চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: শিবের মতো স্বামী পেতে মহিলাদের শিবরাত্রির ব্রত এখন ব্যাকডেটেড। বরং পুরুষরাই এখন পার্বতীর মতো স্ত্রী পেতে শুরু করেছেন কৃচ্ছ্রসাধন। সুন্দরী এবং পতিব্রতা স্ত্রীর স্বপ্ন সব পুরুষই দেখেন। আর তিনি যদি পার্বতীর মতো হন, তাহলে তো কথাই নেই!
[ ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ উপলক্ষে আকাশছোঁয়া দাম, গোলাপ বিকোচ্ছে ১০০০ টাকায় ]
তাই দেওঘরের বৈদ্যনাথধামে মহা শিবরাত্রিতে বিশেষ পুজোর আয়োজন করা হয়। আসানসোল থেকে কাছেই বৈদ্যনাথধাম। যা ছিল একসময় বাংলার মানভূম জেলার অন্তর্ভুক্ত। শিবরাত্রির দিন এই বৈদ্যনাথধামে মহাসমারোহে শিব-পার্বতীর বিয়ে হয়। শিবরাত্রির কয়েক দিন আগে পার্শ্ববর্তী রোহিণী গ্রামে তৈরি হয় হাজার হাজার টোপর। লাল, নীল, সবুজ নানা রঙের, নানা আকারের টোপর। শুধু উপবাস করে শিবের মাথায় দুধ ঢাললেই হবে না। মনের কামনা নিয়ে যেসব পুরুষরা দেওঘরে আসেন, তাঁদের এই টোপরটি চড়াতে হয় বাবা বৈদ্যনাথের মাথায়।
[মহা শিবরাত্রিতে জঙ্গি হানার শঙ্কা, ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গকে ঘিরে চূড়ান্ত সতর্কতা]
মন্দিরের পান্ডা পরেশ চক্রবর্তী জানান, ‘মাত্র দশ টাকার এই টোপরটি বিয়ের পিঁড়িতে উৎসাহী পাত্রের ভাগ্যই বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। শুধু বিয়ে নয়, সুন্দরী বউয়ের কামনা থাকলে করতে হয় চার প্রহরের পুজো। যেখানে দুধ, ঘি, আবির, চন্দন দিয়ে বাবা বৈদ্যনাথের বিশেষ পুজো হয়। যাকে বলা হয় ‘অভিষেকায়ন’।
[ নেশার ফাঁদ কেটে মূলস্রোতে দিকভ্রষ্ট শৈশব, স্নেহের পরশে বড় হওয়ার স্বপ্ন পথশিশুদের ]
এছাড়াও সাংসারিক শান্তি এবং দাম্পত্য জীবনে সুখ নিশ্চিত করতেও একাধিক পুজো এবং উপাচার রয়েছে বৈদ্যনাথধামে। বাবা বৈদ্যনাথ মন্দিরের চূড়া থেকে জয়দুর্গার মন্দিরের চুড়ায় গাঁটছড়া বাঁধার রেওয়াজ শিবরাত্রিতে। ডিভোর্স এড়াবার মোক্ষম দাওয়াই নাকি এই ‘গাঁটবন্ধন’। পান্ডা স্বপন চক্রবর্তী জানান, শিব-পার্বতীর মতো চির অমর বন্ধনের মনস্কামনা যারা করেন তাঁরা বিশেষ মন্ত্রপূত গাঁটছড়া বাঁধলে তা পূরণ হয়। ভূ-ভারতে যেহেতু শিব-শক্তি একসঙ্গে কোথাও নেই তাই বিশেষ লোকাচারটি এখানেই রয়েছে। কারণ দ্বাদশ জোতির্লিঙ্গের অন্যতম বাবা বৈদ্যনাথ আর মায়ের সতীপিঠ একই মন্দির চত্বরে রয়েছে। মায়ের হৃদয়াপিঠ বলা হয় বৈদ্যনাথকে। তাই এখানে শিব পার্বতীর মন্দিরে গাঁটবন্ধন বাঁধেন দম্পতিরা। মন্দিরের অন্যতম পান্ডা শমু চক্রবর্তী বলেন, ৫০ মিটারের এই কাপড়ের টুকরোই গ্যারান্টি দেবে দাম্পত্য সুখের তাও আবার নাকি ৫০ বছরের জন্য।
ছবি: মৈনাক মুখোপাধ্যায়
[বয়স ৫৮ বছর, এতদিনে ভোটাধিকার পেলেন মালবাজারের বিধবা]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.