Advertisement
Advertisement

মশার কামড় থেকে বাঁচতে ধূপ বা তেলের ব্যবহার, জানেন কী ক্ষতি হচ্ছে?

নিরাপদ উপায় কী?

Bones of mosquitoes to survive mosquitoes can bring cancer!
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 25, 2018 5:18 pm
  • Updated:July 25, 2018 5:18 pm

মশার কামড় থেকে বাঁচতে ঘরে ঘরে ভরসাযোগ্য মশার ধূপ বা তেল। এতে থাকা বিষাক্ত কেমিক্যালের প্রভাবে মানুষের জীবনও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। সাবধান করলেন দুর্গাপুর ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্টের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক প্রোজ্জ্বল সরকার। শুনলেন জিনিয়া সরকার

বৃষ্টির জল পড়লে গরমের প্রকোপ লঘু হয়। এদিক থেকে স্বস্তি মিললেও বর্ষাকালে মশার ও ডেঙ্গুর ভয়ে তটস্থ থাকতেই হয়। তাই বাড়িতে সর্বক্ষণই মশার ধূপ জ্বেলে রাখেন অধিকাংশই। তাতে হয়তো মশা মরে কিন্তু শরীরে এর ক্ষতিকর প্রভাব কতটা পড়ে তা ভেবেছেন? একটা মশার ধূপের ধোঁয়ার পরিমাণ প্রায় ১০০টা সিগারেটের ধোঁয়ার সমান। তাহলে এই ধূপ জ্বেলে ঘরে থাকলে শরীরে কতটা ক্ষতি করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সাবধান না হলে নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনবেন।

Advertisement

কতটা ক্ষতিকর?

Advertisement
  • মশা মারার ধূপের মূল উপাদান হল পাইরেথ্রাম। এটিই এই ধূপের মূল কীটনাশক যা মশা মারতে ভাল কাজ করে। এই উপাদান চন্দ্রমল্লিকা ফুলের নির্যাস থেকে তৈরি করা হয়। বিভিন্ন গবেষণার তথ্য থেকে জানা যায়, এই পাইরেথ্রাম কেমিক্যাল থাকার জন্যই মশার ধূপের ধোঁয়া এত বিষাক্ত হয়। এই ধোঁয়ার সাথে মিশে থাকে ফর্মালডিহাইড বা ফর্মালিন জাতীয় বিভিন্ন বিষাক্ত কেমিক্যাল। তাই বদ্ধ ঘরে ৭-৮ ঘণ্টা মশার ধুপ জ্বেলে রাখলে শরীরে নানা অসুখ বাসা বাঁধতে পারে।
  • মশা মারার তেলও খুব একটা নিরাপদ নয়। হয়তো ধোঁয়ার সমস্যা তেলে হয় না ফলে সরাসরি অধিকমাত্রায় বিষাক্ত উপাদান শরীরে না পৌঁছলেও ধীরে ধীরে  শরীরে ক্ষতি করেই। এই তেলগুলিও তৈরির ক্ষেত্রে কীটনাশকের পাশাপাশি আরও অনান্য কেমিক্যাল এতে মেশানো হয়। তাই ধূপের বদলে তেল ব্যবহার নিরাপদ তা কখনওই ভাবা উচিত নয়। 

ঝুঁকি বাড়ায়

  • মাথা ধরা, ঝিমুনি ভাব, স্নায়ু দুর্বল, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্টের প্রবণতা বাড়তে পারে। চোখের ক্ষতি করে। মানসিক চাপ বাড়ায়, অনিদ্রার সমস্যা ডেকে আনে।
  • তবে দীর্ঘদিন অর্থাৎ অন্তত ৭-৮ বছর টানা রোজ এই ধূপ একটি করেও জ্বালার অভ্যাস কারোর থাকে তবে তা থেকে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে ক্যানসারও। বিশেষ সম্ভাবনা থাকে ফুসফুস ক্যানসার হওয়ার।
  • মশা মারার তেলে উপস্থিত ক্ষতিকারক কেমিক্যাল শ্বাসের মাধ্যমে শরীরে গেলে তা থেকে মাথার যন্ত্রণা শুরু হয়, ত্বকের সমস্যা, অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন স্বাস্থ্য জার্নালের তথ্য বলছে এই মশা মারার তেলের প্রভাব শরীরে স্লো-পয়জনের মতো।

নিরাপদ উপায়

  • সবচেয়ে নিরাপদ হল নারকেল ছোবড়ার সঙ্গে ধুনো মিশিয়ে সেই ধোঁয়ায় মশা তাড়ানো। এতে ধোঁয়া থাকলেও, বিষাক্ত কেমিক্যাল থেকে ক্ষতির ভয় নেই।
  • বাড়িতে ‘লেমনগ্রাস’ গাছ লাগান। এই গাছ থাকলে তার ধারে কাছে মশা খুব কম হয়।
  • নিমতেল ত্বকে লাগালে মশার কামড় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। ৫ শতাংশ নিমতেল ও তারসঙ্গে বাকি নারকেল তেল বা সরষের মিলিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন।
  • নিম ও তুলসী পাতার নির্যাস নারকেল তেলের সঙ্গে মেশান। সেই মিশ্রণ কেরোসিন তেলে দিয়ে ও তার সঙ্গে একটু কর্পুর মিশিয়ে মশার তেলের কৌটোয় দিয়ে ঘরে জ্বালান। এটি মশা মারার খুবই স্বাস্থ্যকর উপায়।
  • মশা মারার ইলেকট্রিক ব্যাট ব্যবহার করলে কোনও ক্ষতি নেই। এই ব্যাটগুলোতে খুব ধীরগতিতে বা লো-ফ্রিকোয়েন্সিতে সাউন্ড হতে থাকে। যা আমরা শুনতে পাই না কিন্তু মশারা ঠিক টের পায়। ফল ব্যাটের কাছে চলে আসে। আর এলেই সেই ব্যাটের গা স্পর্শ করলেই কারেন্ট লেগে মশা মরে যায়। এই পদ্ধতিটি মানুষের কোনও ক্ষতি করে না। মশা মারার জন্য এই উপায় ভাল। তবে এই ব্যাট উন্নতমানের কেনা উচিত। সস্তার চাইনিজ ব্যাট ব্যবহার করবেন না।
  • ডিমের পেটি জ্বেলে মশা তাড়ানোর উপায় শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করে। তাই মশা তাড়াতে এই পদ্ধতি অবলম্বন করা একদমই উচিত নয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ