Advertisement
Advertisement

সাধক রামপ্রসাদের জীবনের এই ৩ কাহিনিতে আজও বিস্মিত ভক্তরা

সারা পৃথিবীর কাছে যা রাত্রি, সাধকের কাছে তাইই জাগ্রত অবস্থা।

Amazing stories of Kali devotee Saint Ramprasad
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 18, 2017 10:13 am
  • Updated:September 26, 2019 6:29 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সাধকের চোখে যা ধরা পড়ে, সাধারণের চোখে তা দুর্লভ। সেগুলোকেই আমরা সাধারণভাবে অলৌকিক বলে থাকি। প্রতি সাধকের জীবনের সঙ্গেই মিশে থাকে এমন কোনও না কোনও কিংবদন্তি। ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মা ভবতারিণীর সঙ্গে কথা বলতেন বলেও শোনা যায়। ওদিকে সাধক কমলাকান্তও বেল কাঁটা মায়ের পায়ে ফুঁটিয়ে প্রমাণ করেছিলেন তাঁর আরাধ্যার প্রাণ আছে। তেমনই কিংবদন্তি আছে সাধক রামপ্রসাদকে নিয়েও।

ইসলাম গ্রহণ করেও কেন সাধনা করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ? ]

Advertisement

বাবার মৃত্যুর পর কেরানির কাজ নিয়েছিলেন প্রসাদ। কিন্তু হিসেবের খাতাতেই গান লিখে রাখতেন। ঊর্ধ্বতনরা অসন্তুষ্ট হতেন। শেষমেশ মনিবের কানে যেতে তিনি খাতা দেখলেন। গানের ভাব ও ভাষায় মোহিত হলেন। রামপ্রসাদকে সেই সময় বিনা কাজেই তিরিশ টাকা মাসোহারার বন্দোবস্ত করেছিলেন। পরে নবদ্বীপের মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রও গঙ্গাবক্ষে রামপ্রসাদের গান শুনে মন্ত্রমুগ্ধ হন। তিনি সভায় আহ্বান জানান। কিন্তু প্রসাদ রাজার অনুরোধ রাখতে পারেননি। তা সত্ত্বেও রাজা তাঁকে নিষ্কর একশো বিঘা জমি দান করেছিলেন। পালটা পুরস্কার হিসেবে রাজাকে বিদ্যাসুন্দর কাব্য লিখে উপহার দিয়েছিলেন প্রসাদ। যদিও তা ভাষায়-ভাবে-অলংকারে ভারতচন্দ্রের কাব্যের সমতুল নয়।

মা যে জীবন্ত! জানেন কীভাবে প্রমাণ করেছিলেন সাধক কমলাকান্ত? ]

এই সবের মধ্যেই চলছিল প্রসাদের সাধনা। আর সে সময়ই তিনটি ঘটনা ঘটে। যা পরবর্তীকালে কিংবদন্তির পর্যায়ে চলে গিয়েছে। একদিন প্রসাদ বাড়ির সামনে বেড়া বাঁধছিলেন। আর তাঁর ছোট মেয়ে হাতে দড়ি ধরিয়ে দিচ্ছিল। একসময় বালিকা উঠে চলে যায়। কিন্তু প্রসাদ ঠিক হাতে দড়ি পেতে থাকেন। বেড়া বাঁধা চলতে থাকে। অনেক পরে মেয়ে ফিরে এসে বলে, বাবা কে দড়ি ধরিয়ে দিল? তখন প্রসাদের হুঁশ ফেরে। বোঝে এতক্ষণ মেয়ে তার কাছে ছিল না। বালিকা রূপে স্বয়ং এসেছিলেন মহামায়া।

যিশুর ভজনা ছেড়ে শক্তির সাধনা, সাহেবের পুজোয় মাতোয়ারা হ্যামিলটনগঞ্জ ]

অপর একটি ঘটনায় জানা যায়, একদিন প্রসাদ স্নানে যাচ্ছিলেন। তখন এক সুন্দরী অল্পবয়সি মেয়ে তাঁর গান শুনতে আসেন। প্রসাদ তাঁকে অপেক্ষা করতে বলে স্নান সেরে ফিরে দেখেন সেই রমণী আর নেই। বদলে তাঁর চণ্ডীমণ্ডপের দেওয়ালে লেখা, আমি অন্নপূর্ণা, তোমার কাছে গান শুনতে এসেছিলাম। তাঁকে কাশীতে গিয়েও গান শুনিয়ে আসার অনুরোধ করা হয়। তবে কাশী বা বারাণসীতে যেতে হয়নি। তার আগেই স্বপ্নাদেশ পেয়ে ত্রিবেণীর কাছে জগজ্জননীকে গান শুনিয়ে আসেন তিনি।

অন্যদের আলোর খোঁজ দিয়ে জীবনের আঁধার ঘোচাচ্ছে এই পড়ুয়ারা ]

অপর ঘটনাটি প্রসাদের জীবনের শেষে ঘটে। প্রতিবারের মতো সেবারও কালীপুজোর আয়োজন করেছিলেন। পুজো শেষে বিসর্জন দিতে যান মাতৃমূর্তি। তখন আচমকাই অন্যরকম হয়ে যান প্রসাদ। গলা জলে দাঁড়িয়ে পরপর চারটি গান করেন। শেষ গানটি গাওয়ার সময়ই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, মা গঙ্গাই প্রসাদকে কোলে টেনে তুলে নিয়েছিলেন।

তিনটি ঘটনাই বিশ্বাসের। বিজ্ঞানের কোনও যুত্তিতে এর ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। তবে সাধকের জীবনের এ ঘটনা বিশ্বাসের সঙ্গেই মেনে নিয়েছেন ভক্তরা। আজও তা বিস্মিত করে সকলকে।সারা পৃথিবীর কাছে যা রাত্রি, সাধকের কাছে তাইই জাগ্রত অবস্থা। গীতার এ কথাই যেন কিংবদন্তিগুলির বিশ্বাসে মিশে আছে। তবে কিংবদন্তিতে বিশ্বাস থাক বা না থাক, ভক্ত কবি শাক্ত গীতি বাংলা সাহিত্যের যে অমূল্য সম্পদ তা সকলেই একবাক্যে স্বীকার করবেন।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement