মণিদীপা কর: মেঘ দেখে পেখম মেলে ময়ূর, আর তাতেই আকৃষ্ট হয়ে কাছে আসে ময়ূরী। এতো প্রজাতির বৈশিষ্ট্য। সাহিত্যে রয়েছে, মেঘ দেখেই নাকি মিলনাতুর হয়ে পড়তেন শ্রীরাধা। এমনই একাধিক উদাহরণ বলছে, বর্ষা মানেই মিলনের কাল। এক ছাতার তলায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করে ভেজার রোমাঞ্চে শিহরিত হয় যুগল। বর্ষার জলে সবুজ হয় প্রকৃতি, তেমনই যৌবনবতী হয় নারী। যদিও বিজ্ঞান কিন্তু ঠিক এর উলটো পথে হাঁটছে। বলছে, মেঘলা দিনে অবসাদ গ্রাস করে নারীর মনকে।
[ আরও পড়ুন: ‘তোমায় কী দেব উপহার?’ রইল বন্ধুকে খুশি করার জন্য একগুচ্ছ তালিকা ]
বিজ্ঞানীদের দাবি, মেঘলা দিন নারী মনের সমার্থক। ফরাসি গবেষকদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মেঘলা দিন ম্যাজম্যাজে মেজাজে কাটান মহিলারা। পাঁচশো মহিলার উপর সমীক্ষা চালিয়ে বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন, রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে যেখানে ২২ শতাংশ মহিলা চনমনে থাকেন, সেখানে মেঘলা দিনে ১৪ শতাংশেরও কম মহিলার কাছ থেকে সাড়া মেলে। এতো গেল মহিলাদের ‘মুড’ ওঠাপড়ার ব্যাখ্যা। মেঘলা আকাশের প্রভাব পড়ে পুরুষ শরীরেও। বিজ্ঞান বলছে, মেঘলা দিনে পুরুষ শরীরে কমে টেস্টোস্টেরন ক্ষরণ। সূর্যালোকের উপস্থিতি ও বেশ কিছু খাবারের পুষ্টিগুণে দেহে ভিটামিন-ডি তৈরি হয়। যা টেস্টোস্টেরন ক্ষরণ বৃদ্ধি করে। আর এই যৌন হরমোনের প্রভাবেই পুরুষ শরীরে বাড়ে যৌন কামনা। সূর্যালোক যত কমতে থাকে ততই নিভে আসে পুরুষের কামাসক্তি।
[ আরও পড়ুন: মহিলারা কখনও স্বামীকে এই কথাগুলি বলেন না, জানেন কেন? ]
ইংরেজিতে দুঃখ অর্থাৎ ‘স্যাড’কে বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করেছেন ‘সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসওর্ডার’ (এসএডি) বলে। বছরের নির্দিষ্ট কিছু ঋতুতে অবসাদ মনকে গ্রাস করে। সেই দুষ্ট ঋতুর তালিকায় রয়েছে বর্ষাকালও। মহিলাদের মধ্যে এই অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতাও অনেক বেশি। গবেষকরা বলছেন, সূর্যালোকের অভাবে মানুষের জৈব ঘড়ির ছন্দপতন হয়। ফলে মস্তিষ্ক থেকে সেরোটোনিন ক্ষরণ প্রভাবিত হয়। কম আলোয় মস্তিষ্ক থেকে সেরোটোনিনের ক্ষরণ কমে। ফলে যৌন উত্তেজনা প্রশমিত হয়। বিছানার সম্পর্ক ক্রমেই শীতল হতে থাকে। উলটোদিকে রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে সেরোটোনিনের ক্ষরণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষ-নারী সকলেই চনমনে হয়ে ওঠে। বৃষ্টিভেজা ঝাপসা দৃষ্টিতেই নাকি যৌন মিলনের স্বপ্ন দেখেন মহিলারা। যৌন হরমোনের অভাবে শরীর সাড়া দিক বা না দিক মনের কল্পনা নাকি চলতেই থাকে। সমীক্ষা বলছে, ৯৫ শতাংশ মহিলা বৃষ্টিতে চুম্বন কল্পনায় মগ্ন থাকেন।
ছবি: পিন্টু প্রধান