সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এপ্রিল মাস এলেই চাকরিজীবীদের মনে জাগে আশার আলো। স্যালারি স্লিপে হয়তো বেতনের অঙ্কটা বাড়বে। আশাপূরণ হলে মুখের হাসি চওড়া হয় ঠিকই। কিন্তু তার আয়ু দীর্ঘস্থায়ী হয় না। কারণ যার যত আয়, তার তত ব্যয়। অর্থাৎ আয় বাড়লেও দিনের শেষে দেখা যায় পকেট সেই খালি। জমাবো জমাবো ভাবলেও আর হয়ে ওঠে কই! কিন্তু ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয়ও জরুরি। তাহলে উপায়? কীভাবে খরচ বাঁচিয়ে মাসের শেষে সামান্য হলেও অর্থ সঞ্চয় করা সম্ভব? এ নিয়ে খুব বেশি ভেবে মাথা খারাপ করার প্রয়োজন নেই। জীবনের আটটি অভ্যেস বদলে ফেলতে পারলে অনেকটাই অর্থ বেঁচে যাবে। কী সেই অভ্যেসগুলি? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
১. অনেকে একটি সস্তার জিনিস কিনে সেখান থেকে কিছু অর্থ বাঁচানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ওই যে কথায় আছে সস্তার তিন অবস্থা। দু’দিন পরই তা অকেজ হয়ে যায়। ফলে আবার তার পরিবর্ত নিয়ে আসতে হয়। এবার ভাবুন, আর একটু বেশি টাকা দিয়ে যদি ভাল জিনিসটি কিনতেন তাহলে দ্বিতীয়বার কেনার ঝক্কি যেমন থাকত না, তেমনই টাকাও বাঁচত অনেকটা। তাই ভেবে-চিন্তে খরচ করুন। টাকা বাঁচানোর চক্করে হিতে বিপরীত না হয়।
[বাড়িতে পোষা কুকুর, বিড়াল আছে? জানেন নিজের কী ক্ষতি করছেন?]
২. সংসারে নানা টুকরো কাজ থাকে। যার জন্য প্রায়ই আমরা অন্যের উপর নির্ভর করে থাকি। এই যেমন, সামান্য জলের কলে ফাটল কিংবা লাইটের তার বিচ্ছিন্ন হওয়ার মতো কাজের জন্য লোক ডাকতে হয়। ভাবুন তো এসব ছোটখাটো কাজ নিজের জানা থাকলে কতটা টাকা বেঁচে যাবে!
৩. বাজারে বেরলে বুঝে-সুঝে খরচ করুন। হিসেব করে নিন কোন জিনিসগুলি না কিনলেও চলবে। এমন অনেক জিনিসই কেনা হয়ে যায়, যা বাড়িতে আনার পর পড়েই থাকে। একবার এমনটা হলে পরেরবার আর এই ভুল নিশ্চয়ই করবেন না। আর তাতেই সঞ্চয়ের পরিমাণ বাড়বে।
৪. অর্থ উপার্জন করবেন, অথচ জীবনকে একটু উপভোগ করবেন না, তাও কি হয়? বন্ধুদের সঙ্গে পার্টি করা বা ঘুরতে যাওয়া সবই চলুক। কার্পণ্যের প্রয়োজন নেই। কিন্তু সেসবই করুন একটু পরিকল্পনা করে। যেমন ধরুন বন্ধু বা পার্টনারের সঙ্গে দামী কোনও রেস্তরাঁয় গিয়ে একগুচ্ছ অর্থ খরচ না করে বাড়িতেই বাইরের খাবার কিনে পার্টির আয়োজন করে ফেলুন। এতে নিঃসন্দেহে আনন্দও দ্বিগুণ হবে। একইভাবে ঘুরতে গেলে যদি কোনও গ্রুপের সঙ্গে যান, তাহলে অনায়াসেই খরচ ভাগ হয়ে যায়।
[মনের মানুষকে প্রেম নিবেদনের আগে এই ৬টি বিষয় মাথায় রাখুন]
৫. ডেবিট কার্ড কিংবা ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে প্রতিটি লেনদেনে নজর রাখুন। মোবাইল ব্যাংকিং কিংবা ই-মেলের মাধ্যমে সমস্ত স্টেটমেন্ট বাড়ি বসেই পেয়ে যাবেন। যাতে পরবর্তী খরচের একটা হিসেব করে নিতে পারবেন অনায়াসেই। কিন্তু নিয়মিত অ্যাকাউন্টে নজর না রাখলে খরচের হিসেব রাখাই কঠিন হয়ে যায়।
৬. টানা কাজ করার পর সপ্তাহান্তে ছুটির দিনে আর রান্নাবান্না করার ইচ্ছে নাই করতে পারে। সেক্ষেত্রে দু’দিনের রান্না একেবারে করে রাখতে পারেন। তাহলে আর আলাদা করে বাইরে থেকে আনা খাবার খাওয়ার ইচ্ছে থাকে না। এতে শরীর ও পকেট দুইই সুস্থ থাকে।
৭. ব্যাংকে রেকারিং কিংবা পোস্ট অফিসে এমআইএস-এর মাধ্যমে অল্প অল্প করে সঞ্চয় করুন। বছর ঘুরলে সেই সঞ্চয়ের পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়ানোর চেষ্টা করুন। কোন স্কিমে অর্থ রাখলে তা ফলপ্রসূ হয় আগে বিস্তারিত জেনে নিন। তারপর অর্থ জমান।
৮. কোনও জিনিস কেনার আগে সময় সুযোগ পেলেই নিজেকে পাঁচটা প্রশ্ন করুন। এটা প্রয়োজন নাকি চাহিদা? জিনিসটা কি খুব দরকারি? জিনিসটা কি আমি আদৌ ব্যবহার করব? কখন কখন ব্যবহার করব? কিনে কি লাভ হবে?