Advertisement
Advertisement

Breaking News

zoonosis

বিশ্বের ৭৫% ভাইরাস ঘটিত রোগ প্রাণীবাহিত, কেন একথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

সাবধান! শুধু করোনা নয় অন্যান্য ভাইরাসেরও মিউটেশন হচ্ছে কিন্তু!

Surveillance of zoonosis are the key to preventing future pandemics | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:April 3, 2021 2:38 pm
  • Updated:April 3, 2021 2:38 pm

স্টাফ রিপোর্টার: গ্রীক শব্দ জুন মানে প্রাণী এবং নুস শব্দের অর্থ অসুস্থ। আর এই দু’টি শব্দের মিলনে কয়েক হাজার বছর আগে চিকিৎসা শাস্ত্রে তৈরি হয় নতুন শব্দ ‘জুনোসিস’ (Zoonosis)। যার অর্থ প্রাণী থেকে যেসব অসুখ দ্রুত মানবদেহে সংক্রমিত হয়। কোভিড (COVID-19) আবহে ‘জুনোসিস’ থেকে চিকিৎসকদের আরও সচেতন করতে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

কারণ ভারতের মতো দেশে ৭৫ শতাংশ রোগের মূল উৎস প্রাণীবাহিত। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, করোনা ভাইরাসও (Corona Virus) এক অর্থে ‘জুনোসিস’ বা প্রাণীবাহিত রোগ। কারণ একটাই, মানুষের অনেক আগেই করোনায় পশুদের আক্রান্ত করেছে। অসুস্থ করেছে পশুদের। আবার রেবিস বা জলাতঙ্কও ‘জুনোসিস’। এইডস বা HIV’র উৎস শিম্পাঞ্জি। মোদ্দা কথা, প্রাণীর শরীর থেকে মানবদেহে যখন কোনও রোগ সংক্রমিত হয় তখনই তাকে ‘জুনোসিস’ বলা হয়। সেই অর্থে সোয়াইন ফ্লু বা বার্ড ফ্লু’কেও ‘জুনোসিস’ বলছেন চিকিৎসকরা। এমনকী স্ক্রাব টাইফাসের মতো রোগও প্রাণীবাহিত রোগ। শুধু ভাইরাস নয়, ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক থেকে বিভিন্ন ধরনের ‘জুনোসিস’ রোগ মানবদেহে দ্রুত সংক্রমিত হয়। কিন্তু ঘটনা হল, একটু সাবধানতা নিলেই এই ধরনের রোগ সংক্রমণ থেকে মুক্তি মিলতে পারে।

Advertisement

স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের উদ্যোগে কলকাতার সবকটি মেডিক্যাল কলেজ এবং বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চিকিৎসকদের আরও সচেতন করা হয়েছে। মূলত, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের অধীনস্থ ন্যাশনাল কন্ট্রোল অফ ডিজিজ কন্ট্রোলের (এনসিডিসি) উদ্যোগে গোটা দেশজুড়ে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের অধিকর্তা ডা. শুভাশিস কমল গুহর কথায়, “এনসিডিসি সম্প্রতি স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনকে এই রোগ নিয়ন্ত্রণে অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান হিসাবে চিহ্নিত করেছে। পাশাপাশি চিকিৎসকও ল্যাবরেটরির কর্মী ও মাইক্রো বায়োলজিস্টদের আরও বেশি সচেতন করতে কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।” অধ্যাপক গুহর কথায়, “চিকিৎসক বা মাইক্রো বায়োলজিস্টরা যদি আরও সচেতন হন তবে রোগ চিহ্নিত করতে অনেক সুবিধা হবে। আর এখন মূলত এই কাজটাই করা হচ্ছে। বিভিন্ন প্রাণীবাহিত রোগ বারবারই ফিরে আসছে। অর্থাৎ ভাইরাসের জিনের মিউটেশন হচ্ছে। সেই বিষয়টি যত বেশি পরীক্ষা হবে, ততই রোগ চেনা সুবিধার হবে।”

Advertisement

[আরও পড়ুন: বুকে ‘রাক্ষসের মাথা’! সফল অস্ত্রোপচারে মহিলার জীবন ফেরাল কলকাতা মেডিক্যাল]

শুধুমাত্র চিকিৎসক নয়। প্রাণী বিশেষজ্ঞ বা পশু চিকিৎসকদেরও আরও বেশি সচেতন করতে হবে। সচেতন করা হবে কৃষি বিশেষজ্ঞদেরও। মোদ্দা কথা, রাজ্যের সরকারি মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের মতো প্রাণী বিশেষজ্ঞদেরও একসঙ্গে কাজ করতে হবে। রাজ্য প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদারের কথায়, “বিশ্বের ৭৫ শতাংশ সংক্রমক রোগের মূল উৎস প্রাণী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য এমনটাই দাবি করছে।” টিবি বা যক্ষার উৎস যেমন গবাদি পশু তেমনই অ্যানথ্রাক্স, সোয়াইন বা বার্ড ফ্লুও সংক্রমিত হয় পশু, পাখি থেকে। এমনকী ইনফ্লুয়েঞ্জার ভাইরাসও প্রাণীদেহ থেকে মানব শরীরে সংক্রমিত হচ্ছে।

কেন ফিরে আসছে এই ধরনের রোগ? প্রশ্নের উত্তরে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শুধু করোনা ভাইরাসেরই জিনের মিউটেশন হয় না। প্রাণীবাহিত যেসব রোগ দ্রুত মানবদেহে সংক্রমিত হয় সেগুলিও দ্রুত মিউটেশন হচ্ছে। আশঙ্কা আগামী দিনে এইসব রোগের ভাইরাসের জিনের চরিত্রগত বদলের জন্য আরও মারাত্মকভাবে ফিরে আসতে পারে। দেখা দিতে পারে করোনার মতো মহামারী। ডা. জোয়ারদারের কথায়, “ঠিক এখনই বাদুড় থেকে বেশিরভাগ ভাইরাস ঘটিত রোগ ছড়াচ্ছে।” তাই এমন রোগের মোকাবিলা করতে ফের প্রাচীণ গ্রিস বিশেষজ্ঞদের দেখানো পথেই হাঁটছে আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান।

[আরও পড়ুন: অ্যালার্জি থাকলেও নেওয়া যাবে করোনার টিকা, তবে মানতে হবে সতর্কতা ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ