প্রতীকী
কোয়েল মুখোপাধ্যায়: আচ্ছা, জেলের ভিতর রামের মতো ‘লক্ষ্মী’ ছেলে হয়ে থাকলে কী হয়? কেন? তাড়াতাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়।আর রাখালের মতো ‘দুষ্টু’ ছেলে হয়ে থাকলে? কেন? গারদে বসে পচতে হয়।
আর যদি কেউ প্রথমে ‘রাখাল’ থাকে, কিন্তু পরে ‘রাম’ হয়ে যায়? এ দেশে কী হয়, জানা নেই। তবে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া এবং এসিটির জেলখানা হলে পেয়ে যেতে পারেন আলাদা একখানি কক্ষ। সঙ্গিনীকে নিয়ে সেখানে কাটিয়ে ফেলতে পারেন একান্ত কিছু উষ্ণ মুহূর্ত। মেতে উঠতে পারেন উদ্দাম শরীরি খেলার চরম আনন্দে। আর পলকে রাঙিয়ে নিতে পারেন ভাগ্যের ফেরে জেলের কুঠুরিতে আপনার ‘এন্ট্রি’ ইস্তক অতিবাহিত করা সাদাকালো, বোরিং ‘লাইফ’।
হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও অস্ট্রেলিয়ার জেলে ‘লক্ষ্মী’ হয়ে থাকা কয়েদিদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছে বিশেষ ধরনের একটি ‘সেক্স সেল’-এর। সাধারণ কুঠুরির সঙ্গেই লাগোয়া থাকছে এই সেল। যদি জেল কতৃর্পক্ষ এবং পুলিশরা দেখেন, কারাবাসে থাকা কোনও বন্দির আচরণে উল্লেখজনক এবং ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, সে ধীরে ধীরে অপরাধের করাল ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে, সুস্থ পথে জীবন কাটাতে শুরু করেছে, তাহলে সেই কয়েদি অচিরেই পেয়ে যেতে পারেন একটি রাতের জন্য ওই ‘সেক্স সেল’-এ থাকার ‘বাম্পার’ সুযোগ। তবে শর্তসাপেক্ষে।
তা কী সেই শর্ত? হয় কয়েদিকে সংসারী হতে হবে। বা থাকতে হবে দীর্ঘদিনের কোনও প্রেমিকা। নির্দিষ্ট তথ্যপ্রমাণ দেখাতে পারলে, তবেই সেই জেলবন্দি মানুষটি তাঁর স্ত্রী বা প্রেমিকাকে নিয়ে ওই সেলে ‘এন্ট্রি’ পাবেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, হঠাৎ করে কয়েদিদের জন্য এই ‘হট অফার’-এর বন্দোবস্ত করার কারণ কী? দুনিয়ায় অন্য কোনও জেলখানায় তো এইভাবে কয়েদিদের ‘ফ্রি’তে শরীর আর মনের ‘ফুল রিচার্জ’-এর ব্যবস্থা মেলে না! তাহলে এইখানে কেন? উত্তরে, ভিক্টোরিয়ার সংশোধনাগারের মুখপাত্র কোর্টনি ক্রেনের যুক্তি, “ব্যাপারটা যতটা শুনতে সহজ লাগছে, বাস্তবে তা নয়। আমরা প্রত্যেক কয়েদির আচরণ এবং জীবনযাপন খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করি। তারপরই তাকে রেফার করা হয়। দাগী অপরাধীদের ক্ষেত্রে ‘সেক্স সেল’-এ যাওয়ার নিয়ম বলবৎ নয়। অপরাধের মাত্রা কম যাদের, তাদেরই এই সুযোগ দেওয়া হয়। আমরা মনে করি, জেলে থাকাকালীন কয়েদিরা বাইরের পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে মুক্তি পেলে, সেই দুনিয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে প্রথম প্রথম তারা অসুবিধাতেও পড়ে। সেটা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতেই আমাদের এই পদক্ষেপ।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.