BREAKING NEWS

২২ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  মঙ্গলবার ৬ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

হাত-পা কিংবা কপালের শিরা ফুলেছে? সাবধান! ভেরিকোস ভেন নয়তো?

Published by: Suparna Majumder |    Posted: March 16, 2021 2:11 pm|    Updated: March 16, 2021 2:11 pm

Varicose Veins: know the Cause, treatment, diagnosis and prevention of this condition | Sangbad Pratidin

অনেকেরই হাতে, পায়ে, কপালের শির ফোলা থাকে। অথচ একে স্বাভাবিক বলে ধরে নেন অনেকেই। দেশে ১০-১৫% মানুষই এই শিরা ফুলের যাওয়ার এক ধরনের রোগে ভোগেন, যার নাম ভেরিকোস ভেন (Varicose Veins)। অসচেতনতার জেরে এর থেকে দেখা দিতে পারে নানা রকম সমস্যা। সতর্ক করলেন সিএমআরআইয়ের কনসালট্যান্ট ইন্টারভেনশন রেডিওলজিস্ট ডা. অভীক ভট্টাচার্য। লিখলেন সুমিত রায়।

ভেরিকোস ভেন কী?

আমাদের শরীরে রক্তের প্রবাহ দু’দিকে হয়। হৃৎপিণ্ড থেকে অক্সিজেন নিয়ে ধমনীগুলি দিয়ে শরীরের প্রতিটি অঙ্গে রক্ত যায় এবং অঙ্গগুলি থেকে অক্সিজেনবিহীন রক্ত শিরাগুলির মাধ্যমে হৃদয় ফিরে আসে। এই শিরাগুলির জালের মধ্যে রক্তের প্রবাহের জন্য অনেকগুলি কপাট থাকে (যাকে রিটার্ন ভালভ বলা হয়) যেখানে চাপ সৃষ্টির মাধ্যমে রক্ত হৃৎপিণ্ডের দিকেই যায়। যখন এই ভালভগুলি খারাপ হয়ে যায় তখন রক্ত হৃৎপিণ্ডে না গিয়ে শিরায় ফিরে আসে। যার ফলে শিরাগুলির মধ্যে ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রক্ত সঞ্চারিত হয়। ভেরিকোস ভেন, রোগটি মূলত ত্বকের কাছের শিরাগুলিতে হয়। মহিলারা এই রোগে বেশি ভোগেন।

উপসর্গ-

এই রোগে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পায়ের উরু থেকে হাঁটুর পিছন দিকের শিরাগুলি অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে ওঠে। পেঁচানো শিরাগুলি নীল ও বেগুনি রঙের হয়ে যায়। সারাদিন পায়ে একটা অস্বস্তি বা জ্বালা থাকে এবং অনেক সময় প্রচন্ড ব্যথাও হয়। পা ভারী-ভারী মনে হয়। রাতে পায়ে টান ধরে। পায়ের ত্বকে জটিলতা (লাইপোডারম্যাটোস্ক্লেরোসিস), ফুসকুড়ি (একজিমা) হয়, সংক্রমণ (সেলুলাইটিস) হয়, এছাড়া শিরায় ঘা’ও হয়। এগুলির কোনওটাই ওষুধ খেলেও সারতে চায় না। বিরল হলেও কিছু কিছু রোগীর থ্রম্বোসিস হতে পারে, যেখানে শিরায় ‘ব্লাড ক্লট’ হতে পারে।

কারণ –

যদিও অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকার ফলে ভেরিকোস ভেন হয় না, কিন্তু এর ফলে শিরায় (Vein) বেশি রক্ত জমা হয়ে যায় ও টান পড়ে। যার ফলে শিরাগুলির দেওয়ালে চাপ বেড়ে যায়। এর ফলস্বরূপ ভালভগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এই রোগ হতে পারে।

Postpartum Varicose Veins: Causes, Signs & Treatment

[আরও পড়ুন: শরীরে সংক্রমণ, বিকল অঙ্গ-প্রতঙ্গ, আপনার আর্থিক সাহায্যই বাঁচাতে পারে ৮ মাসের শিশুকে]

চিকিৎসা-

প্রাথমিক ভাবে লক্ষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য হাঁটুর নিচে গ্রাজুয়েটেড ইলাস্টিক কম্প্রেশন দেওয়া হয়। এরপর রোগের অবস্থা বুঝে দু’রকম চিকিৎসা করা হয়।

ফোম স্কেলেরোথেরাপি– রোগের পরিসর সীমিত হলে ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরাতে স্ক্লেরোসিং সলিউশন দেওয়া হয়। এর ফলে একটু চুলকানি থাকতে পারে যা দু’তিন দিন থেকে ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে চলেও যায়।

লেসার বা রেডিওফ্রেকুয়েন্সি ট্রিটমেন্ট– এই পদ্ধতিতে শিরায় ছিদ্র করে আলট্রাসাউন্ডের
সাহায্যে শিরাগুলিকে রেডিওফ্রিকুয়েন্সি বা লেসারের মাধ্যমে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

লোকাল অ্যানাস্থিসিয়া দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। রোগী সেই দিনই বাড়ি ফিরে যেতে পারেন আর ২৪ ঘন্টার পর নিজের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা শুরু করতে পারেন। রোগী ইঞ্জেকশন ফোটানো ছাড়া আর কোনওরকম ব্যথা অনুভব করেন না। একটু লাল দাগ থাকতে পারে যা ৬-৮ দিনের মধ্যে চলে যায়। চিকিৎসার পর ওই জায়গা কোনওভাবেই রগড়াবেন না, টিপবেন না। ২-৪ সপ্তাহ স্টকিং পড়তে হবে। ৩-৫ দিন পেন কিলার খেতে হবে।সঠিক সময় রোগ নির্ণয় হলে এবং যথাযথ চিকিৎসা হলে, এই রোগ পুনরায় হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে।

রিস্ক ফ্যাক্টর-

  • স্থূলতা
  • ধূমপান
  • নিষ্ক্রিয়তা বা আলস্য
  • পায়ে চোট
  • গর্ভাবস্থা

সুস্থ থাকতে কী করতে হবে?

  • নিয়মিত এক্সারসাইজ ও যোগ ব্যায়াম করুন।
  • সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য খান।
  • দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকবেন না।
  • সঠিক ওজন বজায় রাখুন।
  • ধূমপান করবেন না।
  • হাই হিলের জুতো পড়বেন না।

What are Varicose Veins and Can They be Treated?

[আরও পড়ুন: ইউরিক অ্যাসিড হলে কি টমেটো, পিঁয়াজ একেবারেই খাবেন না? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে