সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফ্যাশনের সূত্রে সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন। সুতোর টানে মিলে যায় কৃষ্টি। ভাবনার আকাশ পেরিয়ে যায় দেশের পরিসীমা। তৈরি হয় সেতু। হয়তো অজান্তেই। নানা দেশের শিল্প যখন ফ্যাশনের জমিতে এক হয়ে ওঠে তখনই তৈরি হয় অভূতপূর্ব সংযোগের সেতু। ঠিক এমনটাই ভাবনা ছিল ডিজাইনার সৌমি নন্দীর। আর সেই রঙিন ভাবনা ডানা মেলল ক্যালিফোর্নিয়ায়। রুং-এর আয়োজনে ফ্যাশন ও শিল্পের প্রদর্শনী কুর্নিশ আদায় করল প্রবাসী ভারতীয়দেরও।
শাড়ির জমিতে চর্যাপদের স্ক্রিপ্ট। আর সেই শাড়ি যাঁদের গায়ে উঠল তাঁরা একজন বিদেশিনি। ফিউশন পর্ব কিন্তু এতটা বাহ্যিক উপায়েই শেষ করেননি ডিজাইনার। তাঁর ভাবনার আকাশের বিস্তৃতি বহুদূর। ফলত তাঁর কাজে মিশেছে একাধিক দেশের শিল্পরীতিও। কলকাতাতে ইতিমধ্যে এই কাজের প্রদর্শনী হয়েছে। শিল্পরসিক শহরবাসী তার কদরও করেছে। তবে সেখানেই থেমে থাকতে নারাজ ‘রুং’। তাই এবার প্রদর্শনীর পালা ক্যালিফোর্নিয়ায়। দেশের ফ্যাশন, ফিউশন ও সীমানা পেরনো সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনের তাই চালচিত্র হয়ে উঠল এই প্রদর্শনী।
[ অক্ষরে আঁকা রবীন্দ্রনাথ, অভিনব প্রদর্শনী শহরে ]
রুং-এর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর তথা মডেল অস্মিতা ভাদুড়িও প্রবাসী ভারতীয়দের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে দারুণ খুশি। বললেন, “খুব ভাল সাপোর্ট পেয়েছি। গোড়া থেকেই সকলে এই প্রয়াসের পাশে ছিলেন। তবে ভারচুয়ালি সাপোর্ট নয়। সকলে এসে এই উদ্যোগকে উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন।”
আসলে এই উদ্যোগ শুধু শিল্পের খাতিরে শিল্প হয়েই থাকেনি। ছুঁয়ে গিয়েছে মানবিক ভূমি। ঝাঁ-চকচকে ফ্যাশন দুনিয়া মানেই গ্ল্যামার-গ্লিৎজের চলকে পড়া আলো। তবে এমন অনেকেই থাকেন যাঁদের কাছে সে আলো মাখার সুযোগ হয় না। ‘দ্য আর্টস অফ রানওয়ে’র সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেই পরিসর তৈরি করল ‘রং’। তাই ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্তরাই হয়ে উঠলেন এই প্রদর্শনীর মুখ। তাঁরাও যে জীবনের মূলস্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন নয়, বরং আমাদেরই সমাজের আর পাঁচজনের মতোই একজন, সেই বার্তাটি চারিয়ে দেওয়া হল এই প্রদর্শনীর মাধ্যমেই। শিল্প যখন এভাবে মানবিকতাকে স্পর্শ করে তখন অন্য মাত্রা পায়। সেই ছবিই ধরা পড়ল এই প্রদর্শনীতে।
আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের আরও ছড়িয়ে দিতে উগ্যোগ নিয়েছে সংস্থা। আর কিছুদিনের মধ্যেই চলে আসবে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট। যেখান থেকে সারা বিশ্বের মানুষ কিনতে পারবেন তাঁদের পছন্দের জিনিস।