সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাজার মন্দা। আর সেই কারণেই এ দেশ থেকে ব্যবসা গোটাতে চাইছে টেলিকম সংস্থা ভোডাফোন। সম্প্রতি এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ নিক রিড। এর জন্য সরকার মাত্রাতিরিক্ত করকে দায়ি করেছেন তিনি। তবে স্বস্তির কথা এখনই ভোডাফোন ভারত ছাড়ছে কিনা, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনও বার্তা দেননি তিনি।
কেন্দ্রীয় সরকার যখন দেশের উন্নয়ন তুলে ধরতে ব্যস্ত, তখন ভোডাফোনের মতো এক নামী টেলিকম সংস্থার দেশছাড়ার খবরে প্রশাসনের উপর বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিল। এমনিতেই জিও আসার পর থেকেই ব্যবসা কমছে ভোডাফোনের। গত কয়েক মাসে চূড়ান্ত লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছে সংস্থাকে। তারপরই এক সংবাদসংস্থা জানায়, এবার নাকি ভারত থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে চাইছে ব্রিটিশ টেলিকম সংস্থা। প্রতিমাসে ব্যাপক লোকসানের দায় সামলানোর চেয়ে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ায় শ্রেয় মনে করছে সংস্থা। ওই সংবাদসংস্থা এও দাবি করে, গত কয়েক মাসে কয়েক লক্ষ গ্রাহক কমে গিয়েছে ভোডাফোনের। সংস্থার সঙ্গী আইডিয়ারও একই অবস্থা। দুটি সংস্থাই প্রচুর লোকসানের মুখ দেখছে। যার জেরে একপ্রকার বাধ্য হয়েই ভারতের বাজার ছাড়ছে একসময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় টেলিকম সংস্থা।
[ আরও পড়ুন: এই সব স্মার্টফোনে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করলেই হু হু করে কমছে ব্যাটারির চার্জ! ]
হাওয়ার গতিতে ছড়িয়ে পড়ে সেই খবর। রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন লক্ষ লক্ষ ভোডাফোন গ্রাহক। কিন্তু সব গুজব উড়িয়ে ভোডাফোন জানায়, ব্যবসা গোটানোর খবর ভুয়ো এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সংস্থার প্রতি বিদ্বেষ থেকেই এমনটা ছড়ানো হয়। কিন্তু মঙ্গলবার সংস্থার চিফ এগজিকিউটিভ নিক রিডের বক্তব্য তাতে মলম লাগানো তো দূরের কথা, আশঙ্কা শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, সরকার মাত্রাতিরিক্ত কর ও চার্জ নেওয়া না বন্ধ করলে ভারতে ভোডাফোনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়তে পারে।
২০১৮ সাল থেকে যৌথভাবে ব্যবসা শুরু করে ভোডাফোন ও আইডিয়া। কিন্তু তারপর থেকে সংস্থা আর লাভের মুখ দেখেনি। চড়া কর এবং সর্বোপরি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ফলে কার্যত দিশেহারা এই সংস্থা। গত ২৫ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে বলা হয়, ভোডাফোন-আইডিয়াকে লাইসেন্স ফি এবং স্পেকট্রামের দাম বাবদ অতিরিক্ত প্রায় ৩৯ হাজার কোটি টাকা মেটাতে হবে। তাও আবার তিন মাসের মধ্যে। যা এই সংস্থার উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে। এরপরই জল্পনা ছড়ায় ব্যবসা গোটাতে চাইছে ব্রিটিশ টেলিকম সংস্থা। পরিস্থিতি এতটাই সঙ্গীন, যে ভোডাফোন কেন্দ্রের কাছে আর্থিক ত্রাণের আর্জি জানিয়েছে। তবে তা খারিজ হলে কী হবে, সে নিয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি নিক।