BREAKING NEWS

১৬ চৈত্র  ১৪২৯  শুক্রবার ৩১ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

এই মন্দিরে সশরীরে দর্শন দেন দেবী কালী!

Published by: Sangbad Pratidin Digital |    Posted: October 29, 2016 5:46 pm|    Updated: April 10, 2019 1:51 pm

Jwalamukhi Temple Of Himachal Pradesh, Where Goddess comes alive

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দত্তকুলোদ্ভব এক যুবক তখনও বিশ্বাসে উপনীত হয়নি। একরাশ অবিশ্বাস নিয়েই একদিন সে ছুটে গিয়েছিল দক্ষিণেশ্বরে। জিজ্ঞাসা করেছিল পাগলা ঠাকুরকে- “আপনি ঈশ্বরকে দেখেছেন?” রামকৃষ্ণ পরমহংসের উত্তর ছিল অনায়াস- “হ্যাঁ, দেখেছি! তোমাকেও দেখাতে পারি!” এভাবেই গুরুর হাত ধরে দেবী কালীকে সশরীরে দর্শন করেছিলেন নরেন্দ্রনাথ দত্ত। তখনও তাঁর স্বামী বিবেকানন্দ হয়ে ওঠা বাকি!
তবে, সাধারণ মানুষের জন্য রয়েছে অন্য পন্থা। পাহাড়ি পথের খোঁজ। সেই পাহাড়ি পথ বেয়ে যদি পৌঁছানো যায় হিমাচল প্রদেশের কাংড়ায়, তাহলেই দেবী কালীর সাক্ষাৎ দর্শন মিলবে। জ্বালামুখী মন্দিরে।

jwalamukhi1_web
জ্বালামুখী মন্দিরের জ্যোর্তিময়ী দেবী কালী

তবে, দেবীকে সশরীরে চোখের সামনে দেখার আগে একটি গূঢ় রহস্যভেদ প্রয়োজন। হিন্দু ধর্মশাস্ত্র বলছে, অগ্নি হচ্ছে স্বয়ং ঈশ্বর বা শিব। আর তাঁর জিহ্বা বা জিভ হলেন প্রকৃতি বা শক্তি। “কালী করালী চ মনোজবা চ সুলোহিতা যা চ সুধূম্রবর্ণা/স্ফুলিঙ্গিনী বিশ্বরূপী চ দেবী লোলায়মানা ইতি সপ্ত জিহ্বা।“ অর্থাৎ কালী, করালী, মনোজবা, সুলোহিতা, সুধূম্রবর্ণা, স্ফুলিঙ্গিনী এবং বিশ্বরূপী- এই সাতটি অগ্নির জিহ্বা। তার মধ্যে কালী হলেন অগ্নির সপ্তম জিহ্বা। হিমাচলের জ্বালামুখী মন্দিরে এই সাতটি অগ্নিশিখারূপেই ভক্তের চোখের সামনে ধরা দেন দেবী কালী।
কাংড়ার এই মন্দির ঘিরে জিহ্বারহস্যের আরও এক স্তর উদঘাটন করেছে নানা গ্রন্থ। সেই সব গ্রন্থমতে, জ্বালামুখী মন্দির একান্নটি সতীপীঠের অন্যতম। এখানেই পতিত হয়েছিল সতীর জিহ্বা। তাই দেবী এখানে অবস্থান করেন সিদ্ধিদা রূপে, তাঁর ভৈরব উন্মত্ত। জিহ্বা পতিত হয়েছিল বলে অগ্নিময় জিহ্বারূপেই ভক্তদের দর্শন দেন দেবী। সেই সাতটি অগ্নিশিখা বস্তুত অনির্বাণ। শতাব্দীর পর শতাব্দী সেই অগ্নিশিখা জ্বলছে। একবারের জন্যও তা নেভেনি। অনেকে বলে থাকেন, ওই অনির্বাণ অগ্নিশিখা পর্বতজাত প্রাকৃতিক গ্যাসের আগুনে রূপান্তর। ভারত সরকার সেই রহস্যভেদের জন্য গবেষণাও চালায়। কিন্তু, ওই পাহাড়ে কোনও প্রাকৃতিক গ্যাসের অস্তিত্ব মেলেনি।

jwalamukhi2_wgeb
দেবীর চরণপদ্ম

জনশ্রুতি বলে, জ্বালামুখী দেবীর এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন কাংড়ার রাজা ভূমিচাঁদ। বিষ্ণুচক্রে কর্তিত হওয়ার পর সতীর জিহ্বা অগ্নিশিখারূপে এই পর্বতে অবস্থান করতে থাকে। কিন্তু, লোকচক্ষুর অগোচরে। এক রাতে রাজাকে স্বপ্নাদেশ দেন স্বয়ং দেবীই! জানিয়ে দেন, তিনি কোথায় রয়েছেন। অতঃপর, মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন রাজা ভূমিচাঁদ। যা আজও পূর্ণ মহিমায় উজ্জ্বল।
অতএব, দেবীকে সশরীরে দর্শন করতে চাইলে গন্তব্য অবশ্যই হোক হিমাচল প্রদেশের কাংড়ার জ্বালামুখী মন্দির। এবছরের কালীপুজোয় না হলেও বছরের যে কোনও সময়েই সেরে নেওয়া যায় দেবীদর্শন। সারা দিন-রাত এই মন্দিরে দেবীর আরতি করা হয়। তা মনকে আশ্চর্য প্রশান্তি দেবে। প্রশান্তি দেবে ধৌলাধর পর্বতশ্রেণির প্রেক্ষাপটও।
কী ভাবে যাবেন: জ্বালামুখী মন্দিরে আসতে হলে ধরমশালা হয়ে আসাই ভাল! ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনস্-এর তিন, চারটি বিমান প্রতিনিয়ত যাতায়াত করে ধরমশালায়। সেখান থেকে গাড়িতে পৌঁছে যান কাংড়ার জ্বালামুখী মন্দিরে।
ট্রেনে এলে নামুন পাঠানকোটে। সেখান থেকে গাড়িতে ১২৩ কিলোমিটার পথ পেরোলেই দেবীদর্শন নিশ্চিত।
কোথায় থাকবেন: জ্বালামুখী মন্দির ঘিরে হোটেল, ধর্মশালার অভাব নেই। এখানে এসে পকেটসই ঘর খুঁজে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে