Advertisement
Advertisement

Breaking News

Katwa

ঐতিহ্যের ‘কাচ নাচ’, গাজনের মরশুমে কাটোয়া মাতাচ্ছেন ওপার বাংলার শিল্পীরা

নাচেগানে শিব-দুর্গা, রামায়ণের কাহিনি তুলে ধরেন শিল্পীরা।

Artists peform traditional and popular 'Kach Nach' at Katwa on the ocassion of Neel Shasthi | Sangbad Pratidin

ছবি: জয়ন্ত দাস।

Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 13, 2023 2:34 pm
  • Updated:April 13, 2023 2:47 pm

ধীমান রায়, কাটোয়া: রাঢ়বঙ্গের সুপ্রাচীন এক ঐতিহ্য চৈত্র মাসে গাজনের (Gajan) সময় বোলান গান। গাজনের সময় রকমারি বেশভূষায় সেজে বোলান শিল্পীরা তুলে ধরেন নানা লোককাহিনি। গাজনে এপার বাংলার বোলানের মতোই ওপার বাংলা অর্থাৎ বাংলাদেশের সংস্কৃতি ‘কাচ নাচ’। আর গাজনের সময় বাংলাদেশের (Bangladesh) শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্য ‘কাচ নাচ’কে এখনও ধরে রেখেছেন ওপার বাংলা থেকে কাটোয়ায় আসা মানুষজন। গাজনে ‘কাচ নাচ’ ঘিরে মেতে থাকেন কাটোয়ার (Katwa) পানুহাটের বাসিন্দারা। নানা দেবদেবীর বেশ ধরে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে দেখানো হয় ‘কাচ নাচ’।

কাটোয়ার পানুহাট এলাকায় প্রায় অর্ধ শতাব্দীকাল আগে এসেছিলেন বাংলাদেশের বেশ কিছু পরিবার। তারাই মূলত নীলের পুজোর সময় দু’দিন ধরে ‘কাচ নাচে’র আসর ঘিরে মেতে থাকেন। নানা দেবদেবী সেজে বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী তুলে ধরা হয়। নিয়ম রয়েছে যে সব শিল্পীরা ‘কাচ নাচে’র সঙ্গে যুক্ত তাঁদেরও কয়েকদিন ধরেই নিরামিষ খাবার (Vegeterian) খেতে হয়। শিবের উপাসনায় কয়েকদিন সংযমের মধ্যে থাকতে হয়। শিব-দুর্গার লীলাকাহিনী, দেবীর অসুর বধ, শিব-কালির তত্ত্ব, রাম-লক্ষণ-হনুমান ইত্যাদি সেজে রামায়নের কাহিনি ইত্যাদি তুলে ধরা হয়।

Advertisement
Katwa
ছবি: জয়ন্ত দাস।

মুখে ও শরীরে নানা রঙ মেখে ও বিভিন্ন সাজ পোশাক পড়ে কাচ নাচ দেখানো হয়। দলে ঢাক, ঢোল, সানাই, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। বাংলাদেশের মানুষ অবশ্য একে ‘লাল কাচ’ বা ‘ঢোল কাচ নাচ’ হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকেন৷ স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পানুহাটে ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল গিয়ে সেখানে ‘কাচ নাচ’ দেখিয়ে এলাকায় ঘুরে ঘুরে মানুষের মনোরঞ্জন (Entertainment) করে থাকেন। অনেকেই শিল্পীদের কিছু প্রণামী দেন। যদিও সেই প্রণামীর টাকা বারোয়ারি পুজোয় ব্যয় করা হয়। নরনারায়ণ সেবায় কাজে লাগে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: জাতীয় দলের তকমা হারিয়েছে তৃণমূল, আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে কী বললেন পার্থ?]

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাটোয়ার পানুহাট এলাকায় বেশিরভাগ ওপার বাংলা থেকে আসা মানুষের বসবাস। পানুহাটের বারুজীবি পল্লির নীল পুজো কমিটি প্রায় ৬৫ বছর ধরেই চৈত্র মাসের গাজনের সময় ‘কাচ নাচে’র অনুষ্ঠান ঘিরে মেতে থাকেন। শিল্পীদের দলকে পরম সমাদরে গৃহস্থ বাড়িতে আমন্ত্রণ করা হয়। দেবদেবীর বেশে ঘোরা শিল্পীদের পরম ভক্তি সহকারে স্থানীয় পরিবারের লোকজন আপ্যায়ন করেন। পুজোর পাশাপাশি প্রণামী দেওয়া হয়।

[আরও পড়ুন: উপনির্বাচনে হারের পরই সাগরদিঘিতে বন্ধ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার! বিডিও অফিসের সামনে ধরনায় অধীর]

‘কাচ নাচ’ এর সঙ্গে যুক্ত শিল্পী চন্দন দাস, রাধামাধব পাল, নিত্য পাল, বিপ্লব দেবনাথরা বলেন, “আগে যখন আমাদের পূর্বপুরুষরা বাংলাদেশে ছিলেন তখনও তারা সেখানে এভাবে গাজনের সময় কাচ নাচ দেখাতেন। দেশভাগের পর এপার বাংলাতে আসার পর আমাদের বাপ-ঠাকুরদারা কাচ নাচ টিকিয়ে রেখেছিলেন। পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্য যতটা পারি বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করি।” স্থানীয়রা জানান, গাজনের দু’তিনদিনের অনুষ্ঠানে শেষ দিনে সকলে মিলে চাঁদা তুলে একসঙ্গে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ