Advertisement
Advertisement

Breaking News

শের শাহের দান করা জমিতেই ঘোষাল বাড়িতে শুরু মায়ের পুজো

এই পুজোর পরতে পরতে জড়িয়ে ইতিহাস।

Burdwan: Puja in ‘Ghoshal Bari’ a must visit

ছবিতে ঘোষাল বাড়ির মা দুর্গার ফাইলচিত্র, ছবি : মুকুলেসুর রহমান।

Published by: Shammi Ara Huda
  • Posted:October 7, 2018 6:10 pm
  • Updated:October 7, 2018 6:10 pm

পুজো প্রায় এসেই গেল৷ পাড়ায় পাড়ায় পুজোর বাদ্যি বেজে গিয়েছে৷ সনাতন জৌলুস না হারিয়েও স্বমহিমায় রয়ে গিয়েছে বাড়ির পুজোর ঐতিহ্য৷ এমনই কিছু বাছাই করা প্রাচীন বাড়ির পুজোর সুলুকসন্ধান নিয়ে হাজির Sangbadpratidin.in৷ আজ রইল বর্ধমানের ঘোষাল পরিবারের দুর্গাপুজোর কথা।

সৌরভ মাজিবর্ধমান:  প্রাচীন পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে থাকে বিবিধ রোমাঞ্চকর কাহিনী। জড়িয়ে থাকে ইতিহাসও। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরের কোলসরা গ্রামের ঘোষাল পরিবারের দুর্গোৎসবও এমনই ইতিহাস বয়ে নিয়ে চলেছে। এই পুজোর সঙ্গে শের শাহর নামও জড়িয়ে রয়েছে। সাবেকি রীতি মেনে আজও ঘোষাল পরিবারের দেবীর আরাধনা হয়।

Advertisement

ঘোষাল পরিবারের একচালা প্রতিমা। জন্মাষ্টমীতে বাড়ির ঠাকুরদালানে মায়ের কাঠামোতে মাটি পড়ে, শুরু হয় প্রতিমা গড়ার কাজ। প্রতিপদ থেকে দেবীর আরাধনার শুরু। ন’দিন ধরে চলে পুজো। ঘোষাল বাড়িতে ডাকের সাজে সজ্জিত দেবীকে পুজোর দিনগুলিতে কলা, থোড়, মোচার নৈবেদ্য দেওয়ার রীতি রয়েছে। আগে ছাগবলির প্রথা থাকলেও পরে তা উঠে যায়। ঘোষাল বাড়ির দশমীতে ১১জন কুমারীর পুজো হয়ে থাকে।

Advertisement

মাকে কলার নৈবেদ্য দেওয়ার নেপথ্যেও রয়েছে কাহিনী। এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের প্রতিনিধি সমীর ঘোষাল। পেশায় শিক্ষক সমীরবাবু জানান,  তাঁদের পূর্বপুরুষ ভূকৈলাশের রাজ বংশধর ছিলেন। পূর্বপুরুষ ঈশ্বরচন্দ্র ঘোষাল এই দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন। সালটা ১৬৫৫। কথিত আছে,  একসময় কোলসরা গ্রামের উপর থেক কংসা নদী প্রবাহিত হত। সেই নদীর তীরেই ছিল কলাবাগান। একদা ঈশ্বরচন্দ্র ঘোষাল সেই কলাবাগানে এক বালিকাকে দেখতে পান। তিনি কাছে এগিয়ে গেলেই বালিকা অদৃশ্য হয়ে যায়। সেদিন রাতে ঈশ্বরচন্দ্র দেবী দুর্গার স্বপ্নাদেশ পান। সেই থেকে এই পরিবারে দুর্গাপুজোর শুরু। মা দুর্গাই বালিকার রূপে কলাবাগানে দর্শন দিয়েছিলেন। এমনটাই বিশ্বাস করতেন ঈশ্বরচন্দ্র। তাই দেবীকে কলাগাছের খাদ্যদ্রব্য নৈবেদ্য রূপে দেওয়ার রীতি চালু করা হয়।

[ঘটের বদলে মূর্তি গড়ে দুর্গা আরাধনায় মাতে মহিষাদলের রায়বাড়ি]

ঘোষাল বাড়ির পুজোর সঙ্গে শের শাহর নামও জড়িয়ে রয়েছে। দ্বাদশতম পূর্বপুরুষ দিগম্বর ঘোষাল শের শাহের অধীনে কাজ করতেন। শের শাহ তখন কলকাতা থেকে পাঞ্জাব পর্যন্ত সড়ক পথ নির্মাণের কাজ পরিচালনা করছিলেন। দিগম্বরবাবু সেই কাজের তত্ত্বাবধানের করছিলেন। কথিত আছে, দিগম্বরবাবু সেই কাজে তদারকিতে জলপথে একসময় চলে আসেন জামালপুর এলাকায়। কংসা নদীতে নোঙর করেন কোলসরা গ্রামে। রাত্রিবাসও করেন এই গ্রামে। সেদিনই রাতে সিদ্ধেশ্বরী দেবীর স্বপ্নাদেশ পান তিনি। গ্রামে দেবীকে প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ আসে স্বপ্নে। দিগম্বরবাবু সেই ঘটনার কথা শের শাহকে জানান। সিদ্ধেশ্বরীর প্রতি দিগম্বরের ভক্তি দেখে সহযোগিতা করেন শের শাহ। দিগম্বরকে সিদ্ধেশ্বরী মন্দির প্রতিষ্ঠা, দেবীর সারা বছর পুজো ও অন্যান্য খরচ বাবদ ১৫৪০ সালে ৫০০ বিঘা জমি দান করেন শের শাহ। তাম্রপত্রে খোদাই করে দানপত্র করে দিয়েছিলেন তিনি। সেখানে দিগম্বর মন্দির প্রতিষ্ঠা করে বসবাস শুরু করেন। সেই দিগম্বরের প্রপৌত্র ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র ঘোষাল। সিদ্ধেশ্বরীর মন্দিরের ঠাকুরদালানে তিনি দুর্গাপুজোর প্রচলন করেছিলেন। এবার সেই পুজো ৩৬৪ বছরে পা দিল।

[অত্যাচারী ইংরেজদের লুকিয়ে বিপ্লবীদের কার্যকলাপ চালু রাখতেই এই পুজোর শুরু]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ