১৭ অগ্রহায়ণ  ১৪৩০  শনিবার ২ ডিসেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

এই গরমে ত্বকের যত্ন নিন, কী পরামর্শ চিকিৎসকদের?

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: June 8, 2017 4:43 pm|    Updated: July 11, 2018 12:43 pm

 Random use of cosmetics may pose serious danger to your skin

বিজ্ঞাপন দেখে দোকানে গিয়েই যেকোন ক্রিমটা কিনে ফেলার অভ্যেস! তাহলে এখনই সেই অভ্যেস পরিত্যাগ করাই শ্রেয়। কারণ এসব ওষুধে মিশ্রিত স্টেরয়েড ত্বকের কালচে ছোপ, একজিমা, ব্রণর সমস্যায় আরও ক্ষতি করে৷ এবিষয়ে সতর্ক করছেন কলম্বিয়া এশিয়া হাসপাতালের স্কিন স্পেশালিস্ট ডা. রথীন্দ্রনাথ দত্ত৷ মুখোমুখি সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানালেন নিজের স্বচক্ষে দেখা তিনটি ঘটনার কথাও।

ঘটনা এক: এই গরমে সারা মুখ ঢেকে এক ভদ্রমহিলাকে চেম্বারে ঢুকতে দেখে বেশ অবাক হলাম৷ মুখের ঢাকা সরিয়ে কাঁদো কাঁদো মুখে যখন গলা আর হাতের ভাঁজ দেখালেন চমকে গেলাম৷ একজিমায় ভরে গিয়েছে৷ জিজ্ঞাসা করে জানলাম, প্রায় বছরখানেক ধরে ত্বকের এই সমস্যায় ভুগছেন৷ প্রথমে নিজেরাই দোকান থেকে ওষুধ কিনে ব্যবহার করেছিলেন৷ প্রথমে ভালই কাজ হচ্ছিল৷ কিছুদিন পর রোগটা আবার ফিরে আসে৷ তারপর স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে আমার কাছে আসেন৷

ঘটনা দুই: টিনএজার মেয়েটার মুখ ব্রণয় ভরা৷ কয়েকটা তো ফোঁড়ার মতো বড় আর পুঁজে ভরা৷ এই অবস্থা হল কীভাবে জানতে চাওয়ায় ওর মা বললেন, অল্পসল্প ব্রণ ছিল, নানা অ্যান্টিবায়োটিক লোশন, ব্রণনাশক কসমেটিক্স লাগিয়ে আর নখ দিয়ে খুঁটে ব্যাপারটা বেড়ে গিয়েছে৷

[হিন্দু সংস্কৃতি নিয়ে ‘বিদ্রূপ’ আফ্রিদির, ভাইরাল ভিডিও]

ঘটনা তিন: বয়স ২৬৷ ছেলেটার মাথা থেকে কপাল পর্যন্ত শুকনো ফাটা ফাটা চামড়া৷ খুসকির মতো সাদা খোসায় ভরে আছে মাথা ও কপাল৷ দেখেই বুঝলাম ক্রনিক সোরিয়াসিস, দীর্ঘদিনের সমস্যা৷ এতদিন কি চিকিৎসা হয়নি! কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ ছেলেটি জানাল যে সে নিয়মিত খুসকিনাশক ভেষজ শ্যাম্পু ব্যবহার করে৷ এমনকী আয়ুর্বেদিক ওষুধও খায়৷ তাও সারছে না৷

উপরোক্ত এই তিনটি ঘটনা কিন্তু বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়৷ আসলে ত্বক বা স্কিনের সমস্যা হলে অনেকেই প্রথমদিকে নিজে দোকান থেকে ওষুধ কিনে ব্যবহার করেন৷ বিভিন্ন মলম, লোশন ওষুধ এমনকী স্টেরয়েড ওষুধ ব্যবহার করতেও দ্বিধা করেন না৷ তার উপর হাতুড়ে আর নকল ডাক্তারদের ম্যাল  প্র্যাকটিস তো আছেই৷ সত্যি কথা বলতে কী, স্কিনের সমস্যা যেহেতু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাণহানিকর নয়, তাই এই সমস্যা নিয়ে সেলফ মেডিকেশন আর কোয়াক ডাক্তারদের রমরমা বেশ জাঁকিয়ে চলে৷ তবে এখন মানুষের সচেতনতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ট্রেন্ড কিছুটা হলেও কমেছে৷

[শুধু পর্দায় নয় পর্দার বাইরেও তিনি ওয়ান্ডার উওম্যান, জানেন কেন?]

ত্বক হল আমাদের শরীরের সব থেকে বড় অঙ্গ৷ বাইরের ঝড়ঝাপটা থেকে প্রাথমিকভাবে শরীরকে রক্ষা করে৷ তাই দুনিয়া যখন হাতের মুঠোয়, তখন অহেতুক ভুল ধারণা পুষে রেখে সমস্যা বাড়ানোর কোনও যুক্তিই নেই৷

একজিমা ফেলে রাখবেন না: ত্বকের এই অসুখটি নিয়ে অনেকের মনেই নানা ভুল ধারণা আছে৷ সাধারণত গলা, কনুই, হাতের ভাঁজ, হাঁটুর খাঁজ বা পায়ের পাতায় কিছু অংশে লাল হয়ে ফুলে ওঠে ও ভয়ানক চুলকায়৷ সঠিক চিকিৎসা না করালে ত্বক পুরু ও খসখসে হয়ে যায়৷ আর রোগ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তো থাকে৷ রোগ ধরা পড়লেও অনেকে সারাতে চান না৷ কেন না একজিমা সারলে নাকি হাঁপানি হয়৷ বলাই বাহুল্য এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা৷ তবে ত্বকের এই ক্রনিক অসুখের চিকিৎসা কিছুটা সময়সাপেক্ষ৷ আরও একটা কথা জেনে রাখুন একজিমা আদৌ ছোঁয়াচে নয়৷ তাই রোগকে দূরে রাখুন, রোগীকে নয়৷

ব্রণর বিড়ম্বনা থেকে বাঁচুন: বয়ঃসন্ধিতে সূত্রপাত হলেও ব্রণ মাঝবয়সেও ভোগাতে পারে৷ টিনএজার ছেলেমেয়েরা ব্রণর সমস্যা নিয়ে ভয়ানক বিব্রত হয়ে পড়ে৷ এমনকী ব্রণর কারণে অনেকে ডিপ্রেশনেও ভোগে৷ অথচ শুরুতে এটা ওটা না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চললে সমস্যায় পড়তে হয় না৷ কিন্তু যাদের বেশি ব্রণ হয়, তাদের অবশ্যই ডাক্তার দেখানো দরকার৷ নানা ধরনের ব্রণ হতে পারে৷ আবার যেসব মেয়ে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমের শিকার তাদেরও ব্রণ নিয়ে ভুগতে হয়৷ এক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা করা জরুরি৷

খুসকিকে আটকাবেন কীভাবে: একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের মাথায় গড়ে লাখ দেড়েক চুল থাকে৷ কারও কিছু বেশি, কারও কম৷ যাদের মাথাজোড়া টাক তাদের কথা আলাদা৷ চুলের আয়ু গড়ে আটবছর৷ তাই আট বছর বয়সের পর থেকে নিয়মিত কিছু চুল ঝরতেই থাকে৷ এটা স্বাভাবিক৷ আর একই সঙ্গে নতুন চুল গজাতে থাকে৷ চুল ঝরার একটা বড় কারণ খুসকি৷ বেশিরভাগ
ক্ষেত্রেই সামান্য চিকিৎসাতেই খুসকি সেরে যায়৷ কিন্তু ভুলভাল শ্যাম্পু আর লোশন সমস্যা জটিল করে তুলতে পারে৷ অনেক সময় মাথার ত্বকে সোরিয়াসিস নামক ক্রনিক অসুখেও খুসকির মতো উপসর্গ দেখা দেয়৷ নির্দিষ্ট কারণ জেনে সঠিক চিকিৎসা করিয়ে নেওয়াই ভাল৷ ত্বক ও চুল ভাল রাখতে মন ভাল রাখা দরকার৷ আর প্রয়োজন সঠিক ডায়েট৷ ত্বকের যত্ন নিন, আর ভাল থাকুন৷

[ফতিমার এই ছবি দেখলে আপনি তাঁর প্রেমে পড়তে বাধ্য]

যোগাযোগ: ৯৪৩৩০০৬২২৫

আরও জানতে ক্লিক করুন এই লিঙ্কে

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে