সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: নতুন দার্জিলিং গড়তে আরও একটি পদক্ষেপ জিটিএ-এর। এই উদ্দেশ্যে ১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে জিটিএ। এখন থেকে শুধু ‘ম্যাল’ নয় পাশাপাশি চৌরাস্তাতেও পর্যটকেরা বসে উপভোগ করতে পারবেন কাঞ্চনজঙ্ঘায় সূর্যাস্ত। সঙ্গে গাড়ি পার্কিং থেকে দু’দণ্ড জিরিয়ে নেওয়ার বসার বন্দোবস্ত। সঙ্গে চা-কফি মিলবে থেকে মিলবে সমস্ত রকম বিনোদনের সুবিধা। থাকবে রঙ্গমঞ্চও, সেখানে গান বাজনার বোহেমিয়ান সংস্কৃতির স্বাদ নিতে পারা যাবে।
[শিয়ালে খোবলানো গাজোলের শিশুর ঠিকানা হবে মার্কিন মুলুক]
শহরের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে এবং শহর থেকে ঘিঞ্জি কমাতে উদ্যোগী জিটিএ দার্জিলিং শহরের চৌরাস্তা থেকে কংক্রিটের জঙ্গল সরিয়ে তাতে প্রাকৃতিক স্পর্শ আনতে চলেছে তারা। এ জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১২ কোটি টাকা। মাস্টার প্ল্যান তৈরি সারা। এখন শুধুই কাজ শুরুর অপেক্ষা। উদ্যোগ সফল হলে গোটা শহরের ছবির অনেকটাই বদলে যাবে বলে মনে করছেন জিটিএ প্রধান থেকে শুরু করে দার্জিলিংকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহ করা কয়েক হাজার মানুষ। দার্জিলিং শহরের এই মুহূর্তে একমাত্র সময় কাটানোর জায়গা দার্জিলিং ম্যাল এলাকা। ক্রমশ কমছে দার্জিলিংয়ের ব্র্যান্ড ভ্যালু। এই আশঙ্কা থেকেই শহরের প্রাকৃতিক স্পর্শ ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে জিটিএ। ইতিমধ্যে রাজ্যের সঙ্গে কথা বলে পর্যটন দফতরের পরামর্শে কংক্রিট সরিয়ে প্রাকৃতিক আবহ তৈরি করতে চাইছে তারা। একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে নকশা তৈরি করা হয়েছে। ওই সংস্থার তরফে দীপন লামা জানান, তাঁদের উদ্দেশ্য ওই এলাকা থেকে যত বেশি সম্ভব জায়গা বের করে সুষ্ঠুভাবে পর্যটক ও সাধারণ মানুষ যাতে ঘোরাফেরা করতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা করা এবং আরও বেশি করে যাতে প্রাকৃতিক রোদ বাতাস এলাকায় খেলা করে তার স্থায়ী বন্দোবস্ত করা। দু’টি পর্যায়ে এই সংস্কারের কাজ চলবে বলে জিটিএ-এর তরফে জানানো হয়েছে।
[বিশ্বজয়ী ঈশানের বোনকে বিয়ে করতে হাজির যুবক, চন্দননগরে শোরগোল]
জিটিএ বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাং বিষয়টি নিয়ে আশাবাদী। তার মত, “দার্জিলিং পাহাড়ের রানি। ফলে অন্য জায়গাগুলি যতই উঠে আসুক না কেন, একে কেন্দ্র করে গোটা পাহাড়ের অর্থনীতি নির্ভর করে বলে একে রক্ষণাবেক্ষণ করে সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন করতে না পারলে পাহাড়ের মূল আকর্ষণই মার খাবে। সে কারণেই এই উদ্যোগ। প্রথম পর্যায়ে ইভেন্টের এলাকা থেকে দার্জিলিং পুলিশ সুপারের বাংলো পর্যন্ত এলাকা বৃদ্ধি করা হবে। চৌরাস্তা থেকে দু’দিকেই পরিসর বাড়ানো হবে। এমনভাবে তা করা হবে, যাতে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দেখা যায়। পার্কিংয়ের জন্য যেন আলাদা জায়গার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অন্তত ষাটটি গাড়ি যাতে পাশাপাশি রাখা যায় সেই ব্যবস্থা করা হবে। ওই এলাকায় রাস্তায় কোনও রকম যানজট করতে দেওয়া হবে না। এই মুহূর্তে সেখানে কোনও পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই অন্যদিকে চৌরাস্তা থেকে মহাকাল মন্দির পর্যন্ত পঞ্চাশ হাজার বর্গমিটার এলাকা থেকে বাড়িয়ে দেড় লক্ষ বর্গমিটার করা হবে। এই মুহূর্তে চৌরাস্তা এলাকা এতটাই ব্যস্ত, যে হেঁটে যাতায়াত করতে চাইলে তাদের পক্ষে ওই এলাকা দিয়ে যাতায়াত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে।