সাত থেকে ন’ঘণ্টা না হোক, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারফেক্ট ঘুম হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। নিত্য জীবনযাপনে ঠিক ঘুম না হওয়ার প্রভাবটা কিন্তু মারাত্মক। লিখছেন প্রীতিকা দত্ত।
কথায় বলে, সকালটা দেখলেই বোঝা যায় গোটা দিনটি আপনার কেমন যাবে! আর সেই ‘গুরুত্বপূর্ণ’ সকালটাকেই আরও ভাল করে তুলতে পারে রাতের ঘুম। তাই দিনের শুরু বলুন আর শেষ, রাতের ঘুমটাই যদি ঠিকঠাক না হয়, তাহলে সারা দিনটা যেন বরবাদ হয়ে যায়। তাই রাতে আট ঘণ্টার টানা ঘুম সবার খুব দরকার। সকালে উঠে ব্যায়াম করা, সঠিক খাদ্যাভাস বা স্বাস্থ্য রক্ষার মতোই রাতের ঘুমটাও হওয়া চাই এক্কেবারে ‘পারফেক্ট’।
কিন্তু সেটা করবেন কীভাবে?
সম্প্রতি হার্ভার্ড স্কুলের চিকিৎসক নিজেদের গবেষণায় দেখিয়েছেন রাতের আট ঘণ্টা ঘুমের গুরুত্ব। শুধু তাই নয়, সেই সঙ্গে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাতের ঘুম জীবন থেকে হারিয়ে গেলে তা আবার ফিরে পাবেন কী করে! গবেষণায় জানা গিয়েছে, রাতের ঘুমেই লুকিয়ে আছে ভাল থাকার রহস্য। ডায়াবেটিস থেকে শুরু করে উচ্চ রক্তচাপ, এমনকী স্হূলতা বা ‘ওবেসিটি’ থেকে হার্ট অ্যাটাক- ঘুম না হলে হতে পারে এই সব সমস্যাই। জানা গিয়েছে, রাতের ঘুম কম হলে নাকি ঠান্ডা লেগে সর্দি-কাশি হওয়ার প্রবণতাও থাকে বেশি। আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউরোলজির অধ্যাপক জ্যাসন ওনজ জানাচ্ছেন, “মানুষের খারাপ সময়ে তাঁর পাশে থাকার চেষ্টা করুন। তাঁকে ভালভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করুন। এই সাহায্য করার পিছনে যে ভাল লাগা লুকিয়ে থাকে, তা অন্য কোনও কাজ দিতে পারে না। যা অনেককেই রাতে ভালভাবে ঘুমোতে সাহায্য করে। তাই শুধু নিজের সঙ্গে নয়, সময় কাটান বন্ধুদের সঙ্গে। পারলে যতটা সম্ভব কম ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা করুন।”
হার্ভার্ডের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সাধারণ প্রাপ্তবয়স্কের জন্যে সাত থেকে নয় ঘণ্টার ঘুম খুবই দরকারি। কাজের চাপে ঘুমের সময়টা অবহেলা না করাই ভাল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রোজকার যাপনে কেউই সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমোচ্ছেন না। বেশির ভাগ দিনই ছয় ঘণ্টার কম ঘুমোচ্ছেন অধিকাংশ মানুষ। দিনদিন ঘুম কমে যাওয়ার কারণ হিসাবে বাঙালি মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “জীবনযাত্রায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। তাছাড়াও খাওয়া-দাওয়া, কাজের চাপ, সামাজিক চাপ, এক জায়গায় বসে একটানা কাজের অভ্যেস, মদ্যপান, বাঁধনহারা ধূমপান- সব কিছুই একটু একটু করে দায়ী। তার সঙ্গে এখন আবার যোগ হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখা।” তাহলে দুর্মূল্য এই রাতের ঘুম যে কাছে আসতে আসতেও আসে না, তাকে ধরবেন কীভাবে?
সংবাদ প্রতিদিন-এর এই প্রতিনিধিকে অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, যেভাবেই হোক মানসিক চাপ কমাতেই হবে। রাতে ঘুম না হওয়ার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রয়েছে মানসিক চাপের হাত। চাপ কাটাতে তাই এই মনোবিদের পরামর্শ, “যে কারণে ‘স্ট্রেস’ তা পুরোপুরি ভুলে যান, এটা বলা বৃথা। তবে চেষ্টা করুন, যতটা সম্ভব ভুলে থাকার। যে বিষয়ে আপনাকে এত ভাবাচ্ছে তা নিয়ে ভেবে ভেবে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে থেকে অযথা প্রহর গোনার বদলে ভেবে দেখুন কী কী কারণে এই চাপ! আর তা জেনে ফেলতে পারলেই কিন্তু অর্ধেক চাপ কুপোকাত।”
বাঙালি এই মনোবিদের মতো আমেরিকার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল স্কুলের চিকিৎসকরা রাতের ঘুম না হওয়া বা ইনসোমনিয়ার হাত থেকে বাঁচতে গবেষণায় বাতলেছেন বেশ কিছু উপায়ও।
এবার জেনে নিন সেগুলি:
চিকিৎসকরা আশাবাদী, এই ছোট ছোট পদক্ষেপগুলি করলে আপনি সহজেই যেতে পারবেন ঘুমের দেশে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.