Advertisement
Advertisement

জোর করে জঙ্গলে পাঠানো যাবে না, শস্যপ্রিয় হাতির পক্ষে রায় আদালতের

জনপ্রিয় হাতিকে কুনকি হিসেবে প্রশিক্ষণে বাধা আদালতের।

Madras HC saves elephant from being kumki
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 5, 2019 4:15 pm
  • Updated:February 5, 2019 4:15 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘বন্যেরা বনে সুন্দর।’ একথা বুঝেই বোধহয় মাদ্রাজ হাই কোর্ট প্রাণীদরদী রায় দিল। তাণ্ডব চালিয়ে বেড়ানো হাতিটিকে ধরে বেঁধে রাখা যাবে না। তাকে তার মতো থাকতে দিতে হবে। উচ্চ আদালতের এই রায়ে মোটেই সন্তুষ্ট নন চেন্নাইয়ের অমরাবতীর বাসিন্দারা। কারণ, হাতি শস্য নষ্ট করলে তো আদতে ক্ষতি হয় তাঁদেরই।  

হাতির তাণ্ডবে ফসলের ক্ষতি, বাড়িঘর তছনছ, সাধারণ মানুষের জখম হওয়ার ঘটনা উত্তরবঙ্গের চেনা ছবি। গজরাজের দৌরাত্ম্য রুখতে বনকর্মীদের ভাবনার শেষ নেই। রাতদুপুরে উদ্বেগে থাকেন জঙ্গল এলাকার বাসিন্দারাও। অনেকটা একই পরিস্থিতি চেন্নাইয়ের অমরাবতী এলাকায়। চিন্না থাম্বি নামে এক ঐরাবত যখন তখন, যেখানে সেখানে ঢুকে পড়ছে। বিশেষত শস্য খেত তার খুব পছন্দের জায়গা। সেখানে ঢুকে তার উদ্দাম হর্ষ প্রকাশ আদতে শস্যের ক্ষতি করে। তবু সে জনপ্রিয় ছোটদের কাছে। চিন্না থাম্বি যখন দুলকি চালে গ্রামের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যায়, ছেলেছোকরার দল তার পিছু নেয়। অত বড় হাতিটা যদি একবার শুঁড়ে তোলে…নাহঃ, সেসব ভয়ডর নেই তাদের। হাতিটা যেন তাদের মতোই খেলতে ইচ্ছুক।

Advertisement

elephant2

Advertisement

                                       সুনামির পূর্বাভাস বয়ে নিয়ে এল মাছ! আতঙ্কিত জাপান

চিন্না থাম্বিকে নিয়ে হঠাৎ কেন আদালতে দৌড়াদৌড়ি? সে এক কাহিনি বটে। হাতিটি নাকি জঙ্গলে নয়, লোকালয়ে থাকতেই বেশি পছন্দ করে। বন্য স্বভাবও তার তেমন নেই। হয়ত পেটের তাগিদেই শস্য খেয়ে ফেলে। আর কিছুটা নষ্ট করে। কৃষকের ক্ষেত বাঁচাতে তাই একবার অমরাবতী থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে মুদুমালাই জঙ্গলে তাকে ছেড়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যে দেখা যায়, হাতিটি দিব্যি গোটা রাস্তা পেরিয়ে ফের পৌঁছে যায় চেনা জায়গায়। আর তাকে দেখেই উল্লসিত হয়ে ওঠে বাচ্চারা। মুহূর্মুহূ ছবি উঠতে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়ার পাতা ভরে যায় চিন্না থাম্বির ছবিতে। কোনওভাবেই তাকে লোকালয় থেকে দূরে রাখতে না পেরে বনদপ্তরের আধিকারিকরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেন, তাকে কুনকি হাতি হিসেবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হোক। তাতে জঙ্গল এলাকার সুবিধা হবে। চিন্নার পুনর্বাসনে নিশ্চিন্ত হবেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। সেই মতো হাতিটিকে ধরার কাজও শুরু হয়। খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিরূপ প্রতিক্রিয়া পশুপ্রেমী মহলে। তাঁদেরই একজন উচ্চ আদালতে বনদপ্তরের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। অভিযোগ, বন্যপ্রাণীর ওপর অত্যাচার করা হচ্ছে।

elephant1

                                       ‘জুতো হাতে তোলা সেলফি ফটোশপের কারিকুরি’, অমিতাভের টুইটে বিতর্ক

মাদ্রাজ হাই কোর্ট দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর জানায়, জোর করে কুনকি হিসেবে কাজ করানো যাবে না চিন্না থাম্বিকে। তাকে থাকতে দিতে হবে তার নিজস্ব পরিবেশে, স্বাধীনতার সঙ্গে। তা সত্বেও সমস্যা থেকে যাচ্ছে। হাতির দৌরাত্ম্যে যে নিজেদের ফসল ঘরে তোলা দায় হয়ে পড়ছে। তাহলে কি নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েই হাতিকে নিজের পরিবেশে থাকতে দিতে হবে? এই প্রশ্ন এড়াচ্ছেন না বিচারপতিরাও। বনদপ্তরকে বিকল্প উপায় ভাবার পরামর্শ দিয়ে আগামী ১১ তারিখের মধ্যে হলফনামা চেয়েছে আদালত। আইনের আস্থা রেখে মানুষ এবং মানুষঘেঁষা প্রাণীর সহাবস্থানের পরামর্শ দেওয়া মাদ্রাজ হাই কোর্ট এখন প্রশংসা কুড়োচ্ছে পশুপ্রেমীদের।  

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ