সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জল খেতে ভাল লাগে না। তাই খুব একটা খাই না। জল খেলে ঘনঘন বাথরুম যেতে হয়, রাস্তায় যেখানে সেখানে শৌচালয় ব্যবহার করার আতঙ্কে খুব কম খাই।
মহিলাদের মুখে জল কম খাওয়ার এমন বাহানা আকছার শোনা যায়। বিশেষ করে যাঁরা বাইরে কাজ করেন তাঁদের এমন সমস্যা সত্যিই হয়। কিন্তু জানেন কি রোজ পরিমিত জল না খেলে মেয়েদের কী কী অসুখ হতে পারে?
শরীরে জলের পরিমাণ কমে গেলে ডিহাইড্রেশন হয়। নিয়মিত শরীরে ফ্লুইডের অভাব ঘটলে এবং ডিহাইড্রেশনের ট্রিটমেন্ট না হলে তা থেকে ভবিষ্যতে কিডনিতে স্টোন ও হাই ব্লাড প্রেশার হয়ে যেতে পারে। শরীরে যত বেশি জলীয় পদার্থ থাকবে কিডনি তত ভাল কাজ করবে। জল শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। কম জল খাওয়ার অভ্যাস থাকলে শরীরে ক্রমশ বিষাক্ত পদার্থ জমতে থাকে।
এছাড়া মূত্রথলিতে প্রদাহ হয়ে ইনফেকশনের ঝুঁকি বেড়ে যায়। একে সিসটিটিস বলে। প্রস্রাবের মাধ্যমে ইনফেকশন বের করে দিতে রোজ ১২ গ্লাস জল খেতে পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। জল কম খাওয়ার ফলে সিসটিটিস হওয়ার লক্ষণ হল, ঘনঘন প্রস্রাব পাচ্ছে মনে হয় কিন্তু হয় না বা খুব অল্প হয়। কোমরের নিচের দিকে যন্ত্রণা হয়, প্রস্রাবের রং গাঢ় ও দুর্গন্ধযুক্ত হয়। এছাড়া জ্বর আসতে পারে।
ঘনঘন ডিহাইড্রেশন হলে শরীর ক্রমশ ভেঙে যায়। একটুতেই ক্লান্তি বোধ হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এছাড়া ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এছাড়া জল কম খাওয়ার জন্য কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা হওয়াও খুব স্বাভাবিক। জল খাবার ভাল করে হজম করতে সাহায্য করে। তার সঙ্গে মলকেও নরম করে পাচনতন্ত্রের নিচের দিকে পৌঁছে দিতে সাহায্য করে।
মহিলারা ত্বকের উজ্জ্বলতার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দেন। জল পান ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে। জল পরিমিত না খেলে ত্বকের কোলাজেন ভেঙে ফেটে যায়। চাহিদা অনুযায়ী শরীরে জল না থাকলে ঠোঁট, মুখ, চামড়া শুকিয়ে যায়। এর ফলে দ্রুত মুখে বলিরেখা, ভাঁজ পড়ে। যার জেরে কম বয়সেই বার্ধ্যক্যের ছাপ পড়ে যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ৯-১২ গ্লাস জল খাওয়া ভীষণ জরুরি।
একইসঙ্গে মহিলারা নিজের ওজন নিয়েও ভীষণ সচেতন। অতিরিক্ত মোটারা রোগা হওয়ার চেষ্টা করলে পরিমিত জল পান করতেই হবে। তা না হলে কম জল খাওয়ার অভ্যাস মহিলাদের রোগা হওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। পরিমিত জল না খেলে কোষে জলের যোগান কম পড়ে। ফলে কোষের দেওয়াল ধীরে ধীরে পুরু হয়ে যায় বলে ওজন বাড়তে থাকে। মানুষের মস্তিষ্কের ৮০ শতাংশই জল দিয়ে তৈরি। তাই যদি আপনি দিনে ২-৩ লিটার জল খেতে না পারেন তাহলে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। সেই সঙ্গে বুদ্ধি এবং মনযোগ ক্ষমতাও কমে যায়। পরিমিত জল পান না করলে শরীরে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। ফলে আচমকা মাসল ক্র্যাম্প হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। গাঁটে গাঁটেও ব্যথা হয়।