম্পর্কটাই আসল, দাবি তাঁদের। অনেক সময়ই বিবাহিত দম্পতিদের বলতে শোনা যায়, বিয়ে করেই তাঁদের যাবতীয় যোগ্যতা বিলুপ্ত হতে বসেছে। সংসারের হরেক কিসসা মনে রাখতে গিয়ে জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিল্প, সংস্কৃতিচর্চার স্মৃতি ফিকে হয়ে গিয়েছে। বিয়ে করলে এমনিতেও বেশ কিছু অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের ব্যাপার থাকে। দুই বাড়ির খুঁটিনাটি কিন্তু শুধু আর মেয়েটি নয়, ছেলেটিকেও মনে রাখতে হয় বইকি। ৪০০ গ্রাম পোস্ত, দু’প্যাকেট কালো জিরের মতো বাজারের ফর্দ হোক, কিংবা শ্বশুর বা শাশুড়ির ওষুধের সময়। ভুলে যাওয়ার কোনও পথ তাই আর খোলা নেই। গবেষকরাই বলছেন, নিজের স্মৃতিশক্তির উন্নতি করতে হলে বিয়েটা চটপট করে নিলে ক্ষতি কিন্তু নেই।
বিয়ের ঠেলায় নাকি সংসারের টুকিটাকি বিষয়ও খেয়াল থাকে না বলে দাবি করলেও তা মানতে রাজি নন গবেষকরা। তাঁদের দাবি, বিয়ের লাড্ডু মোটেই স্মৃতিনাশক নয়। বরং এর ভূমিকা অনেকটাই ব্রাহ্মী শাকের মতো। তবে আগুনকে সাক্ষী রেখে বা আইনিভাবে বিয়ে না হলেও চলবে, দীর্ঘদিনের সহবাসকেও এক্ষেত্রে বিয়ের সমতুল বলে ধরা হচ্ছে বলে দাবি করছেন বিজ্ঞানীরা। আবার দীর্ঘদিনের দাম্পত্য জীবনের পর বিবাহবিচ্ছেদ হলেও স্মৃতিশক্তির দিক থেকে একই উপকার মিলবে। এক্ষেত্রে মহিলা-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই বিয়ের সুফল একই রকম। এমনকী বিয়ে দেশ-কাল ভেদে একই রকম স্মৃতিবর্ধক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.