সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শৈশবে যৌন নির্যাতনের ঘটনা শিশুমনে গভীর প্রভাব ফেলে। এমনিতেই শিশুদের বলা কথায় পরিবারের বড়রা খুব একটা গুরুত্ব দেয় না। স্বাভাবিকভাবেই সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলে নির্যাতিত শিশু। দিনের পর দিন চলতে থাকে নির্যাতন। এই যন্ত্রণাময় বাস্তব থেকে বেরিয়ে আসার কোনও পথ পায় না ছোট্ট মন। পাল্লা দিয়ে মনের মধ্যে চেপে বসতে থাকে অসহায়ত্ব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে। অন্যদিকে মনের গোপন কুঠুরিতে বন্দি থাকা অসহায়ত্ব বদলে যায় হতাশায়। পড়াশোনা, কেরিয়ার, স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় অতীতের যন্ত্রণাময় স্মৃতি। নতুন কোনও পদক্ষেপ নিতে গেলেই দরজায় করা নেড়ে অসহায়ত্ব তার উপস্থিতি জানান দেয়। আশার আলো দেখার আগেই ফের হতাশা গ্রাস করে।
এই হতাশাকে চিহ্নিত করার বেশ কয়েকটি উপায় আছে। হতাশার কুয়াশা থেকে বেরিয়ে আসারও চিকিৎসা রয়েছে বলে দাবি করেছে একটি জার্নাল।সময়মতো যদি চিকিৎসা না হয়, তাহলে যুবক বা যুবতীর পরবর্তী জীবনটা বিফলেই যাবে। হতাশা থেকে আত্মহত্যার প্রবণতাও জন্মাতে পারে। একইভাবে হতাশা থেকে নিরাসক্ত জীবনদর্শনেও অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেন তরুণ-তরুণীরা। নেদারল্যান্ডসের ভি ইউ ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টারের তরফে একথা জানিয়েছেন ইলসে উইলার্ড।
গবেষণা বলছে, প্রাপ্তবয়স্ক তরুণ-তরুণীর মনের ভাব বোঝার চেষ্টা করুন। আগামী জীবন নিয়ে তাঁরা কী ভাবছেন, কী করতে চাইছেন। কেমনভাবে কেরিয়ার তৈরি করতে চাইছেন বন্ধুর মতো ব্যবহার করে জানার চেষ্টা করুন। ওই একই বয়সি কোনও ছেলে মেয়ে যদি এসবের ভাবনার বাইরে থাকতে চায়, তাহলে কারণ জানার চেষ্টা করুন। কেন সে তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত নিয়ে ভাবছে না, সবার থেকে কেনই বা দূরে দূরে থাকতে চাইছে। হতাশার মূলটুকু খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন। তারপর কিছু বুঝতে না দিয়েই সস্নেহে সেই মূলটুকু উপড়ে ফেলার চেষ্টা করুন। মনোবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। দেখবেন দুজনেই একসঙ্গে নতুন দিনের সূর্য ওঠা দেখছেন। যেখানে কোনও নির্যাতনের করাল ছায়া নেই। নেই হতাশার হাতছানি। একইভাবে বাড়ির সর্বকনিষ্ঠ শিশুটিকে গুরুত্ব দিন। সে কেন নির্দিষ্ট কারোর সঙ্গেই খারাপ আচরণ করছে বা নির্দিষ্ট একজনকে কেনই বা ভয় করছো বোঝার চেষ্টা করুন। আচমকাই ছটফটে শিশুটি কেন চুপচাপ হয়ে গেল খোঁজ নিন। অযথা মারধর, বকাবকি করবেন না। শৈশবেই যদি বিপদকে চিহ্নিত করতে পারেন। তাহলে আপনার শিশুর নিস্পাপ কৈশোর আর অন্ধকারে হারিয়ে যাবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.