Advertisement
Advertisement
Personal Finance

খুঁজে নিন ভালো‘বাসা’র ঠিকানা, বড় পরিবর্তন ঘটতে চলেছে আবাসন শিল্পে

রিয়েল এস্টেট বা আবাসন শিল্প কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম।

Things to know about the development of real estate sector

প্রতীকী ছবি

Published by: Suchinta Pal Chowdhury
  • Posted:March 3, 2025 3:21 pm
  • Updated:March 3, 2025 3:21 pm  

২০২৫ সালের মধ্যে ভারতের আবাসন শিল্পে সামর্থ্যের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। এমনটাই বলছেন মার্লিন গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রী সাকেত মোহতা। 

রিয়েল এস্টেট বা আবাসন শিল্প কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম। এটি ভারতের মোট জিডিপি-তে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে, যা বর্তমানে প্রায় ৭.৩% হিসাবে অনুমান করা হয়েছে। এটি ভবিষ্যতে আরও বাড়তে চলেছে এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে ১৫.৫% -এ পৌঁছনোর সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এই আবাসন শিল্প এখনও পর্যন্ত সরকারীভাবে শিল্পের মর্যাদা পায়নি, যা অনেক দিন থেকেই প্রয়োজন ছিল। তবে সাম্প্রতিক ২৫ পয়েন্টের রেপো রেট কমানোর ফলে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং বাড়ির মালিকানার হার বৃদ্ধি পাবে।

Advertisement

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, রিয়েল এস্টেট বা আবাসন শিল্পের বিনিয়োগকারী এবং উচ্চবিত্ত ব্যক্তিদের দ্বারা প্রভাবিত ক্ষেত্র থেকে ছোট ও মাঝারি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে জনপ্রিয় শ্রেণীতে পরিণত হয়েছে। এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে নীতিগত সংস্কার, অর্থায়নের সহজলভ্যতা। কোভিড মহামারীর পর থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে সম্পত্তি মালিকানা বা ক্রেতাদের সংখ্যা বেয়েছে। রেপো রেট কমানো এবং ব্যক্তিগত আয়করের ছাড় দেওয়ার কারণে রিয়েল এস্টেট, বিশেষ করে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন কেনার চাহিদা আরও বাড়বে বলে আশা করা যায়। যাঁরা আবাসন কেনার কথা ভাবছেন, তাঁদের জন্য এটি উপযুক্ত সময় হতে পারে। একদিকে, রেপো রেট কমার মানে হোম লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার কমবে, যা ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত ব্যবহার বা বিনিয়োগের জন্য ফ্ল্যাট কেনা অনেকটা সহজ করবে। 

অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণের বাজেটে ঘোষিত কর ছাড়ের ফলে অতিরিক্ত খরচ করার মতো হাতে অর্থ থাকবে। সংসারে ব্যয় এবং সামগ্রিক চাহিদা বাড়ানোর লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রী নির্মলা ঘোষণা করেছেন যে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়কর ছাড় পাওয়া যাবে। নতুন কর ব্যবস্থায় বিদ্যমান ৭৫,০০০ টাকার স্ট্যান্ডার্ড ছাড়-সহ করমুক্ত আয়ের সীমা এখন ১২.৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করা হয়েছে। যাঁরা বছরে ১২ লক্ষ টাকা আয় করেন, তাঁদের জন্য অতিরিক্ত ১ লক্ষ টাকা হাতে থাকবে। এর ফলে মানুষের হাতে বেশি খরচ করার মতো অর্থ থাকবে, যা প্রয়োজনীয় খরচ মিটিয়ে বাড়ির কেনার জন্য ব্যবহার করতে পারবে। অন্যদিকে রেপো রেট কমার ফলে হোম লোনের ইএমআই আগের তুলনায় কমে যাবে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে রেপো রেট ৬.২৫% করেছে, যার ফলে কলকাতার আবাসন শিল্পে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের বিক্রয়ে বড় ধরনের উত্থান আশা করা হচ্ছে। রেপো রেট কমার ফলে হাউজিং লোনের ইএমআই এবং ঋণের খরচ কমবে, যা মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে বাড়ি কেনার আগ্রহ বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই সিদ্ধান্ত সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় বাজেট ঘোষণার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যার লক্ষ্য ব্যয় বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিষয়ক আর্থিক নীতি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, কারণ সাম্প্রতিক ৫০ বেসিস পয়েন্টের নগদ রিজার্ভ অনুপাত (সিআরআর) কমে যাওয়ায় ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য প্রভাব জাগ্রত হয়েছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, মধ্যমেয়াদী লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মুদ্রাস্ফীতি কিছুটা বেশি থাকলেও, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় লিকুইডিটি যোগ এবং আগামী দিনে রেপো রেট আরও কমানোর বিষয়ে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, শীঘ্রই ব্যাঙ্কগুলো হোম লোনের সুদের হার কমানোর ঘোষণা করতে পারে, যা বাড়ি কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের জন্য একটি স্বস্তির খবর হতে পারে।

কলকাতার আবাসন শিল্পের ডেভেলপাররা রেপো রেট কমানোর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁরা মনে করছেন, সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের বিক্রয়ে বড় ধরনের উত্থান ঘটবে এবং এটি ক্রেতাদের আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। ইতিমধ্যেই স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া হোম এবং গাড়ির ঋণের সুদের হার কমানোর ঘোষণা করেছে এবং অন্যান্য ব্যাঙ্কগুলো শীঘ্রই এই পথ অনুসরণ করতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপগুলো একত্রে চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী কাঠামো তৈরি করবে, যা বাড়ির ক্রেতা, ডেভেলপার এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। কলকাতার রিয়েল এস্টেট বাজারে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং ডেভেলপাররা এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নতুন প্রকল্প শুরু করার পরিকল্পনা করছেন।

গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনের ক্ষেত্রে সারা দেশে জনপ্রিয়তা বেড়েছে মূলত কলকাতার বাজারের। কলকাতার আবাসন শিল্পের ক্ষেত্রে, সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনে আধিপত্য বিস্তার করেছে। আগামী দিনে এর চাহিদা বাড়তে চলেছে। মার্লিন গ্রুপ সম্প্রতি বিলাসবহুল ও প্রিমিয়াম আবাসন তৈরি করলেও রেপো রেট কমানো এবং বাজেটে মধ্যবিত্ত শ্রেণির জন্য প্রদত্ত সুবিধাগুলো কাজে লাগিয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের ও মাঝারি মূল্যের আবাসন তৈরি চালিয়ে যাবে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement